সুন্দরবনের দুবলারচরে আসছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ আধ্যাত্মিক উৎসব রাস পূজা ও পুণ্যস্নান। তবে এবারও এ আয়োজনে কোনো মেলা বসবে না এবং পর্যটকদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে বন বিভাগ। শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বী তীর্থযাত্রীদের জন্যই উৎসবস্থলে যাতায়াতের অনুমতি থাকবে।

বন বিভাগ জানিয়েছে, আগামী ৩ থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে ঐতিহ্যবাহী এই রাসপূজা ও পুণ্যস্নান। তীর্থযাত্রীদের নিরাপদ চলাচল, বনাঞ্চলের পরিবেশ সুরক্ষা এবং নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করতে এবারও বন বিভাগ অনুমোদিত রুট নির্ধারণ করেছে। 

বন বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, তীর্থযাত্রীদের ৩ নভেম্বর দিনের ভাটায় যাত্রা শুরু করতে হবে এবং শুধুমাত্র দিনের বেলাতেই নৌযান চলাচল করা যাবে। নির্ধারিত চেকপোস্ট ছাড়া কোথাও থামা যাবে না। প্রতিটি লঞ্চ ও ট্রলারে লাইফ জ্যাকেট বা বয়া রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। 

নৌযানে তীর্থযাত্রীর সংখ্যা ও সিরিয়াল নম্বর স্পষ্টভাবে লেখা থাকবে। তীর্থযাত্রীদের প্রবেশের সময় টোকেন বা টিকিট প্রদান করা হবে, যা সবসময় সঙ্গে রাখতে হবে। রাসপূজা উপলক্ষে সুন্দরবনের দুবলারচরে বিস্ফোরকদ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র, শিকার সামগ্রী, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ও শব্দদূষণকারী যন্ত্র বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কারো কাছে এসব পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এছাড়া, তীর্থযাত্রীদের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপিসহ আবেদন করে অনুমতি নিতে হবে। প্রতিটি নৌযানকে আলোরকোল কন্ট্রোলরুমে রিপোর্ট করতে হবে এবং নির্ধারিত রুট উল্লেখসহ সিলমোহরযুক্ত অনুমতিপত্র সঙ্গে রাখতে হবে।

অনুমোদিত পাঁচটি রুট হলো, ১.

বুড়িগোয়ালিনী-কোবাদক-বাটুলানদী-বলনদী-পাটকোষ্টা খাল-হংসরাজ নদী হয়ে দুবলার চর। ২. কয়রা-কাশিয়াবাদ-খাসিটানা-বজবজা-আড়ুয়া শিবসা-মরজাত হয়ে দুবলার চর। ৩. নলিয়ান স্টেশন-শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর। ৪. ঢাংমারী/চাঁদপাই স্টেশন-তিনকোনা দ্বীপ-পশুর নদী হয়ে দুবলার চর। ৫. বগী-বলেশ্বর-সুপতি-কচিখালী-শেলারচর হয়ে সুন্দরবনের বাহির পথে দুবলার চর।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “রাস পূজা উপলক্ষে আমাদের সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন রুটে দায়িত্ব পালন করবেন। পরিবেশ রক্ষা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে শান্তিপূর্ণভাবে এবারের রাস উৎসব সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।”

তিনি আরো বলেন, “রাস পূজা উদযাপন উপলক্ষে দুবলার চরে কোনো মেলা অনুষ্ঠিত হবে না। শুধুমাত্র পূজার আনুষ্ঠানিকতা পালন করবেন তীর্থযাত্রীরা। এসময় কোনো সাধারণ পর্যটক ও ট্যুর অপারেটরকে অনুমতি দেওয়া হবে না। শুধুমাত্র তীর্থযাত্রীদের বনবিভাগের নিয়ম মেনে অনুমতি দেওয়া হবে।”

ঢাকা/শহিদুল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন দরবন বন ব ভ গ

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁও জি.আর ব্যাচ-২০০৫ এর শিক্ষার্থীদের ২০ বছর পূর্তি উদযাপন

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও পৌর এলাকায় অবস্থিত সোনারগাঁও জি.আর ইনস্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজ।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ২০০৫ সালের এসএসসি ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন সোনারগাঁও জি.আর ব্যাচ-২০০৫ এর প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ২০ বছর পূর্তি উদযাপন করেছেন বর্ণাঢ্য আয়োজনে।

“এসো সবে প্রাণের টানে, এসো সবাই প্রতিভার প্রাঙ্গণে”- এই স্লোগানকে সামনে রেখে সোনারগাঁ জি.আর. ইনস্টিটিউশন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এস.এস.সি ২০০৫ ব্যাচের ২০ বছর পূর্তি উৎসব উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সারাদিনব্যাপী এই উৎসব বসন্ত বিলাস রিসোর্টে আয়োজন করে জি.আর. ইনস্টিটিউশন ব্যাচ ২০০৫।

দিনব্যাপী এ আয়োজনে সকাল ৮টায় যাত্রা শুরু হয় সোনারগাঁও জি.আর. ইনস্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজ গেইট থেকে। গাড়িতে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে টি-শার্ট বিতরণ ও কুপন বিক্রয় করা হয়। কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের কর্মসূচি শুরু হয়।

সকাল সাড়ে ৯টায় তারাবো পৌরসভার যাত্রামুড়া বসন্ত বিলাস রিসোর্টে পৌছান শিক্ষার্থীরা। সেখানে তারা সকালের নাস্তা সেরে নেমে পড়েন ফুটবলা খেলায়। ক্ষনিকের জন্য প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা যেনো ফিরে যান শৈশবে।

মধ্যবয়সেও যেনো কিশোর বয়সের ন্যায় ফুটবল খেলার মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তারা। খেলার মাঠে বেশকজন আহত হয়ে নিজেরা বুঝেছেন কিশোর যুবক বয়স পাড় করে মধ্যবয়সে ফিরেছেন তারা। এরপর ছুটে যান সুইমিং পুলে। সেখানেও থেমে থাকেনি।

বাধভাঙ্গা উল্লাসে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন সুইমিং পুলে। এবারো যেনো প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ফিরে গেলেন শিশুকালে। পরবর্তীতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সন্তানদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় বল নিক্ষেপ খেলা।

দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত ছিল জুমাআ নামাজের জন্য বিরতি। দুপুর ২টা থেকে ৩টি পর্যন্ত মধ্যাহ্নভোজ। মধ্যাহ্নভোজ শেষে বাধভাঙ্গা উল্লাস থেকে যেনো সবাই মিউয়ে পড়েন ক্লান্তিতে। এরি মাঝে শুরু হয় মেয়েদের বালিশ কার হাতে খেলা।

বাদ আসর শেষে পুরস্কার বিতরণ, আলোচনা সভা ও র‍্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়াও বেশকটি ইভেন্ট সম্পন্ন করা হয় উৎসবমুখর পরিবেশে। সঙ্গে ছিল বসন্ত বিলাস রিসোর্টের বিভিন্ন রাইড ও বিনোদনমূলক আয়োজন সবার মাঝে যেনো আনন্দের জোয়ার বয়ে আনে।

অনুষ্ঠানের আয়োজকরা বলেন, “এই বন্ধুত্ব আর মিলনমেলা আমাদের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের একসূত্রে বেঁধে রাখে। ভবিষ্যতেও এ ঐক্য ধরে রাখতে চাই। শিক্ষাজীবনের স্মৃতি আমাদের জীবনের অমূল্য সম্পদ।

এই আয়োজন সেই স্মৃতিগুলোকে আরও জীবন্ত করে তুলেছে। আমরা শুধু প্রাক্তন শিক্ষার্থী নই, সমাজ উন্নয়নে দায়িত্বশীল নাগরিকও। সেই লক্ষ্যেই আমাদের সংগঠন কাজ করছে।

প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন- আল মাহামুদ সানি, আমিরুল ইসলাম সজীব, সিফাতুল ইসলাম সিফাত, কাউসার আল মামুন রাজু, নূর মোহাম্মদ রুবেল, সাদেকুর রহমান সাদেক, হাসান মেহেদী, শাহিন কবির, মাহাবুবুর রহমান তমাল, আজহারুল ইসলাম রনি, খোরশেদ আলী, তানিয়া মৌসুমী শোভা, ফারজানা রিনা, নজরুল ইসলাম, ফয়সাল আহমেদ, আরিফুজ্জামান আরিফ, শাহআলী, রিপন আহমেদ আশিক, সাইদুর রহমান, শরীফ হোসেন, মোহাম্মদ রাসেল, মাজহারুল ইসলাম রোকন সহ অন্যান্যরা। এ ছাড়াও প্রবাসে থাকা প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও ভার্চুয়ালী অংশগ্রহণ করেছেন।

উল্লেখ্য, “২০০৫ ব্যাচ” নামে একটি অরাজনৈতিক ও অলাভজনক সামাজিক সংগঠন ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এই সংগঠনটি সোনারগাঁ অঞ্চলে নানামুখী সমাজকল্যাণ ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে, যা বর্তমানে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে সোনারগাঁও জুড়ে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোবিপ্রবির সায়েন্স ফেস্টে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের সাফল্য
  • সোনারগাঁও জি.আর ব্যাচ-২০০৫ এর শিক্ষার্থীদের ২০ বছর পূর্তি উদযাপন
  • সিলেটে বিকাশ-বিজ্ঞানচিন্তা বিজ্ঞান উৎসব
  • সবজিখেতের জালের বেড়ায় আটকে পড়ল অজগরের বাচ্চা
  • রাবিতে বিচারপতিদের মিলনমেলা
  • ‘বিজ্ঞানমনস্ক হওয়ার প্রত্যয়ে’ বিজ্ঞান উৎসবের সিলেট আঞ্চলিক পর্ব শুরু
  • সব জাতিগোষ্ঠীর সমন্বয়ে ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে: মির্জা ফখরুল
  • বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের কঠিন চীবর দান উৎসব শুরু