তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিতে পাল্টা শুল্ক কমে ২০ শতাংশ হওয়ায় একটি সমূহ বিপর্যয় এড়ানো গেছে। এতে আমরা আপাতত স্বস্তি প্রকাশ করছি। তবে এই শুল্কহার নিয়ে বসে থাকলে চলবে না, এটি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে।’

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘প্রতিযোগী দেশগুলো তাদের নির্ধারিত শুল্কহার নিয়ে বসে থাকবে না। সেটি তারা কমানোর চেষ্টা করবে। তাতে ভবিষ্যতে কিছু ক্ষেত্রে তাদের শুল্ক কমেও আসতে পারে। ফলে আমাদের এতটা আত্মতুষ্টির কারণ নেই।’

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক কমানোর বিষয়ে আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএর নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মাহমুদ হাসান খান। শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি। বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরকার একটি ভারসাম্যপূর্ণ শুল্ককাঠামো ঘোষণা করেছে; যেটি প্রায় চার মাস ধরে আমাদের উদ্বেগের কারণ ছিল। বাংলাদেশের ওপর অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক (পাল্টা শুল্ক) প্রথমে ৩৭ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশ এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে ২০ শতাংশে পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। এই শুল্কহার আমাদের প্রধান পোশাক রপ্তানিকারী প্রতিযোগীদের তুলনায় সমান বা কাছাকাছি এবং কিছু প্রধান প্রতিযোগী যেমন চীন ও ভারতের তুলনায় কম। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার, বিশেষ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা ও নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং তাঁদের দলের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের একটি সমূহ বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে।’

মাহমুদ হাসান খান জানান, শুল্কবিষয়ক আলোচনায় সম্পৃক্ত হতে তাঁরা বিজিএমইএর পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। সব ধরনের তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সরকারকে সহায়তা করেছেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস ও অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সরকারকে যেন গুরুত্ব বোঝানো হয় সে জন্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেও গেছেন ব্যবসায়ীরা।

২০% পাল্টা শুল্ক কমানোরও সুযোগ রয়েছে

সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বিষয়ে কিছু স্পষ্টকরণ করা প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের (বাংলাদেশের) রপ্তানির প্রায় ৭৫ শতাংশ হচ্ছে তুলাভিত্তিক পোশাক। সে দেশের শুল্ক–সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে (ক্লজ নাম্বার এফ; পৃষ্ঠা ১৩ ও ১৪) বলা আছে যে কোনো পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করলে তার উপকরণে যদি ২০ শতাংশ বা এর বেশি সে দেশটির কাঁচামাল থাকে তাহলে রপ্তানি পণ্যের সেই অংশটুকুর পাল্টা শুল্কহার প্রযোজ্য হবে না বা শূন্য থাকবে। ফলে আমরা যদি যুক্তরাষ্ট্রে কোনো পোশাক রপ্তানি করি সেটির মধ্যে যদি ৫০ শতাংশ ইউএস কটন থাকে তাহলে ওই ৫০ শতাংশের ওপরে নতুন ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপিত হবে না। অর্থাৎ কাঁচামাল ব্যবহার করলে আমরা বাড়তি কিছু শুল্কছাড় পাব।’

মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘শুল্কের এই ধারাটি কীভাবে প্রযোজ্য হবে, কাদের মাধ্যমে হবে, সেটি অবশ্য পরিষ্কার না। এ বিষয়টি আরও পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন। কারণ, এটা যদি আমরা কার্যকর করতে পারি তাহলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি পরিমাণে তুলার সুতা বা কৃত্রিম তন্তু আমদানির বিষয়ে আমাদের সদস্যদের আগ্রহী করে তুলব। তাতে শুল্ক ২০ শতাংশের নিচে নেমে আসবে।’

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘আমাদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী একাধিক দেশ নিজেদের দেশে উৎপাদিত সুতা (কটন) ব্যবহার করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য কম আমদানি করে। ফলে তাদের পক্ষে হঠাৎ করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়ানো সম্ভব না। কিন্তু আমরা এটি পারব। বর্তমানে বাংলাদেশ ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সুতা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করে। এটিকে দুই বিলিয়ন বা ২০০ কোটি ডলার করা খুবই সম্ভব।’

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক নিয়ে অবশ্যই আমাদের স্বস্তির বিষয় আছে। কারণ, আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারতের চেয়ে আমাদের শুল্ক কম আছে, পাকিস্তানে ১ শতাংশ বেশি, আর ভিয়েতনামের সমান আছে। ফলে আমাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় আমাদের শুল্ক সহনীয় পর্যায়ে আছে বলে আমরা আপাতত স্বস্তি প্রকাশ করছি। তবে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ বিশেষ করে ভারত, ভিয়েতনাম, চীন, পাকিস্তান কিন্তু পাল্টা শুল্কের নতুন হার নিয়ে বসে থাকবে না। তারা আলোচনা ও লবিং অব্যাহত রাখবে। এতে যেকোনো সময় তাদের শুল্ক আরও কমতে পারে। ফলে এখানে আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ নির্বাহী আদেশে স্পষ্ট করে বলা আছে, কিছু দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বা নিরাপত্তা চুক্তি আলোচনা এখনো চলমান আছে। ফলে বাংলাদেশকেও আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।’

আরও কিছু উদ্বেগের বিষয় রয়েছে বলে জানান বিজিএমইএ সভাপতি। তিনি বলেন, নতুন পরিস্থিতিতে একজন ক্রেতার চলতি মূলধনে টান পড়বে। কারণ, একই পরিমাণ পণ্য কিনতে হলে তাঁকে ২০ শতাংশ অতিরিক্ত টাকা জোগাড় করতে হবে। কোনো ক্রেতার সেই সক্ষমতা থাকলে কিনবেন, না থাকলে ব্যাংকঋণ নেবেন। যাঁরা ব্যাংকঋণ পাবেন না, তাঁরা হয়তো ক্রয়াদেশের সংখ্যা কমিয়ে দেবেন। সেটাই হলো আমাদের আশঙ্কার বিষয়। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, বাড়তি শুল্কের চাপ চূড়ান্তভাবে ভোক্তার কাঁধে গিয়ে পড়বে। এতে ভোক্তারা যদি পণ্য কেনা কমিয়ে দেন তাতেও আমাদের ক্রয়াদেশ কমবে। এসব বিষয় নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। তবে আশা করছি, পরিস্থিতি সেদিকে যাবে না। পুরো বিষয়টি বুঝতে হলে আগামীতে অন্তত একটি সিজন দেখতে হবে।’

বাড়তি শুল্ক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ও রপ্তানিকারকের মধ্যে কে বহন করবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘আমাদের তৈরি পোশাকের ৯৫ শতাংশ ব্যবসা হয় এফওবি (ফ্রেইট অন বোর্ড) পদ্ধতিতে। এতে ক্রেতা প্রতিষ্ঠান শুল্কের বিষয়টি বহন করে। পাল্টা শুল্কের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ক্রেতা সুনির্দিষ্ট করে বলেননি যে তাঁরা এটি দেবেন না। সুতরাং আমরা ধরে নিচ্ছি, এটি ওনারাই দেবেন। আমরা এ বিষয়ে আগ বাড়িয়ে কিছু বলব না। তবে ওনারা আলোচনা করতে চাইলে আমরা রাজি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র আম দ র প শ ল ক কম সরক র আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

পাল্টা শুল্কের কারণে ক্রয়াদেশ কম

তৃতীয় দফা আনুষ্ঠানিক আলোচনা চলমান থাকা অবস্থায় আজ শুক্রবার থেকে বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের আরোপ করা ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর হচ্ছে। বাড়তি শুল্কহার শেষ পর্যন্ত কত শতাংশে স্থির হয় সেটি ফয়সালা না হওয়ায় মার্কিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠান আগামী মৌসুমে তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ ২০ শতাংশ পর্যন্ত কম দিচ্ছে। আবার কিছু ক্রেতা প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত ক্রয়াদেশ না দিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।

পাল্টা শুল্ক কার্যকরের সময় চলে এলেও তৈরি পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা আগের মতো উদ্বিগ্ন নন। কারণ, দুই-তিন দিন ধরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও মার্কিন বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের কাছ থেকে যে ইঙ্গিত পাচ্ছেন তাতে বাংলাদেশের পাল্টা শুল্ক ভিয়েতনামের কাছাকাছি চলে আসতে পারে। এ ছাড়া প্রতিযোগী দেশ ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তৈরি পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা বলছেন, বর্তমানে বসন্ত ও গ্রীষ্মের ক্রয়াদেশ আসার মৌসুম। তবে পাল্টা শুল্কের কারণে পণ্যের দাম বাড়বে। তাতে তৈরি পোশাকের বিক্রি কমবে। সেটি অনুমান করে মার্কিন বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিশ্রুতির চেয়ে ১০-২০ শতাংশ কম ক্রয়াদেশ দিচ্ছে। অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত ক্রয়াদেশ দিতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করার কথা জানিয়েছে। শেষ পর্যন্ত পাল্টা শুল্ক ভিয়েতনাম, ভারত, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার কাছাকাছি নামিয়ে আনা গেলে বাংলাদেশের ভালো সম্ভাবনা তৈরি হবে। তার কারণ চীন থেকে ব্যাপক হারে ক্রয়াদেশ সরবে।

নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘পাল্টা শুল্ক নিয়ে আমরা খুব বেশি ভয় পাচ্ছি না এখন। তবে বাড়তি শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্যের চাহিদা কমবে। তাতে স্বাভাবিকভাবেই ক্রয়াদেশও কিছুটা কমতে পারে। বাড়তি শুল্ক কার্যকর ও শুল্কহার নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলে আগামী ৩-৪ মাস হয়তো ক্রয়াদেশ কম থাকতে পারে। শেষ পর্যন্ত পাল্টা শুল্ক ভিয়েতনামের কাছাকাছি নামিয়ে আনতে পারলে ক্রয়াদেশ বাড়বে।’

যুক্তরাষ্ট্র যেসব দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে, সেসব দেশের ওপর গত ২ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক বা রেসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ আরোপ করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বের ৫৭টি দেশের ওপর বিভিন্ন হারে বাড়তি পাল্টা শুল্ক বসানো হয়। তখন বাংলাদেশের পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক ছিল ৩৭ শতাংশ। তিন মাসের জন্য এ সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ৮ জুলাই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের জন্য পাল্টা শুল্ক হবে ৩৫ শতাংশ, যা কার্যকর হবে ১ আগস্ট থেকে। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকেরা বর্তমানে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে পণ্য রপ্তানি করেন। নতুন হার কার্যকর হলে তা ৫০ শতাংশে দাঁড়াবে।

যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা পাল্টা শুল্কহার কমাতে তৃতীয় দফার আলোচনা করতে বর্তমানে ওয়াশিংটনে রয়েছে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল। এই দলটি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষ করেছে। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

দেশের তৈরি পোশাক খাতের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী ইভিন্স গ্রুপ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। তাদের মোট তৈরি পোশাক রপ্তানির ২৫ শতাংশের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র।

জানতে চাইলে ইভিন্স গ্রুপের পরিচালক শাহ রাঈদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে ক্রয়াদেশ আসার গতি বর্তমানে কিছুটা ধীর। পাল্টা শুল্ক শেষ পর্যন্ত কত দাঁড়ায় তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। তবে বাড়তি এই শুল্ক শেষ পর্যন্ত মার্কিন ক্রেতাদের দিতে হবে। ফলে বাড়তি শুল্ক কার্যকর হলে দেশটিতে বেসিক বা নিত্য ব্যবহার্য তৈরি পোশাকের বিক্রি কমবে। আমরা এসব সস্তা পোশাকই বেশি রপ্তানি করি। ফলে আমাদের রপ্তানি কমতে পারে।’

দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান স্প্যারো গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। ১৯৮৪ সালে যাত্রা শুরু করা প্রতিষ্ঠানটি গত অর্থবছরে রপ্তানি করে ৩০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। তার একটি বড় অংশই যায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে।

স্প্যারো গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শোভন ইসলাম বলেন, ‘মার্কিন বড় ব্র্যান্ড বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক সোর্সিং অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রতিশ্রুত ক্রয়াদেশ ১০-২০ শতাংশ কমিয়ে দিচ্ছে। এপ্রিলে আমরা যেসব ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে ৫ শতাংশের মতো মূল্যছাড় দিয়েছিলাম, সেটি বসন্ত ও গ্রীষ্ম মৌসুম পর্যন্ত অব্যাহত রাখতে অনুরোধ করছে।’

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের একক শীর্ষ বড় বাজার। গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ ৮৬৯ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যা দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ১৮ শতাংশের কিছু বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া বাংলাদেশি পণ্যের ৮৫ শতাংশের বেশি তৈরি পোশাক। এ ছাড়া মাথার টুপি বা ক্যাপ, চামড়ার জুতা, হোম টেক্সটাইল, পরচুলা ইত্যাদি বেশি রপ্তানি হয়।

জানতে চাইলে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুল্ক নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় বর্তমানে ক্রয়াদেশ কিছুটা কম। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশের পণ্যে শুল্ক কত দাঁড়াচ্ছে তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। এ ছাড়া আমাদের পাল্টা শুল্ক কমবে বলে আমরা আশাবাদী।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শুল্ক হ্রাসে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই, আরো কমাতে আলোচনার পরামর্শ
  • পাল্টা শুল্কের কারণে ক্রয়াদেশ কম