সাড়ে ৩১ ঘণ্টায় তিনবার ভূমিকম্প
Published: 22nd, November 2025 GMT
দেশে গত সাড়ে ৩১ ঘণ্টায় তিনবার ভূমিকম্প হয়েছে। এর মধ্যে আজ শনিবার সকাল ও সন্ধ্যায় দুইবার ভূকম্পন অনুভূত হয়। এর আগে গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা।
শুক্রবারের ভূমিকম্প সারা দেশেই অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের সময় অনেকেই আতঙ্কে ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসেন। এতে শিশুসহ ১০ জন নিহত ও ছয় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি—পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে নরসিংদীতে। ঢাকায় চার ও নারায়ণগঞ্জে একজন মারা যান। ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে অনেকেই ভবন থেকে লাফিয়ে পড়েন। এ ছাড়া কিছু ভবন হেলে পড়ে ও ফাটল দেখা দেয়।
সর্বশেষ আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে ঢাকা ও আশপাশের জেলায় ভূকম্পন অনুভূত হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্যমতে, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩। উৎপত্তিস্থল নরসিংদী থেকে ১১ কিলোমিটার পশ্চিমে। এর উৎপত্তি ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে।
তবে ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৭।
এর আগে আজ সকালে নরসিংদীতেই আরও একটি মৃদু ভূমিকম্প হয়। জেলার পলাশ উপজেলায় সকাল ১০টা ৩৬ মিনিট ১২ সেকেন্ডে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৩।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ ম কম প র
এছাড়াও পড়ুন:
শক্তিশালী কম্পন অনুভব করেছেন ঢাকার ১ কোটির বেশি মানুষ: ইউএসজিএস
ভূমিকম্পের তীব্র ঝাঁকুনিতে কাঁপল ঢাকা শহর। এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে নরসিংদীর মাধবদী উপজেলায়। ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছে ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলোতেও।
ভূমিকম্পের প্রভাবে বিভিন্ন স্থানে দেয়াল ধসে পড়েছে। কোনো ভবনের রেলিং ও অংশবিশেষ ভেঙে পড়তে দেখা গেছে। অনেকেই ভয় পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে অন্তত ১০ জন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে নরসিংদীতে ৫ জন, ঢাকায় ৪ জন ও নারায়ণগঞ্জে ১ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ছয় শতাধিক মানুষ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ডে নরসিংদীর মাধবদী উপজেলায় এ ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়। রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭। তবে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস বলছে, এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫। ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে এটার উৎপত্তি।
৫ দশমিক ৭ মাত্রার মাঝারি এ ভূমিকম্পকে স্মরণকালের মধ্যে কম্পনের তীব্রতার দিক থেকে নজিরবিহীন বলছেন ভূমিকম্পবিশেষজ্ঞরা।
ইউএসজিএস বলছে, বাংলাদেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ভূমিকম্পপ্রবণ হলেও কেন্দ্রীয় অঞ্চল তুলনামূলকভাবে শান্ত থাকে। ১৯৫০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ঢাকার ২৫০ কিলোমিটারের মধ্যে ৫ দশমিক ৫ বা তার বেশি মাত্রার ১৪টি ভূমিকম্প হয়েছে—এর মধ্যে দুটি ছিল ৬ মাত্রার। আর গতকাল নরসিংদীর মাধবদীর ভূমিকম্পটি ছিল ঢাকা থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে।
এ ভূমিকম্পের কম্পনের তীব্রতা কত মানুষ অনুভব করেছেন, সেটার একটা অনুমিত হিসাব দিয়েছে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস। ভূমিকম্পের আড়াই ঘণ্টা পর সংস্থাটি বলেছে, এ ভূমিকম্পে ৭ কোটির বেশি মানুষ মৃদু ভূকম্পন অনুভব করেছেন। এ ছাড়া হালকা ঝাঁকুনি পেয়েছেন আরও প্রায় পৌনে ৭ কোটি মানুষ।ভূমিকম্পটির তীব্রতা এত বেশি কেন জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও ভূমিকম্পবিশেষজ্ঞ মেহেদি আহমেদ আনসারী প্রথম আলোকে বলেন, এ ভূমিকম্প ঢাকার খুব কাছে হয়েছে। এর আগে এখানে ৪ মাত্রার বেশি ভূমিকম্প হয়নি।
ভূমিকম্পের সময় ভয়ে শয্যা থেকে তুলে অসুস্থ শিশুকে কোলে জড়িয়ে আছেন মা। বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট, ঢাকা; ২১ নভেম্বর ২০২৫