মেঘনায় বাল্কহেডের সঙ্গে নৌকার সংঘর্ষে এক জেলে নিখোঁজ
Published: 26th, October 2025 GMT
ভোলার সদর উপজেলার উত্তরে ইলিশা নৌ থানাসংলগ্ন মেঘনা নদীতে বাল্কহেডের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে একটি মাছ ধরার নৌকা দুমড়েমুচড়ে গেছে। গতকাল রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় ১১ জন জেলে নদীতে পড়ে যান। স্থানীয় জেলেরা ১০ জনকে উদ্ধার করলেও একজন নিখোঁজ আছেন।
নিখোঁজ জেলের নাম আবুল হোসেন (৫০)। তিনি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া এলাকার বাসিন্দা। তাঁর ছেলে বাদী হয়ে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছে নৌ পুলিশ।
বাল্কহেডের মাস্টার মো.
অন্যদিকে দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া জেলে আলমগীর হোসেন বলেন, ‘৩ অক্টোবর মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান শুরু হলে আমরা মাছ ধরা বন্ধ রাখি। অভাবে পড়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে যায়। ২৫ অক্টোবর রাতে মিলাদ পড়িয়ে কালিগঞ্জ মাছঘাট থেকে সাগর মোহনার উদ্দেশে রওনা হই। রাত সাড়ে আটটার দিকে ইলিশা নৌ থানাসংলগ্ন নদীতে একটি বাল্কহেডের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। আমাদের নৌকাটি মুহূর্তেই ভেঙে যায়। স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় প্রাণে বাঁচি।’
দুর্ঘটনার কবলে পড়া নৌকার মাঝি হাবিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, তাঁদের নৌকায় ১১ জন জেলে ছিলেন, সবাই বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ উলানিয়া গ্রামের বাসিন্দা। বাল্কহেডে কোনো সিগন্যাল বাতি জ্বলছিল না। অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না, এ জন্য সংঘর্ষ ঘটে। নদীতে পড়া সব জেলেকে উদ্ধার করা গেলেও রান্নার কাজে থাকা বাবুর্চি আবুল হোসেন মাঝিকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বাল্কহেডের মাস্টার মো. হৃদয় অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা নিয়ম মেনে সিগন্যাল দিয়েছিলাম। কিন্তু জেলেরা নৌকা আড়াআড়ি করে দেওয়ায় সংঘর্ষ হয়।’
ইলিশা নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, নৌ নিরাপত্তা আইনে রাতের বেলা বাল্কহেড চলাচল নিষিদ্ধ। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বাল্কহেডটি বেপরোয়াভাবে চলছিল। আইন ভঙ্গের অভিযোগে বাল্কহেডের মাস্টারসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় দেশের গবেষকদের নিয়ে চুয়েটে আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) আজ বুধবার থেকে শুরু হয়েছে ‘অষ্টম যন্ত্রকৌশল ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন’। তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলন চলবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত। চুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের উদ্যোগে এ সম্মেলন আয়োজিত হচ্ছে।
আজ বেলা ১১টায় চুয়েটের কেন্দ্রীয় অডিটরিয়ামে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। অনলাইনে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ আবুল ফয়েজ। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন মেকানিক্যাল অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক কাজী আফজালুর রহমান এবং ব্যুরো অব রিসার্চ, টেস্টিং অ্যান্ড কনসালটেন্সির পরিচালক অধ্যাপক বদিউস সালাম।
চুয়েটের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান শুরু হয়। স্বাগত বক্তব্য দেন সম্মেলনের সম্পাদক অধ্যাপক মো. সানাউল রাব্বী। এ ছাড়া বক্তব্য দেন জাপানের সাগা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আকিও মিয়ারা এবং নরওয়ের আগডার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক তোরে ভেহুসও।
উদ্বোধনী বক্তব্যে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফয়েজ বলেন, ‘আমাদের একসঙ্গে কাজ করার এবং দেশ ও সমাজের কল্যাণে নতুন কিছু করার সুযোগ এসেছে। এই সম্মেলন আন্তর্জাতিক প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের মানচিত্রে আমাদের অবস্থানকে সুদৃঢ় করবে।’
চুয়েটের উপাচার্য ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূঁইয়া বলেন, ‘টেকসই ও প্রযুক্তিনির্ভর শিল্প অর্থনীতিতে রূপান্তরের জন্য বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। এ জন্য গবেষণা, উদ্ভাবন এবং দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে হবে। এ ধরনের সম্মেলন এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
অষ্টমবারের মতো আয়োজিত এ সম্মেলনে বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, নরওয়ে, মালয়েশিয়াসহ ছয়টি দেশের প্রায় ৩৫০ জন শিক্ষক, গবেষক ও শিল্পোদ্যোক্তা অংশ নিচ্ছেন। থাকছেন সাতজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বক্তা। তাঁরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি, রোবোটিকস, বুদ্ধিমান সিস্টেম, উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তি ও আধুনিক যন্ত্র প্রকৌশল বিষয়ে গবেষণা উপস্থাপন করবেন।
সম্মেলনে মোট ২৪১টি গবেষণাপত্র উপস্থাপনের কথা রয়েছে। দ্বিতীয় দিনে ২০টির বেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে সেমিনার হবে। তৃতীয় দিনে চুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধীনে থাকা চারটি সংগঠনের মাধ্যমে রোবো রেস, পোস্টার প্রেজেন্টেশন ও ডিজাইন কনটেস্ট প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।