‘সূর্যোদয়ে তুমি’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো’, ‘একবার যদি কেউ’, ‘যেও না সাথী’, ‘চোখের নজর এমনি কইরা’, ‘আমি তোমারই প্রেম ভিখারি’, ‘আছেন আমার মোক্তার’, ‘তেল গেল ফুরাইয়া’, ‘তোমরা কাউকে বলো না’, ‘এমনও তো প্রেম হয়’-সহ অসংখ্য কালজয়ী গানের শিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদীর জন্মদিন ছিল মঙ্গলবার।

বিশেষ এই দিনে বরেণ্য এই শিল্পী যুক্তিরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। শিল্পীর প্রতি সন্মান জানাতে রফিকুল আলম ও আবিদা সুলতানা দম্পতি তার বাসায় আয়োজন করেন এক ঘরোয়া আড্ডার।

এই আয়োজন আলোকিত করেন শিল্পী খুরশিদ আলম, আকরামুল ইসলাম, লিনু বিল্লাহসহ আরও অনেকে। এসময় তালি বাজিয়ে আব্দুল হাদির ‘আছেন আমার মোক্তার’ গানি ধরেন উপস্থিত সবাই। গিটার বাজিয়ে গানের তাল ধরেন রফিকুল আলমের ছেলে ফারশীদ আলম।

বিষয়টি নিয়ে রফিকুল আলম সমকালকে বলেন, ‘জন্মদিনে হাদি ভাইকে ভালোবাসা জানাতেই আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। আমার ছেলে ফারশীদই ছিল আয়োজনের উদ্যোগক্তা। ওই আয়োজনে বসেই আমার হাদি ভাইকে ফোন দিয়েছিলাম। দুর্ভাগ্যবসততাকে আমরা পাইনি। সবাই তাকে অনেক মিস করেছে।’

তিন ঘণ্টাব্যাপী চলে তাদের আড্ডা। আনন্দঘন সেই মূহুর্ত ভক্তদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভোলেননি রফিকুল আলম। গিটারের সঙ্গে গাওয়া গানের ভিডিও আজ ফেসবুকে পোস্ট করেছেন রফিকুল আলম।

সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘সংগীত ব্যক্তিত্ব হাদি ভাই এখন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণরত। গতকাল ছিলো তার জন্মদিন। খুরশিদ আলম, আবিদা সুলতানা, আকরামুল ইসলাম, লিনু বিল্লাহ, এবং আমার ছেলে ফারশীদ গীটার বাজিয়ে আমার বাসায় ভিন্নভাবে ওনাকে স্মরণ করলাম আমার বাসায়।’

প্রসঙ্গত, ১৯৪০ সালের এই দিনে জন্ম নেওয়া সৈয়দ আব্দুল হাদী হতে চেয়েছিলেন একজন শিক্ষক। কিন্তু জীবনের গতিপথ বদলে গেছে গানের ভুবনে পা রাখার পর। কখনও ভাবতে পারেননি, শখের বশে গান গাইতে গিয়ে কণ্ঠশিল্পী পরিচিতি ও প্রতিষ্ঠা পেয়ে যাবেন। তাঁর অনিন্দ্য সুন্দর কণ্ঠ আর অনবদ্য গায়কি যখন শ্রোতাদের হৃদয় জয় করে নেওয়া শুরু করে, তখন আর চলার পথ বদলে ফেলার সুযোগ পাননি। ততদিন নিজেও সংগীতের প্রেমে ডুবে গিয়েছিলেন। অনুভব করেছিলেন, শিল্পী হিসেবে শ্রোতাদের প্রতি তাঁর এক ধরনের দায়বদ্ধতা তৈরি হয়েছে। সে কারণে নিরলস গান করে যাচ্ছেন তিনি। নিজের আত্মজীবনীতেও এ কথা অকপটে স্বীকার করেছেন তিনি। 

একুশে পদক ও পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত সৈয়দ আব্দুল হাদী। তিনি   শিল্পী হিসেবে শুধু গান গেয়ে যাওয়া নয়, সংগীত ভুবনে নতুন কিছু তুলে ধরা এবং নতুন প্রজন্মকে গড়ে তোলার বিষয়েও বিভিন্ন সময় নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

রায়েদ সাদকে হত্যা যুদ্ধবিরতির স্পষ্ট লঙ্ঘন: হামাস

গাজা নগরীতে ইসরায়েলের হামলায় দলের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার রায়েদ সাদ নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে গতকাল শনিবার হামাসের এই নেতাকে হত্যার দাবি করেছিল।

শনিবারের ওই হামলায় ৫ জন নিহত এবং অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।

হামাস এ হামলার বিষয়ে বিবৃতি দিলেও প্রথমে রায়েদ সাদ নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। তখন হামাস বলেছিল, গাজা নগরের বাইরে একটি বেসামরিক গাড়িতে হামলা হয়েছে। এই হামলা অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

পরে আজ রোববার এক ভিডিও বার্তায় হামাসের গাজাপ্রধান খলিল আল-হাইয়া বলেন, গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত পাঁচজনের মধ্যে রায়েদ সাদও রয়েছেন।

খলিল আল-হাইয়া বলেন, ‘ইসরায়েল বারবার যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে যাচ্ছে, যার সর্বশেষ সংযোজন হামাস কমান্ডারকে (রায়েদ সাদ) হত্যা। গতকালই এ ঘটনা ঘটেছে। এই প্রেক্ষাপটে আমরা সব মধ্যস্থতাকারী এবং বিশেষ করে চুক্তির প্রধান নিশ্চয়তাদাতা হিসেবে মার্কিন প্রশাসন ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আহ্বান জানাই, তাঁরা যেন ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্মান করতে ও তা মেনে চলতে বাধ্য করেন।’

রায়েদ সাদ হত্যাকাণ্ড অক্টোবরে গাজায় একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর হামাসের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতাকে হত্যার প্রথম ঘটনা।

এর আগে টেলিগ্রামে এক পোস্টে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছিল, ওই কমান্ডার (রায়েদ সাদ) হামাসের সক্ষমতা পুনর্গঠনে কাজ করছিলেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েলে হামাসের হামলা পরিকল্পনাকারীদের একজন ছিলেন তিনি।

আরও পড়ুনজ্যেষ্ঠ হামাস নেতা রায়েদ সাদকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের১৭ ঘণ্টা আগে

রায়েদ সাদ হত্যাকাণ্ড অক্টোবরে গাজায় একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর হামাসের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতাকে হত্যার প্রথম ঘটনা।

একজন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, রায়েদ সাদকে লক্ষ্য করেই এ হামলা চালানো হয়েছিল। তিনি রায়েদ সাদকে হামাসের অস্ত্র তৈরি শাখার প্রধান বলে দাবি করেন।

হামাস সূত্র রায়েদ সাদকে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসাম ব্রিগেডের সেকেন্ড ইন কমান্ড তথা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্মকর্তা বলে জানিয়েছে। এই সূত্রগুলো বলেছে, সাদ আগে হামাসের গাজা সিটি ব্যাটালিয়নের প্রধান ছিলেন। হামাসের সবচেয়ে বড় ও অস্ত্রসজ্জিত ব্যাটালিয়নের একটি এটি।

অক্টোবরে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও গাজায় ইসরায়েলের হামলা থামেনি। অক্টোবরে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ইসরায়েলের প্রায় ৮০০ বার গাজায় হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৩৮৬ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে

আরও পড়ুনগাজার ‘হলুদ রেখা’ থেকে সরবে না সেনা, এটিই নতুন সীমান্ত: ইসরায়েলি বাহিনীর প্রধান০৯ ডিসেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ