যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের বিভিন্ন সংস্থা সচলে পঞ্চমবারের মতো ব্যয় সংক্রান্ত প্রস্তাব পাস করতে ব্যর্থ হয়েছেন সিনেটররা। এতে দেশটির চলমান শাটডাউন আরো দীর্ঘায়িত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে। 

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

আরো পড়ুন:

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে প্রথম দফার আলোচনা ‘ইতিবাচক’

দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে ‘বিশেষ অস্ত্র’ মোতায়েন করল উত্তর কোরিয়া

প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল সোমবার টানা পঞ্চমবারের মতো সরকারি অর্থায়ন বিল পাসে ব্যর্থ হয়েছে মার্কিন সিনেট। ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান উভয়ের পৃথক প্রস্তাবই উচ্চকক্ষে প্রয়োজনীয় ৬০ ভোট নিশ্চিত করতে পারেনি। ফলে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কতদিন লাগবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। 

এই স্থবিরতার মূল কারণ হলো স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে দ্বন্দ্ব। ডেমোক্র্যাটরা চায় নিম্ন আয়ের মানুষদের স্বাস্থ্যবীমার ভর্তুকি অব্যাহত এবং মেডিকেড প্রোগ্রামের কাটছাঁট বাতিল করা। অন্যদিকে রিপাবলিকানদের অভিযোগ, ডেমোক্র্যাটরা অবৈধ অভিবাসীদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য সরকারকে শাটডাউনে ফেলেছে। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রবিবার সতর্ক করে বলেছিলেন, আবারো ভোট ব্যর্থ হলে সরকারি কর্মীদের ছাঁটাইয়ের পথেই হাঁটতে হবে। পাচঁদিন আগে সরকারি সংস্থাগুলোর তহবিল শেষ হয়ে যাওয়ায় হাজারে ফেডারেল কর্মচারী বেতন ছাড়াই কাজ করতে বা বাধ্যতামূলক ছুটিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, তিনি এই অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে এবং সম্ভবত ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে আগ্রহী।

সোমবার ডেমোক্র্যাটদের প্রস্তাব ৪৫-৫০ ভোটে এবং রিপাবলিকানদের প্রস্তাব ৫২-৪২ ভোটে প্রত্যাখ্যাত হয়। ভোটের পরপরই ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে ডেমোক্র্যাটদের দায়ী করে বলেন, আমি ডেমোক্র্যাটদের ব্যর্থ স্বাস্থ্যনীতি নিয়েও কাজ করতে প্রস্তুত, কিন্তু আগে তারা সরকার চালু করুক।

তবে ডেমোক্র্যাটরা তাদের দাবিতে অটল রয়েছেন। তারা বলছেন, রিপাবলিকানদের প্রস্তাব নিম্ন আয়ের মানুষের চিকিৎসা সুবিধা কমিয়ে দেবে। তারা চান নতুন বাজেট বিলের মধ্যে স্বাস্থ্যবিমা ভর্তুকি অব্যাহত রাখা ও মেডিকেড স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে ট্রাম্প প্রশাসনের কাটছাঁট প্রত্যাহার করা হোক। রিপাবলিকানরা অভিযোগ করছেন, ডেমোক্র্যাটরা অবৈধ অভিবাসীদের চিকিৎসা সুবিধা দেওয়ার জন্যই সরকারের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। তবে ডেমোক্র্যাটরা এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

সোমবার ওভাল অফিসে এক বক্তব্যে ট্রাম্প জানান, তিনি ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বের সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা ইস্যুতে আলোচনা চালাচ্ছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে আমাদের এখন একটি আলোচনা চলছে, যা খুব ভালো কিছুর দিকে নিয়ে যেতে পারে। আমি স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে ভালো কিছুর কথা বলছি।” 

কিন্তু এরপর সিনেট ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ এক পোস্টে বলেন, “এটা সত্য নয়।”

গত বুধবার শাটডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে হোয়াইট হাউজ সতর্ক করে বলে আসছে, সরকারি অচলাবস্থা দীর্ঘায়িত হলে স্থায়ীভাবে কর্মী ছাঁটাই হতে পারে।  

হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সোমবার বলেন, “আমরা কাউকে চাকরি হারাতে দেখতে চাই না, কিন্তু সরকার বন্ধ থাকলে তা অনিবার্য।”

রবিবার এনবিসির মিট দ্য প্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্র্যাট  নেতা হাকিম জেফ্রিস এবং রিপাবলিকান স্পিকার মাইক জনসন, উভয়েই অব্যাহত অচলাবস্থার জন্য একে অপরের দলকে দায়ী করেন।

জেফ্রিস ডেমোক্র্যাটদের উদ্দেশ্য নিয়ে রিপাবলিকানদের মিথ্যাচার করার অভিযোগ আনেন। আর মাইক জনসন দাবি করেন, ডেমোক্র্যাটদের দাবি গুরুত্বপূর্ণ নয়। তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এটি করছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র র প বল ক ন প রস ত ব স মব র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন অবসানে অনিশ্চয়তা

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের বিভিন্ন সংস্থা সচলে পঞ্চমবারের মতো ব্যয় সংক্রান্ত প্রস্তাব পাস করতে ব্যর্থ হয়েছেন সিনেটররা। এতে দেশটির চলমান শাটডাউন আরো দীর্ঘায়িত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে। 

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

আরো পড়ুন:

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে প্রথম দফার আলোচনা ‘ইতিবাচক’

দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে ‘বিশেষ অস্ত্র’ মোতায়েন করল উত্তর কোরিয়া

প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল সোমবার টানা পঞ্চমবারের মতো সরকারি অর্থায়ন বিল পাসে ব্যর্থ হয়েছে মার্কিন সিনেট। ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান উভয়ের পৃথক প্রস্তাবই উচ্চকক্ষে প্রয়োজনীয় ৬০ ভোট নিশ্চিত করতে পারেনি। ফলে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কতদিন লাগবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। 

এই স্থবিরতার মূল কারণ হলো স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে দ্বন্দ্ব। ডেমোক্র্যাটরা চায় নিম্ন আয়ের মানুষদের স্বাস্থ্যবীমার ভর্তুকি অব্যাহত এবং মেডিকেড প্রোগ্রামের কাটছাঁট বাতিল করা। অন্যদিকে রিপাবলিকানদের অভিযোগ, ডেমোক্র্যাটরা অবৈধ অভিবাসীদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য সরকারকে শাটডাউনে ফেলেছে। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রবিবার সতর্ক করে বলেছিলেন, আবারো ভোট ব্যর্থ হলে সরকারি কর্মীদের ছাঁটাইয়ের পথেই হাঁটতে হবে। পাচঁদিন আগে সরকারি সংস্থাগুলোর তহবিল শেষ হয়ে যাওয়ায় হাজারে ফেডারেল কর্মচারী বেতন ছাড়াই কাজ করতে বা বাধ্যতামূলক ছুটিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, তিনি এই অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে এবং সম্ভবত ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে আগ্রহী।

সোমবার ডেমোক্র্যাটদের প্রস্তাব ৪৫-৫০ ভোটে এবং রিপাবলিকানদের প্রস্তাব ৫২-৪২ ভোটে প্রত্যাখ্যাত হয়। ভোটের পরপরই ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে ডেমোক্র্যাটদের দায়ী করে বলেন, আমি ডেমোক্র্যাটদের ব্যর্থ স্বাস্থ্যনীতি নিয়েও কাজ করতে প্রস্তুত, কিন্তু আগে তারা সরকার চালু করুক।

তবে ডেমোক্র্যাটরা তাদের দাবিতে অটল রয়েছেন। তারা বলছেন, রিপাবলিকানদের প্রস্তাব নিম্ন আয়ের মানুষের চিকিৎসা সুবিধা কমিয়ে দেবে। তারা চান নতুন বাজেট বিলের মধ্যে স্বাস্থ্যবিমা ভর্তুকি অব্যাহত রাখা ও মেডিকেড স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে ট্রাম্প প্রশাসনের কাটছাঁট প্রত্যাহার করা হোক। রিপাবলিকানরা অভিযোগ করছেন, ডেমোক্র্যাটরা অবৈধ অভিবাসীদের চিকিৎসা সুবিধা দেওয়ার জন্যই সরকারের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। তবে ডেমোক্র্যাটরা এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

সোমবার ওভাল অফিসে এক বক্তব্যে ট্রাম্প জানান, তিনি ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বের সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা ইস্যুতে আলোচনা চালাচ্ছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে আমাদের এখন একটি আলোচনা চলছে, যা খুব ভালো কিছুর দিকে নিয়ে যেতে পারে। আমি স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে ভালো কিছুর কথা বলছি।” 

কিন্তু এরপর সিনেট ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ এক পোস্টে বলেন, “এটা সত্য নয়।”

গত বুধবার শাটডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে হোয়াইট হাউজ সতর্ক করে বলে আসছে, সরকারি অচলাবস্থা দীর্ঘায়িত হলে স্থায়ীভাবে কর্মী ছাঁটাই হতে পারে।  

হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সোমবার বলেন, “আমরা কাউকে চাকরি হারাতে দেখতে চাই না, কিন্তু সরকার বন্ধ থাকলে তা অনিবার্য।”

রবিবার এনবিসির মিট দ্য প্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্র্যাট  নেতা হাকিম জেফ্রিস এবং রিপাবলিকান স্পিকার মাইক জনসন, উভয়েই অব্যাহত অচলাবস্থার জন্য একে অপরের দলকে দায়ী করেন।

জেফ্রিস ডেমোক্র্যাটদের উদ্দেশ্য নিয়ে রিপাবলিকানদের মিথ্যাচার করার অভিযোগ আনেন। আর মাইক জনসন দাবি করেন, ডেমোক্র্যাটদের দাবি গুরুত্বপূর্ণ নয়। তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এটি করছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ