শাস্তিস্বরূপ বান্দরবানে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বদলি আদেশ বাতিলের দাবি
Published: 27th, July 2025 GMT
মানিকগঞ্জের সিংগাইর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান খানকে শাস্তিমূলকভাবে বান্দরবানে বদলি করা হয়েছে। এ বদলি আদেশ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন বান্দরবানের শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২৭ জুলাই) সকালে বান্দরবান প্রেসক্লাব চত্বরে ‘আদিবাসী ছাত্র সমাজ’-এর ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, অভিযুক্ত মনিরুজ্জামান খান একজন লম্পট ও চরিত্রহীন ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে কিশোরী ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এমন একজন বিতর্কিত কর্মকর্তাকে শাস্তিস্বরূপ বান্দরবানে বদলি করে পাঠানো এ জেলার জন্য অবমাননাকর এবং হুমকিস্বরূপ।
তারা আরো বলেন, পার্বত্য জেলা বান্দরবান কোনো শাস্তিমূলক বদলির স্থান নয়। এটি একটি শান্তিপূর্ণ এলাকা। তাই এখানে বিতর্কিত ও অসৎ কর্মকর্তাকে বদলি মেনে নেওয়া যায় না।
শিক্ষার্থী লাবনী তংচঙ্গ্যা বলেন, “উচ্চপদস্থ অনেক কর্মকর্তা পার্বত্য অঞ্চলকে যেন একটি ‘ডাম্পিং স্টেশন’ হিসেবে দেখেন। এমন বিতর্কিত কর্মকর্তার বদলির মাধ্যমে পাহাড়ের শিক্ষা ব্যবস্থা আরো পিছিয়ে পড়বে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।”
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সহ-সাধারণ সম্পাদক এডিশন চাকমা বলেন, “এমন অসৎ কর্মকর্তার বদলি পাহাড়ের শিক্ষাব্যবস্থাকে আরো পেছনে ঠেলে দেবে। আমরা সৎ, যোগ্য ও দায়িত্ববান কর্মকর্তাকেই এখানে চাই।”
মানববন্ধন শেষে আদিবাসী ছাত্র সমাজের নেতারা বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনির কাছে স্মারকলিপি জমা দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিমুল তংচঙ্গ্যা, নেলসন ত্রিপুরা, ফিলিপ খিয়াংসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা/মং/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ন দরব ন কর মকর ত
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশের বিরুদ্ধে সিজুকে হত্যার অভিযোগ, এসপির কার্যালয় ঘেরাও
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় পুকুর থেকে সিজু মিয়া (২৫) নামে যুবকের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যার বিচার দাবিতে জেলা পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয় ঘেরাও করেছে স্থানীয়রা। তারা এ হত্যার জন্য পুলিশকে দায়ী করে তাদের বিচার দাবি করেন।
শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে গাইবান্ধা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন শত শত এলাকাবাসী। পরে তারা বৃষ্টি অপেক্ষা করে পুলিশ সুপারের কার্যালয় অবরোধ করে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সাঘাটা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুরের কচুরিপানার মধ্য থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সিজু মিয়ার লাশ উদ্ধার করে। নিহত সিজু মিয়া (৩০) গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি ইউনিয়নের বাগুরিয়া গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে এবং ইউনিয়ন ছাত্রশিবিরের সভাপতি ছিলেন।
আরো পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে স্বামীর নির্যাতনে গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ
জীবননগরে দিনমজুরকে গলাকেটে হত্যা
পুলিশ দাবি করছে, গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাত ১০টার দিকে সাঘাটা থানায় ঢুকে অস্ত্র ছিনতাই ও পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মহসিন আলীকে ছুরিকাঘাত করে পুকুরে ঝাঁপ দেয় সিজু মিয়া। এরপর থেকে নিখোঁজ থাকে।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন নিহত সিজুর মা মোছা. রিক্তা বেগম, বড় বোন খুশি বেগম, জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ফেরদৌস সরকার রুম্মান, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য রমজান আলী, আরিফুর রহমান, কবির হোসেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ‘‘সিজুকে পুলিশ থানায় ডেকে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। থানায় থেকে পালানোর সময় পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে তিনি মারা যাননি। যার বাড়ি নদীর পাশে তিনি সাঁতার জানেন না, তা হয় না।’’ আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্য হত্যায় অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার ও সাঘাটা থানার ওসিকে অব্যাহতি না দিলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
সিজু মিয়ার মা রিক্তা বেগম বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে সিজু মিয়া একটি পুরাতন অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনেছিল। সাঘাটা থানা থেকে এসআই রাকিব ফোনটি চোরাই বলে জানান। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সিজু স্থানীয় ইউপি সদস্য রমজান আলীর উপস্থিতিতে ফোনটি পুলিশকে দিয়ে দেয়। তারপরও পুলিশ পরিচয়ে দিয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় সিজুকে সাঘাটা থানায় দেখা করতে বলে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে পুলিশ হত্যা করে পুকুরে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার নাটক সাজিয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিয়েছে। সকালে পুকুর থেকে লাশ উদ্ধারের ঘটনাও নাটক ছিল।’’ তিনি ছেলের হত্যার বিচার দাবি করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রমজান আলী বলেন, ‘‘এ হত্যা নিঃসন্দেহে পুলিশ করেছে। তার প্রমাণ, সিজুর শরীর ১২ ঘণ্টা পানি নিচে ছিল। তার পকেট থেকে গাইবান্ধা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের স্পৃষ্ট প্রবেশপত্র কীভাবে এলো? পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর তার পকেট থেকে বের করল, সেটি একটুও ভিজল না, সেটা কীভাবে হয়?’’ তিনি হত্যার সঠিক বিচার দাবি করেন।
গাইবান্ধা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ফেরদাউস সরকার রুম্মান বলেন, ‘‘সিজু নম্র ও ভদ্র প্রকৃতির ছেলে। তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। যার ভিডিও আমাদের কাছে আছে। আমরা এ হত্যার বিচার দাবি করছি।’’
গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে সিজু হত্যার সঠিক তদন্ত করে বিচারের আশ্বাস দিলে বিক্ষুদ্ধ জনতা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে থেকে সরে যায়।
ঢাকা/লুমেন/বকুল