রাজধানীর মিটফোর্ডে চাঁদা না-পেয়ে ভাঙারি ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।

শ‌নিবার রাজধানীর পুরোনো ঢাকার মিল ব্যারাকে অবস্থিত বাংলাদেশ পুলিশের তিনটি প্রতিষ্ঠান যথাক্রমে ঢাকা জেলা পুলিশ লাইন, রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স (আরআরএফ) ও ট্রাফিক অ্যান্ড ড্রাইভিং স্কুল (টিডিএস) পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা জানান।

উপদেষ্টা বলেন, ‘‘শুধু মিটফোর্ড নয়, সারাদেশে সংঘটিত এ ধরনের ঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবে মিটফোর্ডের ঘটনাটি বড়ই দুঃখজনক! একটা সভ্য দেশে এমন ঘটনা কখনোই আশা করা যায় না। এ ঘটনায় দায়ী পাঁচজনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল থেকে দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল বিকালে র‍্যাব অস্ত্রসহ দু'জনকে গ্রেফতার করেছে। তাছাড়া গতকাল রাতেও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এ ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বিষয়ে ডিবির টিমও কর্মরত রয়েছে।’’ 

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.

) বলেন, ‘‘আমরা জাতি হিসেবে খুব অসহিষ্ণু হয়ে গেছি। এই অসহিষ্ণুতা আমাদের সবাই মিলে কমিয়ে আনতে হবে। এটা আমাদের সবার দায়িত্ব।’’

‘‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সমাজের নীতি-নির্ধারক, অভিভাবক, শিক্ষক, চিকিৎসক সবাইকে এ বিষয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। মোদ্দাকথা, এ বিষয়ে আমাদের সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে,’’ বলেন তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়। কোনো ঘটনা ঘটলে সেটা যেনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে জানানো হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেটার যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’’

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কেন কঠোর হচ্ছে না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর না হলে পাঁচজনকে কীভাবে গ্রেফতার করা হলো?’’ তিনি বলেন, ‘‘গতকাল কাঠমান্ডুগামী বিমানের ফ্লাইট ফেরত নিয়ে আসার ঘটনায় যে মহিলা টেলিফোন করেছিল তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে যে পরামর্শ দিয়েছে তাকেও আইনের আওতায় আনা হয়েছে। চাঁদপুরের ঘটনায়ও দোষীদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই অবস্থা মোটেও নির্লিপ্ততা নয়। অনেক সময় দু'এক জায়গায় কোনো কারণে একটু হয়তো দেরি হতে পারে, তবে এ সমস্ত ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাথে সাথে অ্যাকশনে যাচ্ছে।’’

ব্রিফিংকালে আইজিপি বাহারুল আলম বিপিএম, এসবি প্রধান ও পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. গোলাম রসুল, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টা এর আগে ঢাকা জেলা পুলিশ লাইন আয়োজিত বিশেষ কল্যাণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন এবং উপস্থিত ফোর্সদের বিভিন্ন সমস্যাদির কথা শোনেন ও তা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন// 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট র ঘটন য় ত র কর ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজারে নদীবন্দরের সীমানা নিয়ে উত্তেজনা, বিক্ষোভে পিছু হটল বিআইডব্লিউটিএ

কক্সবাজার শহরে নদীবন্দরের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। আজ রোববার দুপুরে শহরের বাঁকখালী নদীর কস্তরাঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ে পিছু হটেন বিআইডব্লিউটিএর (বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ) কর্মকর্তারা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ কস্তুরাঘাট এলাকায় নদীবন্দরের সীমানা নির্ধারণে বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা আসবেন—এমন খবরেই সকাল থেকেই স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হতে থাকেন। সকাল ৯টা থেকে বদরমোকাম, কস্তুরাঘাট ও পেশকারপাড়ার লোকজন গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ শুরু করেন। এতে ওই এলাকার যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেলা ১১টার দিকে একই জায়গায় কয়েক শ নারী-পুরুষ এক হয়ে মানববন্ধন করেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ, র‌্যাব, আনসারসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা কস্তুরাঘাট এলাকায় পৌঁছান। এরপর উত্তেজনা আরও বাড়ে। শেষ পর্যন্ত সীমানা নির্ধারণের কাজ বন্ধ করেই ফিরে যায় বিআইডব্লিউটিএ।

বিআইডব্লিউটিএ ও জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গত ১ থেকে ৫ সেপ্টেম্বর বাঁকখালী নদীর ওই অংশে উচ্ছেদ অভিযানে ৪৯৬টি অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে প্রায় ৬৩ একর জমি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার জমি আবার দখলের ঝুঁকি থাকায় কাঁটাতারের বেড়া ও সীমানা পিলার দেওয়ার উদ্যোগ নেয় বিআইডব্লিউটিএ।

যা বলছেন বিক্ষোভকারীরা

অবরোধকারীদের দাবি, উচ্ছেদ হওয়া স্থানের মধ্যে ব্যক্তিমালিকানাধীন খতিয়ানভুক্ত জমিও রয়েছে। পারুল আক্তার নামের এক নারী বলেন, ‘আমাদের খতিয়ান আছে, খাজনাও দিচ্ছি। ক্ষতিপূরণ না দিয়ে বা আলোচনা না করে ঘরবাড়ি ভাঙা ও কাঁটাতার দেওয়া চলবে না।’

সাবিনা ইয়াছমিন নামের আরেক নারী বলেন, অনেক পাকা ভবন যখন তৈরি হলো, তখন কেউ থামাননি। এখন হঠাৎ উচ্ছেদ করা হয়েছে। এতে অনেকেই আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ক্ষতিপূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা এ জায়গায় স্থায়ী কোনো অবকাঠামো হতে দেবেন না।

স্থানীয় বাসিন্দাদের এ মানববন্ধনে বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও অংশ নেন। তাঁদের একজন কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও জেলা মহিলা দলের সভাপতি নাসিমা আকতার। তিনি বলেন, বাঁকখালী নদীর দখল নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের পৃথক তিনটি মামলা রয়েছে। বিআইডব্লিউটিএর উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ নিয়েও হাইকোর্টে তিনটি মামলা হয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি না করে ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করে জায়গাজমিতে কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে ফেলা অন্যায়। আলোচনার মাধ্যমে সংকটের নিরসন না করলে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
কর্মসূচিতে থাকা জেলা যুবদলের প্রচার সম্পাদক ও আইনজীবী মো. ইসমাইল বলেন, বিআইডব্লিউটিএর উচ্ছেদ করা জমিতে অসংখ্য মানুষের খতিয়ানভুক্ত জমি রয়েছে। উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে তিনিসহ ৭৭ জন মামলা করেছেন।

নদী বন্দরের সীমানা নির্ধারণের খবর শুনে সড়কে বেরিয়ে এসে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ সকালে কক্সবাজারের কস্তুরা ঘাট এলাকায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি অত্যন্ত ভালো: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা 
  • সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করাটাই মূল চ্যালেঞ্জ
  • চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ ও সুবর্ণাকে
  • কক্সবাজারে নদীবন্দরের সীমানা নিয়ে উত্তেজনা, বিক্ষোভে পিছু হটল বিআইডব্লিউটিএ
  • আসন্ন নির্বাচন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য অ্যাসিড টেস্ট: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • সামনের নির্বাচন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বড় টেস্ট: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ৯ সদস্যকে হত্যার দাবি পাকিস্তান নিরাপত্তা বাহিনীর, অভিনন্দন শাহবাজের
  • ৩৩ বছর পর মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদের’ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শনিবার