খাদ্য বিভাগের উপ-পরিদর্শক পদে নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে দিনাজপুরে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে একজন পরীক্ষার্থী এবং ২ জন শিক্ষক। এছাড়া অভিযানে উদ্ধার হয়েছে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও নকল স্ট্যাম্প।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণ পরই শহরের কেরি মেমোরিয়াল স্কুল থেকে পরীক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আনোয়ার হোসেন।

আরো পড়ুন:

ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হলে রাষ্ট্র দৃঢ় হয়: প্রধান বিচারপতি

বাংলাদেশে রাজনীতি করবে বাংলাদেশপন্থিরা: ডাকসু ভিপি

গ্রেপ্তার হওয়া ওই ব্যক্তির নাম কৃষ্ণ কান্ত রায়। তিনি বিরল উপজেলার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। দিনাজপুর শহরের ফকিরপাড়া এলাকায় একটি ছাত্রাবাসে ভাড়া থাকতেন।

পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ফকিরপাড়ার ‘স্বপ্নচুড়া’ নামের একটি ছাত্রাবাসে অভিযান চালিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো.

মামুন ও সবুজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের বাড়ি চিরিরবন্দর এলাকায়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার যা বললেন
দিনাজপুর জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, “প্রথমে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে এক পরীক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আরো ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ৫টি ডিভাইসসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “তদন্তে আরো কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে, তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।”

‘পদ্মা হলে যেন কাশি দেন’
পরীক্ষাকেন্দ্র সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে কৃষ্ণকান্ত রায় চাকরির পরীক্ষায় জালিয়াতির কথা স্বীকার করে জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে ঢাকার একটি চক্র জড়িত রয়েছে। তাদের মাধ্যমে এসব ডিভাইস পেয়েছেন এবং তা নিয়ে পরীক্ষায় বসেছিলেন। যোগাযোগ ডিভাইসের অন্য প্রান্ত থেকে তাকে বলা হয়েছিল, প্রশ্নের সেট ‘পদ্মা’ হলে যেন কাশি দেন। বিষয়টি বুঝে উঠতে না পেরে বারবার কাশি দিতে গিয়ে ধরা পড়েন তিনি।

জালিয়াতির প্রক্রিয়া বর্ণনা
জালিয়াতির প্রক্রিয়া বর্ণনা করে ওই পরীক্ষার্থী বলেন, “পরীক্ষা শুরুর এক থেকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে চক্রটির হাতে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রশ্নপত্রটি চলে আসে। শহরের ফকিরপাড়া ও সুইহারি এলাকায় দুটি ছাত্রাবাসে কোচিং সেন্টারের কয়েকজন শিক্ষক বিভিন্ন সেটের প্রশ্নগুলোর উত্তরপত্র প্রস্তুত করেন।এর মধ্যে ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রশ্নের সেট নম্বর জেনে নেয় চক্রটি। পরে ক্রম অনুযায়ী, প্রশ্নগুলোর উত্তর (ক, খ, গ, ঘ) বলতে থাকে। পরীক্ষার্থী শুনে শুনে তৎক্ষণাৎ প্রশ্নপত্রে বিশেষ দাগ দিয়ে উত্তরগুলো চিহ্নিত করেন। পরে ওএমআর শিটের বৃত্ত ভরাট করেন।”

‘এটি বড় একটি চক্র’
দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এস এম হাবিবুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, “জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত এক পরীক্ষার্থীকে ইতিমধ্যে হাতেনাতে ধরতে সক্ষম হয়েছি আমরা। পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে থেকে তার ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি বড় একটি চক্র। আমরা পুরো চক্রটি ধরতে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান শুরু করেছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের যথাযথ আইনের আওতায় আনতে কাজ করছি।”

ঢাকা/মোসলেম/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর পর ক ষ র থ পর ক ষ য়

এছাড়াও পড়ুন:

ভেনেজুয়েলা নিয়ে ট্রাম্প কী লক্ষ্য অর্জন করতে চান

দুই মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় সাগরে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সামরিক সমাবেশ ঘটাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য এ আয়োজন। কিন্তু ওয়াশিংটনের প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে কারাকাসকে বার্তা দিতে চায়।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ছোট ছোট নৌযানে হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে হত্যা করেছে। এই হামলাগুলোকে ঘিরে লাতিন আমেরিকা অঞ্চলজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন এর বৈধতা নিয়ে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকাণ্ড আসলে ইঙ্গিত দিচ্ছে—ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোকে ভয় দেখাতে অভিযান চালানো হচ্ছে।

লন্ডনভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউসের লাতিন আমেরিকা-বিষয়ক সিনিয়র ফেলো ক্রিস্টোফার সাবাতিনি বলেন, এটি মূলত সরকার পরিবর্তনের প্রচেষ্টা। তারা হয়তো সরাসরি আগ্রাসনে যাবে না, বরং শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে বার্তা দিতে চায়।

সাবাতিনির মতে, এই সামরিক আয়োজন আসলে শক্তি প্রদর্শন। এর উদ্দেশ্য ভেনেজুয়েলার সেনাবাহিনী ও মাদুরোর ঘনিষ্ঠ মহলে ভয় সৃষ্টি করা, যাতে তারা তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

সম্পর্কিত নিবন্ধ