গাজা এখনো অকল্পনীয় দুর্ভোগের জায়গা: জাতিসংঘ
Published: 10th, December 2025 GMT
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান ভলকার টার্ক সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, গত মাসে কার্যকর হওয়া গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে পারেনি। মঙ্গলবার জেনেভায় সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান বলেন, “গাজা এখনো অকল্পনীয় দুর্ভোগ, ক্ষতি এবং ভয়ের জায়গা।”
তিনি বলেন, “রক্তপাত কমে গেলেও থামেনি। ইসরায়েলের আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে তথাকথিত হলুদ রেখার কাছে আসা ব্যক্তিদের উপর, আবাসিক ভবন এবং আইডিপি (অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের), তাঁবু এবং আশ্রয়কেন্দ্র, পাশাপাশি অন্যান্য বেসামরিক অবস্থানের ওপর হামলা।”
টার্ক জানান, অধিকৃত পশ্চিম তীরেও ‘নজিরনিহীন’ সহিংসতা ঘটছে। সেখানে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ও বসতি স্থাপনকারীদের হামলা বেড়েছে।
তিনি বলেন, “এটি অধিকৃত ভূখণ্ডজুড়ে ফিলিস্তিনিদের জন্য চাপ এবং সমর্থন জোরদার করার সময়, আত্মতুষ্টিতে ডুবে যাওয়ার নয়।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আট দশক পর দেশের মাটিতে ফিরে যাওয়া
জাপানের টোকিওর নগরকেন্দ্রের ব্যস্ত এক জায়গাজুড়ে আছে বিতর্কিত একটি শিন্তো মন্দির। জাপানে যেটা ইয়াসুকুনি মন্দির নামে পরিচিত। ১৮৬৯ সালে যাত্রা শুরু করা শিন্তো ধর্মের এই মন্দির তৈরি করা হয়েছিল মূলত এক বছর আগে গৃহযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সামন্ত্রতান্ত্রিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে আধুনিক জাপানের ভিত্তি তৈরি করে নেওয়া মেইজি পুনরুত্থানের সময় গৃহযুদ্ধে নিহত বিজয়ী পক্ষের সৈন্যদের ‘দেবতুল্য’ ভাবমূর্তি তুলে ধরার উদ্দেশ্যে। ফলে বিজয়ী পক্ষের নিহত সব সৈনিকের নাম সেখানে দেবতার সারিতে সন্নিবেশিত আছে, পরাজিতদের নয়।
দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জীবন বিসর্জন দেওয়ার বিনিময়ে পাওয়া এ রকম প্রতিদানের মধ্যে বিতর্কের কিছু থাকার কথা নয়। দীর্ঘকাল ধরে এটা নিয়ে কোনো রকম বিতর্কও ছিল না। তবে সেই হিসাব পাল্টে যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধাপরাধী হিসেবে সর্বোচ্চ সাজা পাওয়া জাপানের সেই সময়ের কয়েকজন নেতাকে ১৯৭০–এর দশকের শেষ দিকে ইয়াসুকুনির দেবতার তালিকায় যুক্ত করার প্রচেষ্টা চালানোর মধ্য দিয়ে।
ফলে যুদ্ধের পুরো সময় ধরে জাপানের যে কয়েক লাখ তরুণ দেশপ্রেমে নিবেদিত থেকে নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন, ইয়াসুকুনির সেই ঘটনার আলোকে তাঁদেরও এখন ধরে নেওয়া হচ্ছে ‘বিতর্কিত’ হিসেবে। জাপানের জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের বাইরে অন্য একটি মর্মান্তিক দিক হচ্ছে এটা।
যেকোনো যুদ্ধের বলি সর্বাগ্রে হতে হয় যুদ্ধে জড়িত কোনো একটি দেশের তরুণদের। নিজেরা না চাইলেও দেশপ্রেমের দোহাই দিয়ে যুদ্ধে যোগ দিতে যাঁদের সাধারণত বাধ্য করা হয়। এর পরোক্ষ ফলশ্রুতিতে নেতৃত্বের স্খলনের জন্য নেতারাই কেবল নয়, সেসব তরুণকেও চিহ্নিত করা হয় ‘খলনায়ক’ হিসেবে।
এমনটাই সম্ভবত ঘটেছে আট দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত জাপানের কয়েকজন তরুণ সৈনিকের জীবনে। তাঁদের অনেকেরই সম্ভবত জানা ছিল না কেন তাঁরা যুদ্ধে জড়িত। আর যাঁরা তাঁদের যুদ্ধের ময়দানে পাঠিয়েছিলেন, তাঁরা ধরে নিয়েছিলেন যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা সেই তরুণদের ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত কী ঘটে, তা নিয়ে খুব বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করার দরকার সম্ভবত নেই।
সমাধিতে চিরনিদ্রায় শায়িত জাপানিদের নামফলক