অভাবের সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরানোর আশা ছিল আসলাম কবিরাজের। তার সেই স্বপ্ন পরিণত হয়েছে দুঃস্বপ্নে। প্রায় দুই বছর ধরে লিবিয়ার মাফিয়াদের হাতে বন্দী তিনি। মানবপাচারকারী দালালের হাতে ৪৮ লাখ টাকা দেওয়ার পরও মিলছে না তার মুক্তি।

ভুক্তভোগীর মা আসমা আক্তার দালাল জামাল প্রমাণিককে গ্রেপ্তার করতে এবং আসলামকে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।  

আরো পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সন্তানকে হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টা

খুলনায় গলাকেটে বাবাকে হত্যার অভিযোগ ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে

আসলামের মা আসমা আক্তার চলতি বছরের ২১ জুলাই মাদারীপুর মানবপাচার দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাও করেছেন। মামলা হওয়ার পর থেকেই জামাল প্রামাণিক ঘরে তালা ঝুলিয়ে পলাতক রয়েছেন।

আসলাম মাদারীপুর সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের কুনিয়া গ্রামের হালিম কবিরাজ ছেলে।  

পরিবার জানায়, ২০২৩ সালে আসলাম কুনিয়া ইউনিয়নের হুগলী গ্রামের দালাল জামাল প্রামাণিকের প্রলোভনে পড়েন। তিনি ইতালিতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে আসলামের পরিবার থেকে প্রথমে ১৫ লাখ টাকা নেন। পরে বিভিন্ন অজুহাতে ধাপে ধাপে মোট ৪৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। টাকা জোগাড় করতে পরিবারটিকে জমি বিক্রি ও ঋণ নিতে হয়েছে। এত কিছুর পরও আসলামকে মুক্ত করতে পারেননি তারা।

আসলামের মা আসমা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “জমি বিক্রি করে, ধার-দেনা করে ছেলের জন্য ৪৮ লাখ টাকা দিয়েছি। দুই বছর ধরে
আমার সন্তান লিবিয়ায় বন্দী। দালাল জামাল এখনো টাকা দাবি করছে। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, এই দালালের বিচার হোক, আর আমার সন্তানকে যেন ফিরিয়ে আনা হয়।”

অভিযোগ অস্বীকার করে জামাল বলেন, “আমি টাকা নেই নাই। টাকা নিয়েছে অন্য এক ব্যক্তি। বিষয়টা সমাধান হয়ে গেছে।”

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। মামলা হয়েছে, তদন্ত চলছে। যারা  দোষী তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।”

ঢাকা/বেলাল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ আসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

যৌথ বাহিনীর অভিযান, এক সপ্তাহে আটক ৬৯

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গত এক সপ্তাহে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অভিযোগে ৬৯ ব্যক্তিকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র-গুলিসহ বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

আরো পড়ুন:

কাপ্তাই হ্রদে নৌকাডুবি: সফল উদ্ধার অভিযান সেনাবাহিনীর

জিওসি মেজর জেনারেল নাজিমউদ্দৌলার পূজামণ্ডপ পরিদর্শন

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশব্যাপী পেশাদারির সঙ্গে কাজ করে চলছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদাতিক ডিভিশন ও স্বতন্ত্র ব্রিগেডের অধীনের ইউনিটগুলো অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে এই যৌথ অভিযান চালানো হয়।

আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এসব যৌথ অভিযানে চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী, দুষ্কৃতকারী, অবৈধ অস্ত্রধারী, অস্ত্র ব্যবসায়ী, শিশুপাচারকারী, জুয়াড়ি, নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য, মাদক ব্যবসায়ী, মাদকাসক্তসহ মোট ৬৯ জনকে হাতেনাতে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে ১০টি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ২টি ম্যাগাজিন, ৩টি ককটেল, ২৭টি বিভিন্ন ধরনের গুলি, সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রকার দেশি-বিদেশি ধারাল অস্ত্র, দেশি-বিদেশি মাদকদ্রব্য, মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন চোরাই মালামাল ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়।

আটক ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ এবং আইনি কার্যক্রম সম্পন্নের জন্য তাদের সংশ্লিষ্ট এলাকার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের ৬২ জেলায় সার্বক্ষণিক টহলের মাধ্যমে প্রায় ৩৩ হাজার পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে পূজা অর্চনার প্রতিটি ধাপে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। এছাড়া শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী সরাসরি সম্পৃক্ত রয়েছে।

দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

সাধারণ জনগণকে যেকোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপের বিষয়ে কাছের সেনাক্যাম্পে তথ্য দিতে আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ