সান্তোসের অনুশীলনে ফেরার পর সম্প্রতি নেইমার একটি সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। যেখানে উপস্থিত ছিলেন শুধু তাঁর পরিবার ও বন্ধুবান্ধব। আর দশটা সংবাদ সম্মেলনের মতো হয়নি এ আলাপচারিতা। কাছের মানুষদের প্রশ্নের উত্তরে নেইমার কান্নায় যেমন ভেঙে পড়েছেন, তেমনি জানিয়েছেন এই বিশ্ব যদি আজই শেষ হয়ে যায়, তাহলে ব্যক্তিগত ও পেশাদার ক্যারিয়ার নিয়ে তাঁর কোনো আক্ষেপ থাকবে না।

শুধু তা–ই নয়, মাঠের বাইরে তাঁর জীবন ও আচরণ নিয়ে মানুষের সমালোচনা নিয়েও কথা বলেছেন নেইমার। জানিয়েছেন, লোকে তাঁকে যেভাবে বিচার করে, তাতে কখনো কখনো তাঁর কষ্ট লাগে, তবে ‘সবাই ভুল করে’, এ কথাও স্বীকার করেছেন নেইমার। বেশ খোলামেলা আলাপচারিতার এই সংবাদ সম্মেলনে নিজের জীবনে সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার কী হতে পারে, সেটাও জানিয়েছেন সান্তোস তারকা।

আরও পড়ুনমেসিকে হারানোর পর তাঁর জার্সি, শর্টস, জুতা—সবই নিয়ে গেলেন দেম্বেলে৮ ঘণ্টা আগে

জীবন নিয়ে নেইমারের একটাই ভয়—এমন কোনো অসুখে পড়লেন, যেটায় ভুগে তাঁর স্মৃতিশক্তি হারিয়ে গেল!

নেইমারের ভাষায়, ‘আমার একটাই ভয়, এমন কোনো অসুখ হলো, যেটায় ভুগে সবকিছু ভুলে গেলাম! স্মৃতিশক্তি হারানো, এটাই আমার একমাত্র ভয়। ভুলে গেলাম কে আমি, আমার গল্প কী, লিগ্যাসি কী, সারা জীবন যাদের সঙ্গে চলেছি, তাদেরও ভুলে যাওয়া; এই একটি ভয়ই পাই আমি।’

আমাদের জীবনে কী ঘটে, সেসব যারা বোঝে না তাদের এমন সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন। আর ভুল সবাই করে। স্বপ্ন, আশা ও গল্প নিয়ে সবাই তো মানুষ।সান্তোস তারকা নেইমার

ব্রাজিলের ক্লাব সান্তোসের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হ্যান্ডলে গতকাল এই সংবাদ সম্মেলনের ভিডিও পোস্ট করা হয়। যেখানে প্রথম প্রশ্নেই নেইমারকে কাঁদতে দেখা যায়। প্রশ্নটি ছিল, সান্তোসে ফেরার বিষয়ে পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের যে অকুণ্ঠ সমর্থন ও সাহায্য পেয়েছেন, তা নিয়ে। কেঁদেকেটে নেইমার ধরে আসা গলায় বলেন, ‘সান্তোসের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করা, ঘরে থাকা, আমার জন্য বড় সুখের উৎস। ব্রাজিল থেকে অনেক বছর দূরে থাকার পর সান্তোসে ফিরতে পেরেছি, আমার শহরে ফিরেছি। বন্ধুদের কাছাকাছি থাকতে পারছি। তোমরাই আমার শক্তির উৎস। আমি যা কিছুর মুখোমুখি হয়েছি, সেসব তোমাদের প্রেরণাতেই।’

সান্তোসের অনুশীলনে নেইমার.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মোমবাতি প্রজ্বালনে শহীদদের স্মরণ করলো ছাত্রদল

জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও মোমবাতি প্রজ্বালনের মাধ্যমে ঐতিহাসিক জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ করেছে ছাত্রদল। ছাত্র জনতার বিজয়ের বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে সোমবার রাত ১২টার পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘আলোয় আলোয় স্মৃতি সমুজ্জ্বল’ শিরোনামে এ কর্মর্সূচি পালন করেন সংগঠনটির বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী। একইসঙ্গে তারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, সাবেক ছাত্রদল সভাপতি আসিফুজ্জামান রিপন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

৩৬ দিনের কর্মসূচি উদ্বোধন: বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এটি শুধু মোমবাতি প্রজ্বলন নয়, গণতন্ত্রের নতুন যাত্রার সূচনা। এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একসময় ছিলো ভয় আর আতংকের প্রতীক; আজ তা আশার আলো ছড়াচ্ছে। শেখ হাসিনা ছাত্রদের কণ্ঠ স্তব্ধ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পারেননি। আজকের এই আলোক প্রজ্বালনের মাধ্যমে আমাদের ৩৬ দিনের কর্মসূচির শুভ সূচনা হলো।’

আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘জুলাই মাসে ছাত্রদলের এই আয়োজন ইতিহাসের ধারাবাহিকতা বহন করে। একদিনে এই আন্দোলন গড়ে ওঠেনি। হাজারো মানুষের রক্ত ও ত্যাগের মাধ্যমে এটি গঠিত হয়েছে। আজ আমরা খুনি হাসিনামুক্ত বাংলাদেশ দেখছি। শহীদ ওয়াসিম ও সাঈদের রক্ত বৃথা যাবে না।’ 

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রদল সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে এবং শতাধিক নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। তাঁদের আত্মত্যাগ জাতি কখনও ভুলবে না।”

ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে। কিন্তু ছাত্রদল রাজপথে এককভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। হামলা-মামলার সবচেয়ে বেশি শিকার হয়েছে ছাত্রদলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরাই।’

এই কর্মসূচির মাধ্যমে ছাত্রদলের নেতৃত্বে শুরু হলো ৩৬ দিনব্যাপী একাধিক আন্দোলন-প্রচারণা ও স্মরণ কর্মসূচি। যা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশব্যাপী বিস্তৃত থাকবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ