এনইআইআর ১৬ ডিসেম্বর চালু হলেও মুঠেফোন নিবন্ধন চলবে মার্চ পর্যন্ত
Published: 10th, December 2025 GMT
দেশে অবৈধ পথে ও চোরাই মুঠোফোন আনা বন্ধের লক্ষ্যে ১৬ ডিসেম্বর থেকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) চালু করতে যাচ্ছে সরকার। তবে মুঠোফোন ব্যবসায়ীদের সংগঠন মোবাইল বিজনেস কমিউনিটির সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা শেষে ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে দেশে থাকা সব অনিবন্ধিত মুঠোফোন ১৫ মার্চ ২০২৬–এর মধ্যে নিবন্ধন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মুঠোফোন আমদানিতে কোনো বাধা নেই। কত পুরোনো ও কোন কোন মডেলের ফোন আমদানি করা যাবে, তা ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবে। সব পক্ষকে আগামীকাল ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগকে লিখিতভাবে এ বিষয়ে জানাতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, মুঠোফোন আমদানিতে শুল্ক পুনর্নির্ধারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলমান রয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এ বিষয়ে মধ্যস্থতা করবে।
এই সিদ্ধান্তের পর দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট করার অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বানও জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ২ দাবি
দেশের উৎপাদিত মোবাইল কারখানাগুলোর মালিকরা ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন। এনইআইআর বাস্তবায়ন হলে মোবাইল ফোন খাতে নিরাপত্তা ও বৈধতা নিশ্চিত হবে, সরকার প্রতি বছর হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব পাবে, দেশে বাড়বে বিদেশি বিনিয়োগ, তৈরি হবে নতুন কর্মসংস্থান।একই সঙ্গে সংগঠনটি মোবাইল হ্যান্ডসেট খাতের সুস্থ বিকাশের জন্য কারখানা ও আমদানিকারক পর্যায়ের ভারসাম্যপূর্ণ কর কাঠামো প্রণয়নেরও দাবি জানান।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সস্মেলনে এসব দাবি জানায় মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।
এ সময় সংগঠনের সভাপতি জাকারিয়া শহীদ, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বিপ্লব, নির্বাহী কমিটির সদস্য ইমাম উদ্দিন, রেজওয়ানুল হকসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জাকারিয়া শহীদ বলেন, “এনইআইআর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।বহু দেশেই এটি কার্যকর রয়েছে। বাংলাদেশে এ সিস্টেম চালু হলে অবৈধ, চোরাই, কপি বা রিফারবিশড ফোন বাজার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে।একই সঙ্গে বন্ধ হবে একই আইএমইআই নম্বর ব্যবহার করে ডজনখানেক ফোন চলার মতো নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি।”
তিনি বলেন, “বিটিআরসি জানিয়েছে আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে এনইআইআর কার্যকর হবে। তার আগে নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত সব মোবাইল (বৈধ–অবৈধ) স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হবে এবং সচল থাকবে। এরপর নতুনভাবে অনুমোদনহীন ফোন নেটওয়ার্কে কাজ করবে না।”
মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স এসোসিয়েশন লিখিত বক্তব্যে জানান, বাংলাদেশের মোবাইল শিল্প বর্তমানে ১৮টি উৎপাদনকারী কারখানার সমন্বয়ে শক্তিশালী একটি খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে ৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি-বিদেশি ও দেশি বিনিয়োগ রয়েছে। এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৫০ হাজার জনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
দেশের মাসিক উৎপাদন সক্ষমতা ১৫ লাখ স্মার্টফোন ও ২৫ লাখ ফিচার ফোন। যদিও গ্রে মার্কেটের চাপের কারণে এখনও ৩০-৪০ শতাংশ সক্ষমতা অব্যবহৃত রয়েছে। বর্তমানে মোবাইল ফোন বাজারের আকার প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। এই শিল্প দেশের ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি, প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি, নারী কর্মসংস্থান এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
সিন্ডিকেট নয়, এটি একটি প্রতিযোগিতামূলক বাজারের কথা উল্লেখ করে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স এসোসিয়েশনের নেতারা জানান, মোবাইল উৎপাদন শিল্পে সিন্ডিকেট থাকার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বর্তমানে ১৮টি কোম্পানি উৎপাদন লাইসেন্সধারী। যারা মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বাজারে কাজ করছে। তাই একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ বা সিন্ডিকেশন এর অভিযোগ বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
এনইআইআর সিস্টেম না থাকা অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও শিল্পের জন্য বড় হুমকি বলে জানিয়েছেন মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটি ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।
ঢাকা/নাজমুল/এসবি