শীতের আগেই চলনবিলে অতিথি পাখিতে ভরপুর
Published: 21st, October 2025 GMT
শীতের আগেই সিরাজগঞ্জের চলনবিলের নদী-নালা, খাল-বিল, জলাশয় ও পুকুরে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির আগমন ঘটছে। জলবায়ুর বৈশ্বিক পরিবর্তনের পাশাপাশি নিরাপদ আবাস ও খাদ্যের প্রাচুর্য থাকায় চলনবিলের বিভিন্ন এলাকায় আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি। পাখির অভয়ারণ্য নিশ্চিত করতে কাজ করছেন প্রশাসন।
স্থানীয়রা জানান, শীত আসলেই উত্তরাঞ্চলের মৎস্যভাণ্ডার খ্যাত চলনবিলের তাড়াশ উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তরে অতিথি পাখির আগমন ঘটে। তবে এবার শীতের আগেই উপজেলার বস্তুল, উলিপুর, পঁওতা, সোলাপাড়া, দিঘীসগুনা, কুন্দইল, সগুনা, লালুয়া মাঝিরা, মালশিনসহ ২০ থেকে ২৫টি গ্রামে নানা ধরনের অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে।
পাখির কিচিরমিচির শব্দে এলাকার পরিবেশ ধারণ করেছে অন্য রূপে। বিভিন্ন প্রজাতির পাখির মধ্যে রয়েছে বালিহাঁস, নীলশির, শামুকখোল ত্রিশূল বক, রাতচরা, কোড়া, লালশির, বড় সরালি, ছোট সরালিসহ অনেক পাখি।
এলাকার গাছে গাছে বাসা বেঁধেছে পাখিগুলো। মাঠজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ডাহুক, গাঙচিল, বক, ছোট পানকৌড়ি, বড় পানকৌড়ি, চখাচখি, কাদাখোঁচা, মাছরাঙাসহ নাম না জানা পাখি।
এক সময় চলনবিলে পাখি শিকারির উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বর্তমানে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় শিকারির সংখ্যা কমে আসায় দিন দিনই এ অঞ্চলে অতিথি পাখির উপস্থিতি বাড়ছে।
তাড়াশের উলিপুর গ্রামের স্কুল শিক্ষক বাবুল আকতার বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর চলনবিলে বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার বৈচিত্র্যময় পাখির আনাগোনা বেড়ে গেছে। খাদ্যের সহজলভ্যতাসহ নানা কারণে শীত আসার আগেই চলনবিলে পাখির সংখ্যা বাড়ছে। যেটা কয়েক বছর আগে দেখা যায়নি। বিস্তীর্ণ চলনবিলের নদী, খালবিল, জলাশয়, ধানের ক্ষেত, পুকুর ও ডোবায় পাখির ঝাঁকের হাঁকডাক, ওড়াউড়ির দৃশ্যসহ কিচিরমিচির শব্দে এ অঞ্চলের মানুষের মনোরম পরিবেশ অন্য রূপ নিয়েছে।”
চলনবিল রক্ষা আন্দোলন কমিটির তাড়াশ উপজেলা শাখার আহব্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রাজু বলেন, “পাখি শিকার করা দণ্ডনীয় যে অপরাধ, তা নিয়ে শিকারি বা ক্রেতাদের মধ্যে বিন্দুমাত্র ভীতি নাই। চলনবিলের পাখি বাঁচাতে আইন প্রয়োগের পাশাপশি লোকজনের মধ্যে ব্যাপক হারে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে হবে। তাহলে এই অঞ্চল থেকে পাখি শিকার বন্ধ হবে ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা পাবে।”
তাড়াশ উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, “শীতের আমেজ শুরু হওয়ায় বিভিন্ন জাতের পাখি আসছে। এই পাখিগুলো রাতের আধারে অসাধু কিছু শিকারি বেশিরভাগ শিকার করছে। এই বিশাল চলনবিলের মধ্যে তাদের খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব। তবে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে অসাধু পাখি শিকারিদের খোঁজ-খবর নেওয়ার চেষ্টা চলছে।”
চলনবিলে পাখির আগমন বৃদ্ধির সম্পর্কে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড.
তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান বলেন, “মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে সারাদেশেই অতিথি পাখির আগমন ঘটবে। একই সঙ্গে পাখি শিকারিদের অবস্থান জানা গেলে বন্যপ্রাণি (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করা হবে। প্রয়োজনে যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে পাখি শিকারিদের আইনের আওতায় আনা হবে।”
ঢাকা/অদিত্য/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত ড় শ উপজ ল প খ র আগমন চলনব ল র র আগ ই
এছাড়াও পড়ুন:
না’গঞ্জবাসীকে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানিয়েছে পূজা পরিষদ
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শ্যামা মায়ের পূজা বা দীপাবলি উৎসব উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
সংগঠনের সভাপতি শংকর কুমার দে এবং সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় এই শুভেচ্ছা জানান।
শুভেচ্ছা বার্তায় উল্লেখ করা হয়, "শ্রী শ্রী শ্যামা মায়ের পূজা ২০২৫ ইং" বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের পক্ষ থেকে সবাইকে শ্যামা পূজার শুভেচ্ছা। শুভ দীপাবলীর মঙ্গলঘট ও প্রতিমা দর্শন।
সোমবার থেকে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শ্রীশ্রী শ্যামা মায়ের পূজা। হেমন্তের আগমনে শিশির সিক্ত সন্ধ্যায় ঘরে ঘরে জ্বলে উঠবে শুভ দীপাবলীর মঙ্গল প্রদীপ। অমাবস্যার নিশীথে অপরুপ সাজে সাজবে শহর -নগর-গ্রাম সর্বত্র। মনে করিয়ে দেয় শ্রীশ্রী শ্যামা মায়ের আগমনী বার্তা।
মা মঙ্গলরুপী ধরনীতে শান্তির বার্তা নিয়ে আসেন এবং ভক্তের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন। এই বিশ্বাস সনাতনীরা লালন করেন যুগযুগ ধরে। আমরা সকলেই প্রার্থনা করি মা সবার মঙ্গল করুক।