আলহাজ এম, এ, রশিদকে সভাপতি ও কে, এস, হোসেন টমাসকে মহাসচিব করে বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতির নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে সমিতির বিভাগীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে ২৪ সদস্যের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।

কমিটিতে আলহাজ্ব রফিকুল ইসলাম সরকার ও আলহাজ্ব নুরুল হক মিয়া সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, আলহাজ্ব এম, এ, তাহের, মুস্তাফিজুর রহমান মল্লিক ও শরিফুজ্জামান সজলকে ভাইস চেয়ারম্যান, এস, এম, আয়নাল হক, মো.

ফিরোজ আলম ও আমিনুল ইসলাম আখন্দকে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, মো. রুহুল আমিন খান, মোহাম্মদ আরজু আখন্দ ও মো. সিদ্দিকুর রহমান লিটুকে যুগ্ম মহাসচিব করা হয়।

এর আগে সমিতির বিভাগীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে সরকারের কাছে ৭ দফা দাবি জানানো হয়। এই দাবি আদায়ে আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে সমিতি।

সেগুলো হচ্ছে, দলিল রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি আধুনিকায়নের নামে দলিল লেখকদের পেশাচ্যুত করা যাবে না। সাবেক আইনমন্ত্রী মহোদয়ের প্রতিশ্রুত দলিল প্রতি সম্মানি ভাতা নুন্যতম চার হাজার টাকা বাস্তবায়ন করতে হবে। লাইসেন্স প্রাপ্ত দলিল লেখক ব্যতিত অন্য কেহ দলিল লেখতে বা মুসাবিদা করতে পারবে না মর্মে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। থানা ও জেলা কার্যালয়ে সরকারি খরচে দলিল লেখকদের বসার ও নামাজের স্থান নির্মাণ করে দিতে হবে। যেহেতু পক্ষগণের সরবরাহকৃত কাগজপত্রের ভিত্তিতে দলিল লেখা হয়, সেহেতু দলিল লেখকদের পেশাগত কারণে দলিল লেখা/মুসাবিদা কারক হিসাবে। দলিল লেখকদের আনামী করা যাবে না। দলিল লেখক সমিতির থানা ও জেলা কমিটির সুপারিশ ব্যতিত অনভিজ্ঞদের দলিল লেখার লাইসেন্স প্রদান করা যাবে না মর্মে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। দলিল লেখক কাউন্সিল গঠনের অনুমতি দিতে হবে। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দল ল ল খ আলহ জ

এছাড়াও পড়ুন:

‘কার কপালে বাড়ি মারলাম, কে বারবার এই ক্ষতিটা করে’

৯ মাস আগে বিধবা লাকি রানী দের (৪০) গোয়ালঘরের তালা কেটে দুর্বৃত্তরা চারটি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর কানাডাপ্রবাসী এক ব্যক্তি তাঁকে একটি গাভি কিনে দেন। পরে গাভিটি একটি বাছুরের জন্ম দেয়। বাছুরটির বয়স হয়েছিল প্রায় সাত মাস। গতকাল শুক্রবার রাতে দুর্বৃত্তরা আবারও তাঁর গোয়ালঘরের দরজার তালা লাগানোর শিকল কেটে বাছুরসহ গাভিটি চুরি করে নিয়ে গেছে।

লাকি রানীর বাড়ি মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের উত্তর ভবানীপুর গ্রামে। তাঁর স্বামী প্রশান্ত দে প্রায় চার বছর আগে হঠাৎ হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। লাকির দুই মেয়ে। বড় মেয়ে রিয়া রানী দে স্থানীয় তৈয়বুন্নেছা খানম সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন। ছোট মেয়ে রুহি রানী দে পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা দিয়েছে। স্বামীর অকালমৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেন লাকি। পাঁচটি গরু লালন-পালন করছিলেন। গরু বিক্রি করে সংসার আর দুই মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাবেন ভেবেছিলেন। একটি গরু বিক্রিও করেন। এরই মধ্যে গত মার্চ মাসে বাকি চারটি গরু চুরি হয়ে যায়।

আজ শনিবার বিকেলে সরেজমিনে লাকির বাড়িতে গেলে তিনি জানান, গতকাল শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ঘুম থেকে জেগে দেখেন, গোয়ালঘরের দরজায় তালা লাগানোর শিকল কাটা। ভেতরে গরু–বাছুর কোনোটাই নেই। জুড়ী থানার পুলিশের এক কর্মকর্তার মুঠোফোনের নম্বর ছিল তাঁর কাছে। ওই নম্বরে কথা বলে তাঁকে ঘটনাটি জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে লাকি রানী বলেন, ‘গাইটা (গাভি) পাইয়া মনে কিছু শান্তি ফিরিয়া আইছিন। একটা বাছুরও পাইলাম। মনে করছিলাম, বাছুরটার বয়স ৯-১০ মাস হইলে বিক্রি করি দিমু। ৫০ হাজার টাকা লোন (ঋণ) করছিলাম বেশ আগে। ২০-২৫ হাজার টাকা পরিশোধের বাকি। বাছুর বিক্রি করে এই টাকাটা পরিশোধ করার চিন্তাভাবনা করছিলাম। চোর আমারে আবার পথে নামাই দিল। কার কপালে বাড়ি মারলাম, কে বারবার এই ক্ষতিটা করে?’

এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি লাকি। তিনি বলেন, ‘আগেরবার চুরির পরেও পুলিশরে জানাইয়া কোনো লাভ হইছে না। খামাখা করিয়া লাভ কিতা হইব? তবে কাইল (শুক্রবার) খবর জানানির পর তারা (পুলিশ) আইয়া খোঁজাখুঁজি করছে, চেষ্টা করছে।’

লাকি বলেন, ‘সংসারের নানা খরচ আছে। মেয়েরার লেখাপড়ায়ও খরচ লাগে। এইটা তো চালানি লাগব। এসএসসি পাসের পর আমার বিয়া হই গেছে। ৩-৪ হাজার টাকা বেতনের একটা চাকরি পাইলে করতাম। কিন্তু এসএসসি পাসে তো চাকরি পাওয়াও কঠিন। কিতা করতাম, কিলা চলতাম—এইটাই খালি ভাবি। ঘরে বেকার বসি থাকলে সংসার চলব কেমনে?’

আরও পড়ুনশূন্য গোয়ালের সামনে কাঁদতে কাঁদতে লাকী রানী বললেন, ‘চোরে মরা মানুষরে মারিয়া গেল’০৩ মার্চ ২০২৫

জুড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফরহাদ মিয়া বলেন, খবর পেয়ে তিনিসহ থানার আরেক এসআই মুজিবুর রহমান লাকি রানীর বাড়িতে যান। খোঁজাখুঁজি করেও চুরি হওয়া গরু ও বাছুরের সন্ধান মেলেনি। তবে তাঁদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ