৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বসুন্ধরার চেয়ারম্যানসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
Published: 10th, December 2025 GMT
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল ব্যাংকের ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে সংস্থার সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১–এ মামলাটি করেন। মামলায় আহমেদ আকবর সোবহান ছাড়াও তাঁর দুই ছেলেসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। আহমেদ আকবর সোবহানের দুই ছেলে হলেন বসুন্ধরা ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদাত সোবহান এবং একই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সাফিয়াত সোবহান।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো.
মামলার অপর আসামিরা হলেন ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক মনোয়ারা সিকদার, পারভীন হক সিকদার, মোয়াজ্জেম হোসেন, রিক হক সিকদার, রন হক সিকদার, মো. আনোয়ার হোসেন ও এ কে এম এনামুল হক শামীম, ব্যাংকটির ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হাসিনা সুলতানা, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ম্যানেজার আরিফ মো. শহিদুল হক, সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ক্রেডিট ইন চার্জ আনিসুল হক, সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সুলতানা পারভিন ও সুবল চন্দ্র রায় এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ কামরুল হাসান মিঠু। তাঁদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০/৪০৯/১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলটি করা হয়েছে।
মামলায় বলা হয়েছে, আসামিরা ব্যাংকের প্রচলিত বিধিবিধান লঙ্ঘন করে এবং ঋণের শর্ত পূরণ না করেই বসুন্ধরা ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ৬০০ কোটি টাকা ‘ফান্ডেড’ ও ৭৫০ কোটি টাকা নন-ফান্ডেড—মোট ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ করেন। পরবর্তী সময়ে বিতরণ করা ফান্ডেড ঋণের ৬০০ কোটি টাকা পরিশোধ না করে পরস্পর যোগসাজশে সেই টাকা আত্মসাৎ করেন। আত্মসাৎ করা টাকার অবৈধ উৎস, অবস্থান এবং মালিকানা গোপন করার জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা শাখা থেকে ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেডের কর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়।
এ ছাড়া এই অর্থের আরেকটি অংশ রংধনু বিল্ডার্স নামের প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের হিসাবে স্থানান্তর করে ঋণ সমন্বয় ও নগদ উত্তোলন করে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তর করেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী বড় বড় ব্যবসায়ীদের দুর্নীতি-অনিয়মের বিষয়েও অনুসন্ধানে নামে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থা। তার ধারাবাহিকতায় বসুন্ধরার চেয়ারম্যান এবং তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে ‘সরকারের রাজস্ব ফাঁকি, ভূমি জবরদখল, ঋণের অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ স্থানান্তর ও হস্তান্তর, অর্থ পাচারের’ অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।
এর অংশ হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের দুদকে তলবও করা হয়েছিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) বসুন্ধরাসহ পাঁচ বড় কোম্পানির মালিকদের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। তাঁদের ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের লেনদেনের তথ্য চেয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠায়।
এরপর গত বছর ২১ অক্টোবর ঢাকার আদালত বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানসহ তাঁর পরিবারের আট সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন। তার আগে ৬ অক্টোবর তাঁদের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ৬০০ ক ট
এছাড়াও পড়ুন:
শিরোপা উদযাপনে বগুড়ায় থেকে গিয়েছিলেন আকবররা
মধুর সমস্যা যাকে বলে সেটাই হয়েছে আকবর আলীদের সঙ্গে। বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে নিজেদের শেষ চারদিনের ম্যাচ তিনদিনেই তারা জিতে নিয়েছে। খুলনা বিভাগকে ৭ উইকেটে উড়িয়ে জাতীয় ক্রিকেট লিগে শিরোপা জয়ের কাজটা করে রেখেছে।
শিরোপা নিশ্চিত হতে তাদের অপেক্ষা করতে হবে আরো একদিন। সচরাচর যেটা হয়, ম্যাচের পর ক্রিকেটাররা যার যার মতো করে বাসায় ফিরে যান। জাতীয় ক্রিকেট লিগের লম্বা টুর্নামেন্ট খেলে ক্রিকেটাররা ছিলেন ক্লান্ত। কিন্তু রংপুরের শিরোপা জয়ের সুযোগ থাকায় আকবরদের বাড়তি একদিন অপেক্ষা করতে হয় বগুড়ায়।
আরো পড়ুন:
টি-টোয়েন্টির পর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও চ্যাম্পিয়ন রংপুর
জাতীয় ক্রিকেট লিগ: শেষ রাউন্ডে শিরোপার ফয়সালা
সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হোটেলে কাটিয়েছেন তারা। শেষ বিকেলে ফিরেছেন মাঠে? গায়ে সাদা জার্সি, মাথায় ক্যাপ, পায়ে কেডস পরে আবার মাঠে নেমেছিলেন। কেন? শিরোপা উদযাপনে।
রাইজিংবিডিকে সেই গল্প শোনালেন আকবর, ‘‘আমরা কালকে জয়ের পর বগুড়ায় থেকে গিয়েছিলাম। আমাদের টুর্নামেন্ট জেতার সুযোগ আছে বলে আমরা অপেক্ষায় ছিলাম। পুরো দলই আজ শিরোপার জন্য অপেক্ষা করছিল। এটা দারুণ। এরকমটা আগে হয়নি। আগে তো খেলা শেষেই চলে যেতাম।’’ - আকবর বলছিলেন আর হাসছিলেন।
আকবরদের শিরোপা জয়ের বাঁধা হয়ে ছিল দুই দল। ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগ। মঙ্গলবার সাত সকালেই সিলেটে ময়মনসিংহ বিভাগ হেরে যায় রাজশাহী বিভাগের কাছে। আকবরদের সামনে তখন কেবল সিলেটের বাঁধা। যদি রাজশাহীতে সিলেট বরিশালকে হারাতে পারে তাহলে তারা শিরোপা জিতবে। আকবররা হবে রানার্সআপ।
সকালের সেশনের পরপরই রংপুর বুঝে গিয়েছিল শিরোপা তাদের হতে চলছে। কেননা বরিশালের ওপেনার ইফতির সেঞ্চুরিতে তখন লিড তিনশ পেরিয়ে। শেষ দুই সেশনে সিলেট এই রান তাড়া করতে পারবে না ধরেই নেওয়া হচ্ছিল। সেভাবেই শুরু হয় আয়োজকদের প্রস্তুতি। রংপুরেরও অপেক্ষা ফুরানোর পালা।
বিকেল ৪টা ৬ মিনিটে সিলেট ও বরিশালের ম্যাচ ড্র হয়। সিলেট ২৮ পয়েন্ট নিয়ে রানার্সআপ। ৩১ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন রংপুর। রংপুর শিরোপা উল্লাস করে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিয়ে। রাজশাহীতে মুশফিকুর-জাকিরদের হাতে রানার্সআপ ট্রফি।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল