বাংলাদেশে রাজনীতি করবে বাংলাদেশপন্থিরা: ডাকসু ভিপি
Published: 25th, October 2025 GMT
বাংলাদেশপন্থি যারা আছে, তারাই বাংলাদেশে রাজনীতি করবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি আবু সাদিক কায়েম।
তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশপন্থি যারা আছে, তারাই বাংলাদেশে রাজনীতি করবে। এর বাইরে যারা ফ্যাসিবাদী কায়েম করেছে, গুম খুন করেছে তাদের রাজনীতি করার কোন অধিকার নাই। একইসঙ্গে গুম, খুন, গণহত্যা, শিশুহত্যার সঙ্গে জড়িত সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের যারা ছিল সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। সব হত্যাকারী জেনারেলদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। এরাই গত ১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে এসব কাজে সহযোগিতা করেছে।”
আরো পড়ুন:
রাবিতে বিচারপতিদের মিলনমেলা
জবি শিক্ষার্থীদের প্রযোজনায় মঞ্চস্থ হবে ‘ডিজায়ার আন্ডার দ্য এলমস’
শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ মুজিবুর রহমান হল অডিটরিয়ামে ‘আয়না ঘরের সাক্ষী, গুম জীবনের আট বছর’ নামক গ্ৰন্থের প্রকাশনা উৎসবে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই। তাদের যেখানেই পাওয়া যাবে, ধরে থানায় দিতে হবে এবং বিচারের আওতায় আনতে হবে । জার্মানিতে যেভাবে নাতসি বাহিনীকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, ইতালিতে যেভাবে মুসলিনীকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, একইভাবে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, হাসিনা ও তার দোসরদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নাই।”
তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদবিরোধী অনেক আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে। এই ফ্যাসিবাদীবিরোধী আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের বিভিন্ন ফ্রেমিং করে গুম করা হয়েছে। জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আমার গুমের শিকার আরমান ভাইসহ অনেককে ফিরে পেয়েছি। কিন্তু অনেকেই খবর এখনো পাইনি।”
ডাকসু ভিপি বলেন, “আজ গুমের ঘটনার ওপর অনেক ডকুমেন্টারি তৈরি করছে। কিন্তু আমরা দেখছি খুনি হাসিনা ও তার দোসররা এটাকে সাজানো নাটক বলছে। যে খুনি হাসিনা গত ১৬ বছরে বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে, জুলাই অভ্যুত্থানের ২ হাজার ভাই-বোনদের শহীদ করেছে, ৪০ হাজার ভাইবোনদের পঙ্গু করেছে- এখন পর্যন্ত তার কোনো অনুশোচনা নেই।”
সাদিক কায়েম বলেন, “আজ দেখতে পাচ্ছি সেনাবাহিনীর মধ্যে যারা কিলার জেনারেল রয়েছে, তাদের এসি প্রিজন ভ্যানে করে আনা হচ্ছে। যেখানে রাখা হচ্ছে, সেখানেও এসির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এটা গোটা জাতির জন্য লজ্জার। জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা খুনি জেনারেলদের এই অবস্থায় দেখতে চাই না। তারা বাংলাদেশের যে কারাগার রয়েছে, সেখানেই থাকবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের যে আইন আছে, সেই আইনে তাদের বিচার হবে।”
সাদিক কায়েম আরো বলেন, “কিলার জেনারেলদের দায় মুক্তি দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। যারাই এদের দায় মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করবে, বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট হাসিনার যে অবস্থা হয়েছিল তার চেয়ে খারাপ পরিণতি আপনাদের হবে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, “চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের ৩৬ দিন বাংলাদেশকে বদলে দিয়েছে। ফ্যাসিবাদীদের অবসান হয়েছে। বাংলাদেশ আজ নতুন অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য অপরাধীদের বিচারের চেষ্টা চলছে। বিচার প্রক্রিয়া শুরুও হয়েছে। অন্যায়ের অবসান ঘটবে। জুলাই সনদের ঘোষণার মাধ্যমে বাংলাদেশ নতুন বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে এই সংগ্ৰাম চলতেই থাকবে।”
তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদ পরাজিত হলেও বারবার ফিরে আসার চেষ্টা করে। আমারে যেন সবাই একত্রিত হয়ে দল মত নির্বিশেষে ফ্যাসিবাদ প্রতিহত করার কাজ জারি রাখতে পারি।”
‘মায়ের ডাক’ এর সংগঠক সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, “এই বইয়ের প্রতিটি লাইনে যে কথা আছে, এটাকে আমরা বুকে ধারণ করি। শুধু ভিন্নমতের জন্য আওয়ামী ফ্যাসিস্টের সময় অনেককে গুম করা হয়েছে আবার কাউকে বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা শুধু তাদের তুলে নেওয়ার কাহিনী জানি। কিন্তু তাদের গুম করে কিভাবে অত্যাচার করা হয়েছে, তার সুষ্ঠু প্রমাণ এই আয়না ঘরের সাক্ষী বইটি।”
তিনি বলেন, “প্রত্যেকটি গুমের ঘটনার বিচার করতে হবে। আমরা বিশ্ববাসীকে জানাতে চাই, কেবল মতের পার্থক্য থাকার জন্য তাদের সঙ্গে কী ধরণের অত্যাচার করা হয়েছে। আমরা একসঙ্গে থাকলে এই বিচার নিশ্চিত করতে পারব।”
ব্যারিস্টার মীর আহমাদ বিন কাসেম আরমান বলেন, “আমাদের হতাশ হলে চলবে না। আমি আবারো এখনো আশা দেখি এমন এক বাংলাদেশের, যেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না। সবাই এক হয়ে বাংলাদেশেকে বিনির্মাণ করব। এমন দেন গঠন করতে হবে যেখানে সংবিধান অনুযায়ী বিচার করা হয়ে। সবাই সঙ্গে থাকলে স্বপ্নের বাংলাদেশ গঠন করতে পারব।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর র ক র জন য চ র কর র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ইবি প্রেসক্লাবের সভাপতি আবির, সম্পাদক নাজমুল
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে সভাপতি হিসেবে আল ফিকহ অ্যান্ড ল’ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবির হোসেন (দৈনিক যুগান্তর) এবং সাধারণ সম্পাদক চারুকলা বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হুসাইন (ডিবিসি নিউজ) নির্বাচিত হয়েছেন।
আরো পড়ুন:
ঐক্যের মাধ্যমে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই: ফখরুল
সাতক্ষীরায় সাংবাদিকের ওপর জামায়াত নেতাকর্মীদের হামলা
শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে অবস্থিত প্রেস কর্নারে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সংগঠনটির সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তোতা। নির্বাচন কমিশন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সংগঠনটির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. আলতাফ হোসেন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. কানন আজিজ।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, সহ-সভাপতি নুর আলম (নয়া শতাব্দী), যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাইফ ইব্রাহিম (সমকাল), দপ্তর সম্পাদক জিসান নজরুল (সময়ের আলো), কোষাধ্যক্ষ খাদেমুল ইসলাম ফরহাদ (সারাবাংলা), প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহিন রাজা (সংবাদ), সাহিত্য ও সাংস্কতিক সম্পাদক আহমাদ গালিব (ডেইলি মেসেঞ্জার), ক্রীড়া সম্পাদক মানিক হোসেন (আলোকিত বাংলাদেশ)।
এছাড়াও কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে রয়েছেন মুনজুরুল ইসলাম নাহিদ (কালের কন্ঠ), আজাহারুল ইসলাম (জনকন্ঠ), আরিফ বিল্লাহ্ (দৈনিক শিক্ষা) ও ইরফান উল্লাহ (জাগো নিউজ)
নির্বাচন পরবর্তী দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, ইউট্যাব ইবি শাখার সভাপতি অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হোসেন প্রমুখ।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়ন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উপাচার্য নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আশা করি, তাদের দৃষ্টি শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭৫ একরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করার যোগ্যতা তারা অর্জন করবে।”
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, “তারা তথ্যানুসন্ধানমূলক ও গঠনমূলক সাংবাদিকতার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ইতিবাচক দিক ফুটিয়ে তুলবে।”
ঢাকা/তানিম/মেহেদী