কর্তৃত্ববাদের সময়ে মানুষ কার্টুন আঁকতেও ভয় পেত: ইফতেখারুজ্জামান
Published: 10th, December 2025 GMT
গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে মানুষ কার্টুন আঁকতেও ভয় পেত বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেছেন, ‘কর্তৃত্ববাদী শাসন সব দিক থেকে, সব সম্ভাব্য উপায়ে, এমনকি কার্টুন এঁকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপরও ভীতিকর প্রভাব ফেলেছিল। ফলে তরুণেরা কার্টুনের মাধ্যমে মতপ্রকাশের অধিকার ব্যবহার করা থেকে বিরত ছিল।’
আজ বুধবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় টিআইবি আয়োজিত ‘দুর্নীতিবিরোধী কার্টুন প্রতিযোগিতা–২০২৫’–এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এ বছর চারটি ক্যাটাগরিতে মোট আটজন কার্টুনিস্টকে পুরস্কৃত করেছে টিআইবি।
অনুষ্ঠানে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতি মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং বাক্স্বাধীনতার অধিকারকে প্রভাবিত করেছিল। যে অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে জনগণ গিয়েছে, তা স্মৃতি থেকে মুছে ফেলা কঠিন হবে।
এ সময় টিআইবি আয়োজিত কার্টুন প্রতিযোগিতার উদাহরণ দেন ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, টিআইবি প্রতিবছরই দুর্নীতিবিরোধী কার্টুন আঁকার প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এই প্রতিযোগিতার জন্য প্রতিবছরই ৩৫০ থেকে ৪০০টি কার্টুন জমা পড়ত। কখনো কখনো এর চেয়ে বেশিও পড়ত। তবে ২০২৪ সালে, সেই সংখ্যা নেমে এসেছিল ২৪৭টিতে, যা এ যাবৎকালের সর্বনিম্ন। ছাত্রছাত্রী এবং তাঁদের পরিবার, তাঁদের স্কুলশিক্ষক বা কলেজশিক্ষকদের কাছ থেকে জানতে পেরেছিলাম যে তাঁরা ভয় পাচ্ছেন।
ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, শুধু তা–ই নয়, তিন বছরের বিরতির পর চারুকলা অনুষদে টিআইবি এই অনুষ্ঠান করতে পারছে। আগের সরকার ও শাসনব্যবস্থা এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছিল যে টিআইবি চারুকলায় প্রদর্শনী করতে পারেনি। এমনকি ব্যক্তিগত গ্যালারিতে আয়োজন করতে গেলেও গ্যালারিমালিককে ভয় দেখানো হয়েছিল।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইফত খ র জ জ ম ন ট আইব
এছাড়াও পড়ুন:
গণবিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ
সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের প্রভাষক লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন কয়েকজন ছাত্রী। তাদের অভিযোগ, ক্লাসে অশালীন কথা বলা এবং ফেসবুকে আপত্তিকর বার্তা পাঠাতেন ওই শিক্ষক।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) উপাচার্যের কাছে পৃথক লিখিত অভিযোগ করেন ছাত্রীরা।
আরো পড়ুন:
অবরোধ তুলে নেওয়ার খবর, তবে সড়কে আছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা
পাবিপ্রবির মানবিক অনুষদের ডিন হলেন হুমায়ূন কবীর
ভুক্তভোগী ছাত্রীদের পক্ষ থেকে করা অভিযোগ করা হয়েছে, প্রভাষক লিমন হোসেন বিভিন্নভাবে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করছেন। তিনি তার কক্ষে ছাত্রীদের ডেকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন। অনেক সময় তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশালীন বার্তা পাঠান। যেমন, তার স্ত্রী তাকে সুখী করতে পারেন না। তিনি যৌনতার ক্ষেত্রে অনেক একাকিত্বে ভোগেন। এছাড়াও অনেক আপত্তিকর কথা, যা প্রকাশ করার মতো নয়।
অপর একটি লিখিত অভিযোগ করা হয় আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। সেখানে কয়েকটি অভিযোগ করা হয়। বলা হয়, শিক্ষক লিমন হোসেন ধর্ষণে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের থানায় গিয়ে ছাড়ানোর চেষ্টা করেছেন। এছাড়া ক্লাসে পড়ানোর ছলে তিনি শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত বিষয় সকলের সামনে উপস্থাপন করে তাদের হেয় করেন।
অভিযোগ করা হয়, একজন শিক্ষক হিসেবে লিমন হোসেনের পড়ানোর পদ্ধতি কোনোভাবেই গবেষণা কেন্দ্রিক নয়। তিনি গলাদ্ধকরণ পদ্ধতিতে বিশ্বাস করেন। যা শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল মেধাকে বিনষ্ট করে। এছাড়া লিমন হোসেন স্বজনপ্রীতি নীতি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করেন, যা পরবর্তীতে বড় অপরাধের জন্ম দেয়।
বিগত দিনে ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত চক্রের সঙ্গে, এমনকি সম্প্রতি বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও প্রভাষক লিমন হোসেনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এবং প্রকাশ্যে তাদের মদদ দিয়েছেন বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) ক্যাম্পাসের একটি মিলনায়তনে শিক্ষার্থীরা লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিস্তারিত তুলে ধরেন। সেখানে তারা দ্রুত লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।
একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘‘উনি (লিমন হোসেন) মানুষের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আগ্রহী। যা আমাদের বিব্রত করে। এমনকি, নিজের ব্যক্তিগত জীবনের প্রেম-বিচ্ছেদের গল্পও বারবার বলে বিব্রত করতে থাকেন। কে কার সঙ্গে মিশবে, না মিশবে— সে ব্যাপারেও তিনি বারবার হস্তক্ষেপ করেন।’’
অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষক লিমন হোসেন বলেন, ‘‘অভিযোগের বিষয়ে আমি অবগত নই। আমি এ ধরনের কোনো কথা বলিনি। এ অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যে আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ তোলা হয়েছে।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের প্রধান ড. ওয়াহিদা জামান লস্কর বলেন, ‘‘উপাচার্যের কাছে দেওয়া অভিযোগের বিষয়ে আমি অবগত নই।’’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবুল হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/সাব্বির/বকুল