পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে কারাগারে সাক্ষাতের দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) নেতা–কর্মীরা। গতকাল মঙ্গলবার রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারের বাইরে এ বিক্ষোভ হয়। এ সময় পুলিশ তাঁদের ওপর জলকামান ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ পিটিআইয়ের।

কারাগারে কয়েক মাস ধরে ইমরানের সঙ্গে কারও সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে পিটিআই। দলটির আপত্তির মুখে প্রতি মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার সাক্ষাতের ব্যবস্থা করার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। এরপর গত সপ্তাহে বোন উজমা খানকে ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়েছিল। তবে চলতি সপ্তাহে মঙ্গলবার আবার বাধা দেওয়া হয়।

এদিন ইমরানের সঙ্গে সাক্ষাৎ না করতে পেরে কারাগারের বাইরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন পিটিআইয়ের নেতা–কর্মীরা। তাঁদের নেতৃত্ব দেন ইমরানের বোন আলিমা খান। সঙ্গে ছিলেন অন্য দুই বোন উজমা ও নোরিন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এলাকা ছাড়তে বলে পুলিশ। এর পরপরই কারাগার চত্বরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়।

পরদিন আজ বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পিটিআই জানায়, মঙ্গলবারের বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিতে তাদের নেতা–কর্মীদের ওপর জলকামান ব্যবহার করেছে পুলিশ। পুলিশের এই হামলা মানবাধিকার ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের লঙ্ঘন। দলটির প্রকাশিত একটি ভিডিওতে জলকামান থেকে ছোড়া পানিতে পিটিআইয়ের নেতা–কর্মীদের ছত্রভঙ্গ হয়ে যেতে দেখা যায়।

দলটির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, পাকিস্তান সরকারের অমানবিক ও কর্তৃত্ববাদী এসব পদক্ষেপ নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে চুপ থাকা উচিত হবে না। তবে পাকিস্তান সরকারের ভাষ্য, কারাগারের ভেতরে রাজনীতি নিয়ে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই। এরপরও গত সপ্তাহে উজমা খান তা করেছিলেন। এ জন্য তাঁকে আর ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হবে না।

ইমরানকে নিষিদ্ধের প্রস্তাব পাঞ্জাব আইনসভায়

এদিকে ইমরান খান ও পিটিআইকে ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধের দাবিতে পাঞ্জাবের প্রাদেশিক আইনসভায় একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। বর্তমান শাসক দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সঙ্গে পিটিআইয়ের রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।

পাঞ্জাবের প্রাদেশিক আইনসভায় মঙ্গলবার পিএমএল-এন আইনপ্রণেতা তাহির পারভেজ ইমরান খান ও তাঁর দলকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবটি আনেন। এ দিনই তা গৃহীত হয়। মঙ্গলবার পিটিআইয়ের আইনপ্রণেতারা পরিষদে উপস্থিত ছিলেন না। কারাগারে ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তাঁরা অধিবেশন বর্জন করেছিলেন।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী প্রতিটি ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে রক্ষা করেছে। ভারতের মতো পাঁচ গুণ বড় শত্রুকে সফলভাবে মোকাবিলা করেছে। তারা দেশের অখণ্ডতা ও স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য। শত্রুরাষ্ট্রের হাতিয়ার হয়ে কাজ করার কারণে ওই রাজনৈতিক দল এবং এর প্রতিষ্ঠাতার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত। মজার বিষয় হলো, এতে পিটিআই ও ইমরানের নাম উল্লেখ করা হয়নি।

এ নিয়ে পাঞ্জাব আইনসভার বাইরে সাংবাদিকদের প্রাদেশিক তথ্যমন্ত্রী আজমা বোখারি বলেন, তিনি কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা বা কোনো প্রদেশে গভর্নরের শাসন আরোপের পক্ষে নন। তবে আজমা বোখারি সতর্ক করে এ-ও বলেছেন, পিটিআইয়ের সাম্প্রতিক কার্যক্রম কর্তৃপক্ষকে সেই পথে ঠেলে দিচ্ছে। ইমরান পাকিস্তানকে বৈশ্বিক বিচ্ছিন্নতার দিকে ঠেলে দিয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প ট আইয় র ইমর ন খ ন প রস ত ব র জন ত প ট আই

এছাড়াও পড়ুন:

পাঞ্জাবের আইনসভায় ইমরান ও তাঁর দলকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব গৃহীত

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে তাদের নিষিদ্ধ করার দাবিতে পাঞ্জাবের প্রাদেশিক আইনসভায় গতকাল মঙ্গলবার একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।

দেশটির বর্তমান শাসক দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজ (পিএমএল-এন)–এর সঙ্গে পিটিআইয়ের চরম রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে এমন একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

এই সিদ্ধান্ত আসার কয়েক দিন আগে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী নাম উল্লেখ না করে ইমরান খানকে আক্রমণ করে বলেছিলেন, তিনি (ইমরান) সেনাবাহিনীবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন এবং সেনাবাহিনীবিরোধী মনোভাব ছড়িয়ে দিচ্ছেন।

আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেছিলেন, ‘এ ধরনের বক্তব্য এখন আর রাজনীতির পরিধির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই; বরং এগুলো জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিতে পরিণত হয়েছে।’

তার পর থেকে পিএমএল-এন ও পিটিআই নেতাদের মধ্যে কথার লড়াই চলছে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, ইমরান খান অতীতে কঠিন ভাষায় বিরোধী রাজনীতিকদের সমালোচনা করেছেন। তাই সামরিক বাহিনীর মুখপাত্রের মন্তব্য নিয়ে আপত্তি তোলার কোনো অধিকার তাঁর নেই।

সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে আইএসপিআরের মহাপরিচালকের মন্তব্যকে পিটিআই ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করে কঠোরভাবে এর নিন্দা জানিয়েছে। পিটিআই জোর দিয়ে বলেছে, ইমরান খান জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি নন।

পিটিআইয়ের আইনপ্রণেতারা এদিন উপস্থিত ছিলেন না।

পাঞ্জাবের প্রাদেশিক আইনসভায় মঙ্গলবার পিএমএল-এন আইনপ্রণেতা তাহির পারভেজ পিটিআইন নেতা ইমরান খান ও তাঁর দলকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবটি আনেন। প্রাদেশিক পরিষদে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। পিটিআইয়ের আইনপ্রণেতারা এদিন পরিষদে উপস্থিত ছিলেন না।

রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে ইমরান খানের সঙ্গে বৈঠক নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তাঁরা অধিবেশন বর্জন করেন।

পাকিস্তান আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাঞ্জাবের আইনসভায় ইমরান ও তাঁর দলকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব গৃহীত