চীনের ‘বৃদ্ধ শিশু’ হিসেবে পরিচিত প্রকৃতিবাদী দার্শনিক লাওৎসি। যিনি মনে করতেন, মানুষকে একবার ব্যক্তিস্বার্থের উর্দ্ধে উঠে আসতে হবে, তবেই শান্তি আসবে। তার এমন ভাবনার জন্য ‘বৃদ্ধ শিশু’ বলা হয়ে থাকে।
যদিও চৈনিকরা মনে করে থাকেন তিনি খ্রিষ্টপূর্ব ৬ষ্ট শতকে জন্মে ছিলেন। কোনো কোনো ঐতিহাসিকের মতে তিনি আসলে খ্রিষ্টপূর্ব ৫ম-৪র্থ শতকের মানুষ।
আরো পড়ুন:
মানুষ উড়তে পারবে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার
পাখির বাসা দেখে কী বোঝা যায় বৃষ্টি বেশি হবে নাকি কম হবে?
লাওৎসি তাওবাদের প্রবক্তা। তিনি ছিলেন চু প্রদেশের রাজকীয় লাইব্রেরির তত্ত্বাবধায়ক এবং প্রকৃতিবাদী দার্শনিক। লাওৎসি বিশ্বাস করতেন, ‘‘এই পৃথিবীর প্রতিটি বস্তুই ভারসম্যমূলক নিয়মে আবর্তিত হচ্ছে। ’’
কিন্তু মানুষের কারণেই যখন চীনে দুর্নীতি বাড়ছিলো তিনি তখন দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। নিজ ইচ্ছায় যেতে চান নির্বাসনে। পথে ঘটেছিলো বিষ্ময়কর এক ঘটনা।
লাওৎসি যখন চীনের পশ্চিম সীমান্ত পাড়ি দিচ্ছিলেন সীমান্ত সীমান্তরক্ষীদের প্রধান ইন সি তার পথ আটকে দাঁড়ান। ইন সি লাওজুকে চিনতে পেরেছিলেন। তিনি লাওজুকে বলেন, চিরতরে দেশ ত্যাগ করার আগে কিছু উপদেশ দিয়ে যান। ইন সি তার জীবন সহজ করার উপদেশ চেয়েছিলেন।
অনেক ভেবে রাজি হলেন লাওৎসি। লিখিত আকারে শুরু করলেন জীবন সহজ করার উপায় লেখা। সীমান্তরক্ষীর পাশে একটা পাথরের ওপর বসলেন তিনি। লিখে ফেললেন তাওবাদের মহাগ্রন্থ তাও তে চিং।
লেখা শেষ করে ইন সির হাতে তুলে দেন গ্রন্থটি। তারপর পশ্চিমের কুয়াশায় চিরতরে হারিয়ে গেলেন লাওৎসি। ইন সিই পরে তা অনুলিপি তৈরি করেন ও প্রচারে ভূমিকা রাখে।
তাওবাদ অনুসারে, মানুষ প্রকৃতপক্ষেই ভেতর থেকে ভালো। শুধু সেই ভালোত্বকে জাগিয়ে তুলতে হয় মন্দত্বকে ছাপিয়ে।
তাও তে চিং তাওবাদের সবচেয়ে প্রভাবশালী গ্রন্থ হিসাবে স্বীকৃত। এটি ধর্মগ্রন্থ নয়। এতে স্থান পেয়েছে দার্শনিক কবিতার মাধ্যমে জীবন যাপনের নির্দেশিকা। বইটির শুরুর দুই লাইন অনেক জনপ্রিয়। ‘‘তাও ক তাও ফেই ছাং তাও, মিং ক মিং ফেই ছাং মিং”। যার বাংলা অর্থ ‘‘যে তাওকে মুখে প্রকাশ করা যায়; তা চিরন্তন তাও না। আর যে নামকে নামে আবদ্ধ করা যায়; তা চিরন্তন নাম না।’’
তাওবাদ-এ স্বীকার করা হয়েছে,‘‘ মানুষ প্রকৃতপক্ষে ভেতর থেকে ভালো। শুধু সেই ভালোত্বকে জাগিয়ে তুলতে হয় মন্দত্বকে ছাপিয়ে। সঠিক নির্দেশনা এবং শিক্ষা প্রদান করা হলে যে কাউকে মহৎ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।’’
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ রন থ প রক ত
এছাড়াও পড়ুন:
বৃথা গেল ব্রুকের ঝড়ো সেঞ্চুরি, নিউ জিল্যান্ডের জয়
অসাধারণ এক ইনিংস খেলেও দলকে জেতাতে পারলেন না হ্যারি ব্রুক। তার ঝড়ো সেঞ্চুরির পরও রোববার প্রথম ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডকে হারতে হলো নিউ জিল্যান্ডের কাছে। মাউন্ট মাউনগানুইয়ে চার উইকেটের ব্যবধানের জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।
মাত্র ১০ রানে চার উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে ইংল্যান্ড। সেই ধস থেকে দলকে টেনে তোলেন অধিনায়ক হ্যারি ব্রুক। ১০১ বল খেলে ১৩৫ রানের ইনিংসে তিনি মারেন ১১ ছক্কা ও ৯ চার। যা দলের মোট রানের (২২৩) ৬০ শতাংশের বেশি। তার বাইরে কেবল জেমি ওভারটন (৪৬) দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেন। বাকিদের ব্যাটিং যেন ছিল ব্যর্থতার এক প্রদর্শনী। ওপেনার জেমি স্মিথ (০), বেন ডাকেট (২), জো রুট (২), জেকব বেথেল (২), জস বাটলার (৪) ও স্যাম কারান (৬); সবাই ফিরেছেন ১২ ওভারের মধ্যেই।
আরো পড়ুন:
টি-টোয়েন্টি সিরিজের ট্রফি উন্মোচন
নারী বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের সময়সূচি
৩৫.২ ওভারে ২২৩ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। অথচ এই স্কোরই কিছুটা প্রতিযোগিতামূলক করে দেয় ব্রুকের একক লড়াই। ৫৬ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর ওভারটনের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে ৮৭ রানের জুটি গড়েন তিনি। শেষ উইকেটে লুক উডকে নিয়ে আরও ৫৭ রান যোগ করেন। এক পর্যায়ে তিনি ৩ ছক্কা মারেন জ্যাক ডাফির এক ওভারে। পরে ম্যাট হেনরিকে আরও তিনটি এবং নাথান স্মিথকে দর্শকসারিতে পাঠান এক দারুণ পুল শটে।
তবে এতকিছুর পরও ম্যাচ জেতানো যায়নি। বোলিংয়ে ভালো শুরু করেও সুযোগ হাতছাড়া করে ইংল্যান্ড। ২৪ রানের মধ্যেই নিউ জিল্যান্ডের তিন ব্যাটারকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ব্রাইডন কার্স। যার মধ্যে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ছিলেন প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে ‘গোল্ডেন ডাকের’ শিকার।
কিন্তু এরপরই শুরু হয় ফিল্ডিং বিপর্যয়। স্লিপে রুট সহজ ক্যাচ ফেলেন মাইকেল ব্রেসওয়েলের (২ রানে), আর লুক উড মিস করেন ড্যারিল মিচেলের (৩৩ রানে) ধরা বলটি। ফলাফল- এই দুই ব্যাটার মিলে গড়েন ৯২ রানের জুটি, যা কার্যত ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয়।
শেষ দিকে কার্স আরেকটি ক্যাচ ফেলেন মিচেল স্যান্টনারের (২৭)। তখনও প্রয়োজন ছিল ৪৩ রান। যা ইংল্যান্ডের শেষ আশাটুকুও মুছে দেয়।
নিউ জিল্যান্ড ৩৬.৪ ওভারে ৬ উইকেটে ২২৪ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে ৮০ বল হাতে রেখে। অপরাজিত ৭৮ রানে ম্যাচ শেষ করেন ড্যারিল মিচেল। সঙ্গে ৫১ রান আসে ব্রেসওয়েলের ব্যাট থেকে।
এই হারে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ল ইংল্যান্ড। যাদের চোখ এখন বুধবার হ্যামিলটনে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড:
ইংল্যান্ড: ৩৫.২ ওভারে ২২৩/১০; হ্যারি ব্রুক ১৩৫ (১০১), জেমি ওভারটন ৪৬; ফাউল্কস ৪-৪১, ডাফি ৩-৫৫, হেনরি ২-৫৩।
নিউ জিল্যান্ড: ৩৬.৪ ওভারে ২২৪/৬; ড্যারিল মিচেল ৭৮* (৯১), মাইকেল ব্রেসওয়েল ৫১ (৫১); কার্স ৩-৪৫।
ঢাকা/আমিনুল