ক্যানসার রোগীদের সহায়তা দিতে নতুন সংগঠনের যাত্রা শুরু
Published: 26th, October 2025 GMT
‘আমার যখন ক্যানসার হলো, তখন সবাই আমার সঙ্গে এমন আচরণ করছিলেন যেন আমি কিছুদিনের মধ্যেই মারা যাব। কেউ কেউ জিজ্ঞেস করছিলেন যে আমার কোন কোন খাবার খেতে ইচ্ছা করছে, যেন তিনি আমার জন্য শেষ খাবার তৈরি করে নিয়ে আসছেন’, বলছিলেন নাসরিন হোসেন। ক্যানসার জয়ের পর ৯ বছরের বেশি সময় ধরে ক্যানসারমুক্ত জীবন যাপন করছেন তিনি।
গত শুক্রবার ঢাকার আমিন বাজারের একটি রিসোর্টে নতুন সংগঠন ‘ক্যানসার পেশেন্ট সাপোর্ট অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন’–এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নিজের গল্প তুলে ধরেন ব্যাংক কর্মকর্তা নাসরিন। এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ক্যানসার রোগী এবং তাঁদের সেবকদের কল্যাণে কাজ করার লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করল ক্যানসার পেশেন্ট সাপোর্ট অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন।
ওই অনুষ্ঠানে সমাজের বিভিন্ন অংশ থেকে আসা ক্যানসারজয়ী এবং তাঁদের স্বজনেরা শোনান ক্যানসার নিয়ে বেঁচে থাকা এবং ক্যানসার জয়ের গল্প। তেমনই একজন আসমা হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমার ব্রেস্ট ক্যানসারের জন্য কেমোথেরাপি চলছিল, একই সঙ্গে আমার স্বামীর ফুসফুস ক্যানসারের জন্য চলছিল রেডিওথেরাপি। আমি কেমোথেরাপি নিয়ে আধ ঘণ্টাও বিশ্রাম নিতে পারিনি। স্বামীর সেবা, তাঁর খাবার ও ওষুধের ব্যবস্থা করতে হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই কঠিন সময় আমি পাড়ি দিয়েছি সৃষ্টিকর্তার ওপর বিশ্বাস এবং আমার অদম্য মনোবলকে সঙ্গে নিয়ে। আমি জানি ক্যানসার রোগী এবং তাঁর স্বজনদের একটু অনুপ্রেরণা তাঁদের জীবনে বিরাট পরিবর্তন এনে দিতে পারে।’
অনুষ্ঠানের শুরুতেই সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা এবং বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অনকোলোজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক জাফর মো.
সংগঠনটির সহসভাপতি অধ্যাপক জোহরা জামিলা খান, সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক মো. শাহনেওয়াজ খান, সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে ক্যানসার পেশেন্ট সাপোর্ট অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের লোগো উন্মোচন করা হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন
এছাড়াও পড়ুন:
জ্যেষ্ঠ হামাস নেতা রায়েদ সাদকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের
ফিলিস্তিনের গাজা নগরীতে গাড়িতে হামলা চালিয়ে হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা রায়েদ সাদকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। তবে হামাসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়নি।
এদিকে এই হামলাকে ‘ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি নস্যাৎ করার অপচেষ্টা’ হিসেবে উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ গাজায় বিস্ফোরণে কয়েকজন ইসরায়েলি সেনা আহত হওয়ার জবাবে রায়েদ সাদের ওপর হামলার নির্দেশ দেন।
অবশ্য নেতানিয়াহুর দপ্তরের বিবৃতিতে হামলায় সাদ নিহত হয়েছেন কি না, তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে ইসরায়েলের বিভিন্ন গণমাধ্যম তাঁর নিহত হওয়ার খবর দিচ্ছে।
পরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে রায়েদ সাদকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের সহযোগিতা নিয়ে এ হামলা চালানো হয়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, হামাস সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে নিজেদের ‘সক্ষমতা পুনরুদ্ধার ও শক্তি সঞ্চয়ের’ চেষ্টা করে আসছে। সাদ ছিলেন গাজায় বেঁচে থাকা হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতাদের একজন এবং সংগঠনটির সামরিক শাখার উপপ্রধান মারওয়ান ইসার ঘনিষ্ঠ।
কে এই রায়েদ সাদইউরোপীয় কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের তথ্য অনুযায়ী, রায়েদ সাদ হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসেম ব্রিগেডের সামরিক পরিষদের একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য। তিনি কাসেম ব্রিগেডের অভিযান ও উৎপাদন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। তাঁকে এই সশস্ত্র শাখার ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ বা দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা হিসেবেও বিবেচনা করা হতো।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেওয়া আগের এক বিবৃতিতে সাদকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার ‘অন্যতম পরিকল্পনাকারী’ হিসেবেও অভিযুক্ত করা হয়।
যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের অভিযোগ হামাসের
এদিকে গাজা শহরে চালানো এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে হামাস। টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি বলেছে, এই হামলা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির ‘প্রকাশ্য লঙ্ঘন’।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই অপরাধ প্রমাণ করে ইসরায়েলি দখলদারেরা ক্রমাগত চুক্তি লঙ্ঘন করে যুদ্ধবিরতিকে ইচ্ছাকৃতভাবে নস্যাৎ ও নাশকতা করার চেষ্টা করছে।
হামাস এই চুক্তির মধ্যস্থতাকারী ও নিশ্চয়তাদানকারী দেশগুলোকে ইসরায়েলকে ‘থামাতে’ অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, ইসরায়েল চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে আলোচনাকে বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে।