ডিজিটাল লেনদেন সেবা চালুর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনাপত্তিপত্র পেয়েছে বাংলালিংক। এর আগে মোবাইল অপারেটর রবিও একই ধরনের অনুমতি পেয়েছে। ফলে দুটি মোবাইল অপারেটর আর্থিক সেবা চালুর অনুমোদন পেল। এর আগে গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের সমাধান সার্ভিসেস লিমিটেডও এ ধরনের সেবার অনুমতি পেয়েছিল।

জানা গেছে, প্রতিষ্ঠান তিনটি মূলত পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) সেবার অনুমতি পেয়েছে। এসব সেবা চালু হলে পরবর্তী সময়ে তা মোবাইলে আর্থিক সেবায় (এমএফএস) রূপান্তরিত হতে পারবে। এ জন্য অনেকেই এই সেবায় আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

বাংলালিংক এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সবার জন্য ডিজিটাল লেনদেন ব্যবহারের সুযোগ তৈরিতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর প্ল্যাটফর্ম এবং আধুনিক ডিজিটাল সেবা কৌশল অনুসরণ করে বাংলালিংক প্রয়োজনীয় আর্থিক ও ডিজিটাল সেবা সরাসরি মানুষের হাতে পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, বৈশ্বিক ডিজিটাল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এবং বাংলালিংকের মূল কোম্পানি ভিয়ন এই অনুমোদনকে দেশের ডিজিটাল আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি এবং নগদবিহীন অর্থনীতির ভিত্তি শক্তিশালী করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করছে। ভিয়নের আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রযুক্তি সক্ষমতার সহায়তায় এই অগ্রগতি আরও সুদৃঢ় হয়েছে। এই উন্নয়নের ফলে দেশের বিপুলসংখ্যক গ্রাহক আরও নিরাপদ, দ্রুত এবং সহজ উপায়ে মোবাইল যন্ত্র থেকেই বিভিন্ন ডিজিটাল আর্থিক সেবা ব্যবহার করতে পারবেন। এই অনুমোদন সারা দেশে আধুনিক প্রজন্মের ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা চালুর পথও উন্মুক্ত করবে।

ডিজিটাল লেনদেনের মাধ্যমে গ্রাহকেরা তাৎক্ষণিক অর্থ পাঠানো, প্রবাসী আয় গ্রহণ, বিদ্যুৎ ও সরকারি বিল পরিশোধ, অনলাইন ক্রয়বিক্রয় ও দোকানদারকে অর্থ পরিশোধ, বেতন ও ভাতা বিতরণসহ সঞ্চয় ও বিমা কিস্তি পরিশোধের মতো বিভিন্ন নতুন আর্থিক সুবিধা পাবেন।

এই সেবার অন্যতম লক্ষ্য হলো ব্যাংকিং সুবিধাবঞ্চিত ও কম সেবাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠীকে আনুষ্ঠানিক আর্থিক ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসা। শক্তিশালী নিরাপত্তা কাঠামোতে নির্মিত এই প্ল্যাটফর্ম গ্রাহকদের জন্য নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য এবং নির্বিঘ্ন লেনদেন নিশ্চিত করবে।

বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইওহান বুসে বলেন, ‘বাংলালিংকের বিস্তৃত সেবাপ্রাপ্তির সুযোগ এবং ভিয়নের আন্তর্জাতিক সক্ষমতা মিলিয়ে আমরা দেশের জন্য একটি নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থা গড়ে তুলছি। এই অনুমোদন আমাদের বিশ্বাসকে আরও শক্তিশালী করে যে সহজ, নিরাপদ এবং সবার জন্য উন্মুক্ত আর্থিক সেবা মানুষের নাগালের মধ্যেই থাকা উচিত। মানুষের প্রয়োজনকে কেন্দ্র করে বাংলালিংক এমন উদ্যোগ অব্যাহত রাখবে, যা জীবনকে সহজ করে, সমাজকে আরও সক্ষম করে এবং বাংলাদেশকে ভবিষ্যৎমুখী ডিজিটাল অর্থনীতির পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড জ ট ল ল নদ ন আর থ ক স ব স ব র অন র অন ম র জন য ন র পদ

এছাড়াও পড়ুন:

সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেছেন ‘আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন’ পরিচালিত আবাসন প্রকল্পে থাকা শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বেসরকারি এই প্রকল্পকে ‘হল’ হিসেবে দেখিয়ে আবাসন বৃত্তি থেকে তাঁদের বঞ্চিত করছে, এমন অভিযোগে আজ বুধবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের ফটক অবরোধ করে অবস্থান নেন।

এর আগে দুপুর নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্য চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণ ঘুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। তাঁদের স্লোগানের মধ্যে ছিল: ‘আস–সুন্নাহে বৃত্তি দে, ভুজুংভাজুং ছেড়ে দে’, ‘এক দুই তিন চার, বৃত্তি আমার অধিকার’ এবং ‘আস–সুন্নাহে বৃত্তি দে, নইলে গদি ছেড়ে দে’।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি নীতিমালায় আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মেধাবী প্রকল্পকে ‘হল’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে তাঁরা আবাসন বৃত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, প্রকল্পটি বেসরকারি হওয়ায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব হল না হওয়ায় তাঁদের বৃত্তি থেকে বাদ দেওয়া যাবে না।

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাবিবুল বাশার সুমন বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জন্য কোনো হল নেই। আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশন নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের মেধাবী প্রজেক্ট নামের একটি প্রকল্প আমাদের জন্য করেছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যত কোনো হল নয়।’

শিক্ষার্থী সুমন আরও বলেন, ‘বৃত্তি নীতিমালায় সুকৌশলে আস–সুন্নাহ প্রজেক্টকে হল হিসেবে উপস্থাপন করে বৃত্তি থেকে আমাদের বাদ দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা এ পাঁয়তারাকে রুখে দিতে প্রতিবাদ করছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মেধাবী প্রকল্প থেকে যখন আগামী জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীরা বের হয়ে যাবে, তখন তাদের আশ্রয়স্থল কোথায়? আমাদের দাবি মানা না হলে আমরা আরও কঠিন আন্দোলন করব।’

শিক্ষার্থীরা প্রায় বিকেল চারটা পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ফটক অবরোধ করে থাকেন। পরে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পরিচালিত আবাসন প্রকল্পে ফিরে যান।

জানা যায়, আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পরিচালিত মেধাবী প্রকল্পের আওতায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩, ২০২৩-২৪ এবং ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থীকে আবাসন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। সেখানে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি দিয়ে থাকেন। এই প্রকল্পে থাকা–খাওয়ার ব্যবস্থার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নে বিভিন্ন প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ