প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করেন ডিপার্টমেন্টের ডেপুটি হেড ও ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর টি. এম. আবদুল্লাহ-আল-ফুয়াদ।

এই প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য ছিল মাঠপর্যায়ের রিকভারি টিমকে আধুনিক কৌশলভিত্তিক আদায় পদ্ধতি, পেশাদার কমিউনিকেশন টেকনিক, ফলোআপ স্ট্র্যাটেজি এবং কার্যকর রিপোর্টিং কৌশল সম্পর্কে সচেতন ও দক্ষ করে তোলা। প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন ১৮ জন রিকভারি কর্মকর্তা, যাদের প্রত্যেকেই সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দায়িত্বপ্রাপ্ত।

উদ্বোধনী অধিবেশনটি পরিচালনা করেন প্রতিষ্ঠানের লার্নিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের ট্রেইনিং ম্যানেজার মো.

রওশন আলী বুলবুল।

তিনি বলেন, “রিকভারি পেশাকে আরো সিস্টেমেটিক, প্রফেশনাল ও সম্মানজনক করতে হলে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। এ ধরনের ইন-হাউজ প্রশিক্ষণ ওয়ালটনের মূল শক্তিকে আরও সুদৃঢ় করবে।”

মূল সেশনগুলোতে যা ছিল:
•    স্ট্র্যাটেজিক রিকভারি ইনসাইট — কৌশলগত ফলোআপ, ধাপে ধাপে রিকভারি পরিকল্পনা
•    কমিউনিকেশন ও নেগোশিয়েশন টেকনিক — সময়, ভাষা ও আচরণের প্রভাব
•    রিপোর্টিং ও পারফরম্যান্স ট্র্যাকিং— কীভাবে স্পষ্ট, কার্যকর এবং ফলপ্রসূ রিপোর্ট তৈরি করা যায়
•    স্মার্ট টুল — মোবাইল, হ্যান্ডনোট, প্রি-ডিজাইন টেমপ্লেট ও রিকভারি ট্র্যাকার

সমাপনী অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও ক্রেডিট রিকভারি বিভাগের প্রধান এস. এম. জাহিদ হাসান। 

তিনি বলেন, “ক্রেডিট রিকভারি একটি সম্মানজনক এবং কৌশলগত পেশা। আজকের এই প্রশিক্ষণ আমাদের টিমকে আরো প্রফেশনাল করে তুলবে, এবং রিপোর্টিং-এর মাধ্যমে আমরা ব্যবসার গভীর বিশ্লেষণ করতে পারব।”

তিনি আরো বলেন, “ওয়ালটন চায়—প্রতিটি টিম মেম্বার চিন্তা করুক যেন তারা শুধু রিকভারি করছে না, বরং প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহকের মধ্যে স্থায়ী বিশ্বাস ও নৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলছে “ 

প্রশিক্ষণের শেষে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ‘রিকভারি রিপোর্টিং হ্যান্ডবুক’-এর একটি সংক্ষিপ্ত গাইড কপি প্রদান করা হয় যাতে সবাই নিজ নিজ কাজে সহজে প্রয়োগ করতে পারেন।

ঢাকা/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল আমদানি বাড়িয়েছে ভারত, বাণিজ্যঘাটতি নিরসনের চেষ্টা

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন করতে জ্বালানি তেল আমদানি বাড়িয়েছে ভারত। চলতি মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত দেশটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে গড়ে দৈনিক ৫ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল তেল আমদানি করেছে। ২০২২ সালের পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে এটি তাদের সর্বোচ্চ তেল আমদানি।

বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের সংবাদে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সংঘাত এড়াতে ভারত যে কৌশলগত পদক্ষেপ নিচ্ছে, এটি তারই অংশ। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল আমদানি বাড়িয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যঘাটতি–সংক্রান্ত উদ্বেগও আমলে নিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

তেল আমদানি পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান কেপলারের তথ্যানুসারে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারত তেল আমদানি বাড়িয়েছে, কেননা সেখান থেকে তেল আমদানি করা ভারতের পক্ষে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক। এর নানা কারণ আছে। প্রথমত, ব্রেন্ট ক্রুড ও ডব্লিউটিআই ক্রুডের মধ্যে দামের যে ব্যবধান, সেই কারণে ডব্লিউটিআই ক্রুড কেনা ভারতের জন্য লাভজনক হয়েছে। সেই সঙ্গে বিশ্ববাজারে থেকে চীনের তেল কেনা কমেছে। ফলে মার্কিন তেল কেনা ভারতের তেল পরিশোধনাগারগুলোর জন্য লাভজনক হয়ে উঠেছে।

কেপলারের প্রতিবেদনে উদ্ধৃত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে দৈনিক তেল আমদানির পরিমাণ গড়ে প্রায় ৫ লাখ ৭৫ হাজার ব্যারেলে উত্তীর্ণ হতে পারে। আগামী নভেম্বর মাসের জন্য যে পূর্বাভাস, তাতে এই পরিমাণ ৪ লাখ থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেলের মধ্যে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অক্টোবর মাসের আগপর্যন্ত দৈনিক গড়ে প্রায় ৩ লাখ ব্যারেল তেল কিনেছে ভারত, সেই তুলনায় এই বৃদ্ধি যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য।

ভারতের সরকারি ও বাণিজ্য কর্মকর্তাদের হিসাব অনুসারে, ভারতের তেল পরিশোধনাগারগুলো তেলের উৎস বাড়াতে মার্কিন অপরিশোধিত তেল কেনা বাড়িয়েছে। এই তেলের মধ্যে আছে মিডল্যান্ড ডব্লিউটিআই ও মার্স। তবে অর্থনৈতিক কারণ যতই বলা হোক না কেন, এর পেছনে আছে মূলত রাজনৈতিক কারণ। সেটা হলো, ওয়াশিংটনের সঙ্গে সহযোগিতার পরিসর বাড়ানো।

এই কৌশলগত পরিবর্তন এমন সময়ে এল, যখন রুশ তেল কোম্পানি রুজনেফট ও লুকঅয়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞার মাত্রা আরও তীব্র হচ্ছে।

পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতের তেল আমদানি বাড়ানোর এ ঘটনা বাণিজ্যিক টানাপোড়েন দূর করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন যখন ভারতীয় রপ্তানি পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, তখন থেকেই এই পরিবর্তন দেখা গেছে। ভারতের এই পদক্ষেপ থেকে বোঝা যায়, ভারত নিজের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা ও রুশ তেল কেনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ প্রশমনের কৌশলগত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এরই মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আবারও বলেছেন, রাশিয়া থেকে ভারত তেল কেনা বন্ধ করবে। যদিও ভারত এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতের তেল আমদানি বাড়লেও রাশিয়া এখনো ভারতের প্রধান অপরিশোধিত তেল সরবরাহকারী, দেশটির মোট আমদানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশই আসে রাশিয়া থেকে। সরবরাহের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইরাক, তৃতীয় স্থানে সৌদি আরব।

কেপলারের বিশ্লেষক ঋতোলিয়া এই প্রবণতার সীমাবদ্ধতা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, মার্কিন তেল কেনা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে ভারতীয় তেল পরিশোধনাগারগুলো তেলের উৎস বহুমুখী করেছে, তা ঠিক। এর মধ্য দিয়ে তারা দেখিয়েছে, স্বল্পমেয়াদি সুযোগ কাজে লাগানোর সক্ষমতাও তাদের আছে। কিন্তু বিষয়টি কাঠামোগত নয়, শুধু দামের পার্থক্যের কারণে তা হয়েছে। দীর্ঘ পরিবহন সময়, বাড়তি ভাড়া ও ডব্লিউটিআই তেলের গড়নের কারণেও ভারতের পক্ষে এই তেল কেনা তেমন একটা সম্ভব হবে না।

ঋতোলিয়া আরও বলেন, ভারতের অপরিশোধিত তেল আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের তেলের হিস্যা বৃদ্ধির বিষয়টি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্য দিয়ে দুই দেশের জ্বালানি সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে। পাশাপাশি ভারতের জ্বালানি সরবরাহের বহুমুখীকরণ কৌশল শক্তিশালী হচ্ছে। দেশটি সরবরাহ নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও ভূরাজনৈতিক ভারসাম্য সমানভাবে বিবেচনায় নিচ্ছে বলেই মনে হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল আমদানি বাড়িয়েছে ভারত, বাণিজ্যঘাটতি নিরসনের চেষ্টা
  • ভারতের নতুন দুশ্চিন্তা: অরুণাচলের কাছে ৩৬টি বিমান বাংকার তৈরি করেছে চীন
  • দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নতুন নৈতিক পরীক্ষায় দিল্লি
  • পাকিস্তানের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক বাড়াতে চায় যুক্তরাষ্ট্র, তবে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষতি করে নয়: রুবিও