সন্ত্রাসী হুমকিতে ঘরছাড়া পরিবারের সন্তানদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ, বাঁচানোর আকুতি
Published: 17th, October 2025 GMT
কক্সবাজারের রামু ফতেখারকুল নাথপাড়ার চিলভী বড়ুয়া ওরফে ববি বড়ুয়া নামের এক নারী তার পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন।
তার অভিযোগ, এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী জিটু বড়ুয়া, রুবেল বড়ুয়া, শিবু বড়ুয়া এবং নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ক্যাডার রিজন বড়ুয়া তার পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করছেন।
আরো পড়ুন:
‘অবৈধ’ সম্পদের খোঁজ: সাবের হোসেন ও তার স্ত্রীর নামে মামলা করছে দুদক
গুমে সেনাসদস্যদের সংশ্লিষ্টতা থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: সেনাসদর
এ অবস্থায় নিজের ও পরিবারের সদস্যদের প্রাণের নিরাপত্তা চেয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে কক্সবাজারে সংবাদ সম্মেলন করেন ববি বড়ুয়া।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ববি বড়ুয়া বলেন, “আমি একজন অসহায় স্ত্রী, নির্যাতিত মা ও নিরাপত্তাহীন নারী। আমার স্বামী খোকন বড়ুয়া ফতেখারকুল ইউনিয়নের নাথপাড়ায় তেমহনী বাজারে একটি ছোট মুদি দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী চক্র জিটু বড়ুয়া, রুবেল বড়ুয়া, শিবু বড়ুয়া ও ছাত্রলীগ ক্যাডার রিজন বড়ুয়া আমাদের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমরা দিতে রাজি না হওয়ায় তারা আমাদের ওপর নির্যাতন শুরু করে।”
তিনি বলেন, তার স্বামী বিষয়টি আদালতে তুলে ধরলে অভিযুক্তরা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। গত ২৪ জুন চারজন মিলে তাদের দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় ২৬ জুন মামলা করলে উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই মিথ্যা মামলা ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।
জীবন নিয়ে পালিয়ে থাকার কষ্টকর অবস্থার বর্ণনা দিতে গিয়ে বিবি বড়ুয়া বলেন, “তারা প্রকাশ্যে বলছে, ‘তোমাদের মেরে ফেলব, লাশ গুম করে দেব। এমনকি তারা আমার সন্তানদের স্কুলে যাওয়ার পথে অপহরণ ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন। এতে আমার দুই মেয়ে ও দুই পুত্র বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। আমরা বর্তমানে অজ্ঞাত স্থানে মানবেতর জীবনযাপন করছি।”
তিনি আরো বলেন, “অভিযুক্ত রিজন বড়ুয়া নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে আমাদের মানহানি করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছেন। অথচ তিনি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সক্রিয় ক্যাডার ও এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী।”
সংবাদ সম্মেলনে বিবি বড়ুয়া জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তার পরিবার ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার, তার স্বামীর দোকানটি পুনরায় খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন।
ঢাকা/তারেকুর/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অপর ধ সন ত র স পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
রায়েদ সাদকে হত্যা যুদ্ধবিরতির স্পষ্ট লঙ্ঘন: হামাস
গাজা নগরীতে ইসরায়েলের হামলায় দলের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার রায়েদ সাদ নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে গতকাল শনিবার হামাসের এই নেতাকে হত্যার দাবি করেছিল।
শনিবারের ওই হামলায় ৫ জন নিহত এবং অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
হামাস এ হামলার বিষয়ে বিবৃতি দিলেও প্রথমে রায়েদ সাদ নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। তখন হামাস বলেছিল, গাজা নগরের বাইরে একটি বেসামরিক গাড়িতে হামলা হয়েছে। এই হামলা অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
পরে আজ রোববার এক ভিডিও বার্তায় হামাসের গাজাপ্রধান খলিল আল-হাইয়া বলেন, গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত পাঁচজনের মধ্যে রায়েদ সাদও রয়েছেন।
খলিল আল-হাইয়া বলেন, ‘ইসরায়েল বারবার যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে যাচ্ছে, যার সর্বশেষ সংযোজন হামাস কমান্ডারকে (রায়েদ সাদ) হত্যা। গতকালই এ ঘটনা ঘটেছে। এই প্রেক্ষাপটে আমরা সব মধ্যস্থতাকারী এবং বিশেষ করে চুক্তির প্রধান নিশ্চয়তাদাতা হিসেবে মার্কিন প্রশাসন ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আহ্বান জানাই, তাঁরা যেন ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্মান করতে ও তা মেনে চলতে বাধ্য করেন।’
রায়েদ সাদ হত্যাকাণ্ড অক্টোবরে গাজায় একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর হামাসের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতাকে হত্যার প্রথম ঘটনা।এর আগে টেলিগ্রামে এক পোস্টে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছিল, ওই কমান্ডার (রায়েদ সাদ) হামাসের সক্ষমতা পুনর্গঠনে কাজ করছিলেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েলে হামাসের হামলা পরিকল্পনাকারীদের একজন ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুনজ্যেষ্ঠ হামাস নেতা রায়েদ সাদকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের১৭ ঘণ্টা আগেরায়েদ সাদ হত্যাকাণ্ড অক্টোবরে গাজায় একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর হামাসের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতাকে হত্যার প্রথম ঘটনা।
একজন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, রায়েদ সাদকে লক্ষ্য করেই এ হামলা চালানো হয়েছিল। তিনি রায়েদ সাদকে হামাসের অস্ত্র তৈরি শাখার প্রধান বলে দাবি করেন।
হামাস সূত্র রায়েদ সাদকে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসাম ব্রিগেডের সেকেন্ড ইন কমান্ড তথা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্মকর্তা বলে জানিয়েছে। এই সূত্রগুলো বলেছে, সাদ আগে হামাসের গাজা সিটি ব্যাটালিয়নের প্রধান ছিলেন। হামাসের সবচেয়ে বড় ও অস্ত্রসজ্জিত ব্যাটালিয়নের একটি এটি।
অক্টোবরে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও গাজায় ইসরায়েলের হামলা থামেনি। অক্টোবরে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ইসরায়েলের প্রায় ৮০০ বার গাজায় হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৩৮৬ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে
আরও পড়ুনগাজার ‘হলুদ রেখা’ থেকে সরবে না সেনা, এটিই নতুন সীমান্ত: ইসরায়েলি বাহিনীর প্রধান০৯ ডিসেম্বর ২০২৫