অর্থ উপদেষ্টা বাসায় ফিরেছেন, কাল জারি হতে পারে সচিবালয় ভাতার প্রজ্ঞাপন
Published: 10th, December 2025 GMT
আগামীকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয় ভাতার প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। আন্দোলনের মুখে আজ বুধবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এমন আশ্বাস দিয়েছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
অর্থ উপদেষ্টার কাছে সচিবালয়ে কর্মরত সব কর্মচারী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মচারীদের সমান ঝুঁকি ভাতা দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু সেই দাবি পূরণ হচ্ছিল না। দুদকের কর্মচারীদের ঝুঁকি ভাতা তাঁদের মূল বেতনের ৩০ শতাংশ।
ভাতার এই দাবি আদায়ে আজ বেলা আড়াই থেকে রাত সোয়া আটটা পর্যন্ত অর্থ উপদেষ্টাকে তাঁর কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন সচিবালয়ের নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। প্রায় সাত ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর অর্থ উপদেষ্টা সচিবালয় থেকে পুলিশি সহায়তায় বের হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সচিবালয়ের ভেতরে অর্থ বিভাগের জন্য ১৮ তলা ভবন রয়েছে। এ ভবনের চারতলায় অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয়। আজ বেলা দুইটার দিকে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে গিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। তার আগে আজ সকালে ঢাকার আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে জাতীয় ভ্যাট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা। সেখান থেকে তখনো তিনি কার্যালয়ে ফেরেননি। তবে ফেরার পর খবর পেয়ে আবার তাঁর কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন কর্মচারীরা। এ সময় কর্মচারীরা হ্যান্ডমাইকে ভাতার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
কর্মচারীদের দাবির মধ্যে রয়েছে উপদেষ্টা, মন্ত্রী ও সচিবেরা রাতে যতক্ষণ অফিসে থাকেন, ততক্ষণ তাঁদেরও অফিস করতে হয়। বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়মিত বেতনকাঠামোর বাইরে নানা ধরনের ভাতা পেলেও সচিবালয়ের কর্মচারীদের তা দেওয়া হয় না।
আন্দোলনকারীদের একজন আজ সন্ধ্যায় জানিয়েছিলেন, দীর্ঘদিন থেকেই তাঁদের ক্ষোভ রয়েছে। রেশনের দাবিতে এর আগেও তাঁরা অর্থ উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ করেছিলেন। তখন তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন, রেশনের দিকটি বিবেচনা করবেন। কিন্তু তিনি কথা রাখেননি।
এ ছাড়া সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা চালুর আশ্বাস দিয়েও পরে তা কার্যকর করেনি সরকার। নতুন বেতন কমিশনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অর্থ উপদেষ্টা এরই মধ্যে কয়েকবার বলেছেন, বেতন কমিশন বাস্তবায়ন করবে নির্বাচিত সরকার। এর আগে গত ২২ জুন সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতেও অর্থ বিভাগের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছিলেন কর্মচারীরা।
সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অর থ ব ভ গ কর মকর ত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর সচিবালয় ছাড়লেন অর্থ উপদেষ্টা
সচিবালয়ে কাজের পরিবেশের উন্নতি ও ‘সচিবালয় ভাতা’ চালুর দাবিতে দিনভর উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে প্রায় ছয় ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর অবশেষে দপ্তর ছেড়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশের সহায়তায় তিনি সচিবালয়ের ১১ নম্বর ভবন থেকে বের হন।
আরো পড়ুন:
৭৭ উপজেলায় নতুন ইউএনও
প্রশাসনের ২২ কর্মকর্তার পদোন্নতি
দুপুর আড়াইটায় শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে সচিবালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারীরা দলবদ্ধ হয়ে অর্থ উপদেষ্টার কক্ষের সামনে জড়ো হন এবং ২০ শতাংশ সচিবালয় ভাতা ঘোষণার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। ধীরে ধীরে উত্তেজনা বাড়তে থাকলে ভবনটির ভেতর ও বাইরে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
এক পর্যায়ে পুলিশের একটি বিশেষায়িত ইউনিট আন্দোলনকারীদের সরে যেতে অনুরোধ করলে দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি এবং শ্লোগান-পাল্টা শ্লোগান দেখা যায়। পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হলে উপদেষ্টার নিরাপত্তায় চতুর্থ তলায় গিয়ে অবস্থান নেয় পুলিশ।
এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সচিবালয়ের কর্মীদের বহুদিনের দাবি ‘সচিবালয় ভাতা’ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) জারি করা হবে। বিকেল ৩টার মধ্যে গেজেট প্রকাশের আশ্বাস পেয়ে কর্মচারীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।
আন্দোলনকারী এক কর্মচারী বলেন, “আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় কাজ করি, দীর্ঘ সময় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করি, কিন্তু কোনো ওভারটাইম সুবিধা নেই। তাই সচিবালয় ভাতার দাবি ন্যায়সঙ্গত।”
সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি বাদিউল কবির বলেন, “দুদক পর্যন্ত হোয়াটসঅ্যাপে জিও জারি করতে পারে, সেখানে সচিবালয়ের ভাতা ঘোষণা নিয়ে এত জটিলতা কেন? আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত নড়বনা।”
তিনি আরো জানান, সচিবালয় কর্মীরা প্রতিদিন জাতীয় প্রেসক্লাব–সচিবালয় এলাকাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক সমাবেশ, মিছিল ও নিরাপত্তাজনিত চাপের মধ্যে কাজ করেন, যা অন্য দপ্তরের তুলনায় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ও শ্রমসাপেক্ষ। এ কারণে এই ভাতা চালু করা জরুরি ও যুক্তিসঙ্গত।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে ইতোমধ্যেই টিপ টপ ভাতা ও অতিরিক্ত কাজের আর্থিক সুবিধা চালু রয়েছে।তাই প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে সচিবালয়ে কর্মরতদের জন্যও একই ধরনের ভাতা ঘোষণার দাবি দীর্ঘদিন ধরেই আসছিল।
ঢাকা/আসাদ/সাইফ