প্রায় তিন ঘণ্টা পর সার্ক ফোয়ারা মোড় ছাড়লেন মুঠোফোন ব্যবসায়ীরা, যান চলাচল শুরু
Published: 10th, December 2025 GMT
প্রায় তিন ঘণ্টা অবরোধ করে রাখার পর রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সার্ক ফোয়ারা মোড় ছেড়েছেন বসুন্ধরা সিটিসহ আশপাশের এলাকার বিপণিবিতানের মুঠোফোন ব্যবসায়ীরা। রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে তাঁরা সড়ক ছেড়ে দেন। এরপর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) সংস্কার, একচেটিয়া সিন্ডিকেট প্রথা বিলোপ এবং মুঠোফোনের উন্মুক্ত আমদানির সুযোগ সৃষ্টির দাবিতে আজ বুধবার বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে সার্ক ফোয়ারা মোড় অবরোধ করেন মুঠোফোন ব্যবসায়ীরা। এ সময় তারাঁ টায়ার জ্বালিয়ে দাবির পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন। একটি গাড়ি ভাঙচুর করেন বলেও জানা যায়। একপর্যায়ে তাঁরা এক দফা দাবিতে স্লোগান দিতে শুরু করেন। তাঁরা ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের পদত্যাগ দাবি করেন।
অফিস ছুটির সময়ে নগরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়টি অবরোধ করায় কারওয়ান বাজার মোড় হয়ে চারপাশের রাস্তায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এর প্রভাব পড়ে অন্যান্য সড়কে। ঘরমুখী মানুষ পড়েন চরম ভোগান্তিতে।
এদিকে একই দাবিতে আজ সন্ধ্যা সোয়া ছয়টা থেকে রাত সোয়া আটটা পর্যন্ত প্রায় দুই ঘণ্টা রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন যমুনা ফিউচার পার্কের মুঠোফোন ব্যবসায়ীরা। এতে উত্তরা থেকে রামপুরা এবং রামপুরা থেকে উত্তরার দিকে চলাচলকারী যানবাহন থেমে ছিল। রাত সোয়া আটটার দিকে ব্যবসায়ীরা সড়ক ছেড়ে দিলে ওই সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে জানান ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাউল হক।
মুঠোফোন ব্যবসায়ীরা জানান, ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) সংস্কার, একচেটিয়া সিন্ডিকেট প্রথা বিলোপ, মুঠোফোনের উন্মুক্ত আমদানির সুযোগ সৃষ্টি এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের পদত্যাগের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান প্রথম আলোকে বলেন, ব্যবসায়ীদের বুঝিয়ে সার্ক ফোয়ারা মোড় থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ঠ ফ ন ব যবস য় র চল চল
এছাড়াও পড়ুন:
মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ২ দাবি
দেশের উৎপাদিত মোবাইল কারখানাগুলোর মালিকরা ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন। এনইআইআর বাস্তবায়ন হলে মোবাইল ফোন খাতে নিরাপত্তা ও বৈধতা নিশ্চিত হবে, সরকার প্রতি বছর হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব পাবে, দেশে বাড়বে বিদেশি বিনিয়োগ, তৈরি হবে নতুন কর্মসংস্থান।একই সঙ্গে সংগঠনটি মোবাইল হ্যান্ডসেট খাতের সুস্থ বিকাশের জন্য কারখানা ও আমদানিকারক পর্যায়ের ভারসাম্যপূর্ণ কর কাঠামো প্রণয়নেরও দাবি জানান।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সস্মেলনে এসব দাবি জানায় মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।
এ সময় সংগঠনের সভাপতি জাকারিয়া শহীদ, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বিপ্লব, নির্বাহী কমিটির সদস্য ইমাম উদ্দিন, রেজওয়ানুল হকসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জাকারিয়া শহীদ বলেন, “এনইআইআর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।বহু দেশেই এটি কার্যকর রয়েছে। বাংলাদেশে এ সিস্টেম চালু হলে অবৈধ, চোরাই, কপি বা রিফারবিশড ফোন বাজার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে।একই সঙ্গে বন্ধ হবে একই আইএমইআই নম্বর ব্যবহার করে ডজনখানেক ফোন চলার মতো নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি।”
তিনি বলেন, “বিটিআরসি জানিয়েছে আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে এনইআইআর কার্যকর হবে। তার আগে নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত সব মোবাইল (বৈধ–অবৈধ) স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হবে এবং সচল থাকবে। এরপর নতুনভাবে অনুমোদনহীন ফোন নেটওয়ার্কে কাজ করবে না।”
মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স এসোসিয়েশন লিখিত বক্তব্যে জানান, বাংলাদেশের মোবাইল শিল্প বর্তমানে ১৮টি উৎপাদনকারী কারখানার সমন্বয়ে শক্তিশালী একটি খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে ৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি-বিদেশি ও দেশি বিনিয়োগ রয়েছে। এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৫০ হাজার জনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
দেশের মাসিক উৎপাদন সক্ষমতা ১৫ লাখ স্মার্টফোন ও ২৫ লাখ ফিচার ফোন। যদিও গ্রে মার্কেটের চাপের কারণে এখনও ৩০-৪০ শতাংশ সক্ষমতা অব্যবহৃত রয়েছে। বর্তমানে মোবাইল ফোন বাজারের আকার প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। এই শিল্প দেশের ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি, প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি, নারী কর্মসংস্থান এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
সিন্ডিকেট নয়, এটি একটি প্রতিযোগিতামূলক বাজারের কথা উল্লেখ করে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স এসোসিয়েশনের নেতারা জানান, মোবাইল উৎপাদন শিল্পে সিন্ডিকেট থাকার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বর্তমানে ১৮টি কোম্পানি উৎপাদন লাইসেন্সধারী। যারা মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বাজারে কাজ করছে। তাই একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ বা সিন্ডিকেশন এর অভিযোগ বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
এনইআইআর সিস্টেম না থাকা অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও শিল্পের জন্য বড় হুমকি বলে জানিয়েছেন মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটি ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।
ঢাকা/নাজমুল/এসবি