নির্বাচন কমিশন (ইসি) গড়িমসি করে ‘বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন’কে নিবন্ধন দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে দলটি। তারা মনে করে, এর মধ্য দিয়ে কমিশন আদালতের সুস্পষ্ট রায় অবমাননা করে তাদের আগামী নির্বাচন ও রাজনীতি থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছে।

আজ বুধবার সকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনে তোপখানা দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম ও দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদার ভূইয়া।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল। কিন্তু তৎকালীন নির্বাচন কমিশন কোনো সুস্পষ্ট কারণ না দেখিয়ে সেই আবেদন বাতিল করে দেয়। পরবর্তী সময়ে পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হলে কমিশন জানায়, বিদ্যমান আইনে সেই সুযোগ নেই। পরে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে বেআইনি ঘোষণা এবং দলকে নিবন্ধন দেওয়ার আদেশ চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করে দলটি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আদালত শুনানি শেষে চলতি বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তাদের পক্ষে রায় দেন। রায়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০ডি ধারা অনুযায়ী গঠনতন্ত্র সংশোধন সাপেক্ষে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, আদালতের রায়ের পর দীর্ঘ সময় নির্বাচন কমিশন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় তাঁরা গত ৩ অক্টোবর বিশেষ কাউন্সিল করেন। এরপর আইনি বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী দলীয় গঠনতন্ত্র সংশোধন করে ৩ নভেম্বর তা কমিশনে জমা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, এরপরও নির্বাচন কমিশন কালক্ষেপণ করছে। মৌখিকভাবে দ্রুত আবেদন নিষ্পত্তির আশ্বাস দিলেও চিঠিতে প্রায় সব কাগজপত্র আবারও চাওয়া হয়। সর্বশেষ ১ ডিসেম্বর প্রায় দুই হাজার পাতার নথি জমা দেওয়া হলেও গত ১০ দিনে কোনো কাজ এগোয়নি।

এতে আরও বলা হয়, ‘জাতীয় নির্বাচন দ্বারপ্রান্তে। যেকোনো সময় তফসিল ঘোষণা হতে পারে। সারা দেশে আমাদের দলীয় নেতা–কর্মীরা নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুত। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনের এই কর্মকাণ্ড রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনকে আগামী নির্বাচন এবং রাজনীতি থেকে বঞ্চিত করার উপক্রম করেছে। এমন কিছু হলে জাতীয় নির্বাচন ও আগামীর সংস্কার যাত্রা প্রশ্নবিদ্ধ হবে, যা পতিত স্বৈরাচার ও সংস্কারবিরোধীদের উদ্দেশ্যই পূরণ করবে।’

সংবাদ সম্মেলনে অবিলম্বে নিবন্ধন দেওয়ার দাবি জানিয়ে বলা হয়, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ঘোষিত সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়। সংস্কার যাত্রা নিরঙ্কুশ করতে এই নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হতে পারে। রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অন্যতম দাবিদার।

দ্রুত নিবন্ধন দেওয়া না হলে রাষ্ট্রীয় এবং জনতার আদালতে এই নির্বাচন কমিশনের বিচার চাওয়া হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাকসু কমিশনারের প্রতি ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী সংসদের অনাস্থা

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন (ব্রাকসু) কমিশনারের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী সংসদ’। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া চত্বরের দক্ষিণ পাশে সংবাদ সম্মেলনে এই অনাস্থা জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের বহুল প্রত্যাশিত ব্রাকসুর গঠনতন্ত্র অনুমোদন হলেও শুরু থেকে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের চরম অযোগ্যতা ও ব্যর্থতার কারণে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ আজ হাস্যকর বিষয়ে পরিণত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের শীতকালীন ছুটির দাবি পাশ কাটিয়ে একটি গোষ্ঠীকে সুবিধা  দিতে গঠনতন্ত্র ও ভোটার তালিকায় অসংখ্য ভুলত্রুটি নিয়ে তড়িঘড়ি করে একটি বিতর্কিত নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন।

আরো বলা হয়, ব্যর্থতার দায় নিয়ে দুইবার পদত্যাগ ও একবার নির্বাচনী কার্যক্রম স্থগিত করার পর তারা কথা দিয়েছিলেন ভোটার তালিকায় বিদ্যমান ত্রুটিগুলো সংশোধন করে পরবর্তী কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন। কিন্তু, অত্যন্ত দুঃখের বিষয়; তারা ত্রুটিগুলো নিয়ে আবারো অধিকাংশ শিক্ষার্থীর শীতকালীন ছুটির বিষয়টিকে উপেক্ষা করে একটি পক্ষের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে একটি প্রহসনমূলক নির্বাচনের নাটক মঞ্চস্থ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিতর্কিত প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন।

সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী সংসদের পক্ষ থেকে ছয়টি দাবি উল্লেখ করে বলা হয়, ক্যালেন্ডার অনুযায়ী শীতকালীন ছুটি বহাল রেখে যৌক্তিক সময়ে সব শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশ অংশগ্রহণমূলক ব্রাকসু নির্বাচন হোক, ভোটার তালিকায় বিদ্যমান ত্রুটিগুলো সংশোধন করা হোক, প্রার্থীদের অবশ্যই ডোপ টেস্ট ও হল ক্লিয়ারেন্স নিতে হবে, নির্বাচনী আচরণবিধি দৃঢ়ভাবে কার্যকর করতে হবে, মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমরা অনাস্থা প্রকাশ করছি কারণ এই কমিশনের সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেওয়ার সক্ষমতা নেই।

ঢাকা/‎সাজ্জাদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রাকসু কমিশনারের প্রতি ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী সংসদের অনাস্থা