গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলনের জের ধরে এএ ইয়ার্ন মিলস লিমিটেড নামের পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আকস্মিক সিদ্ধান্তে প্রায় তিন হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছে। কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকাল থেকে শ্রমিকরা কারখানার মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছে।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের নগরহাওলা এলাকায় অবস্থিত এএ ইয়ার্ন মিলসের শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে। শ্রমিকরা জানান, তাদের গত সেপ্টেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করা হয়নি।

আরো পড়ুন:

‌‘শ্রমজীবী মানুষের রেশন ও পেনশনের নিশ্চয়তা রাষ্ট্রকে দিতে হবে’

গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

এই পোশাক কারখানার শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, “গত ২৩ অক্টোবর বেতন পরিশোধের দাবিতে আমরা আন্দোলন করি। তখন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে আশ্বাস দিয়েছিলেন বেতন শিগগিরই দেওয়া হবে এবং সোমবার থেকে কারখানা খুলবে। কিন্তু আজ এসে দেখি গেটে বন্ধের নোটিশ ঝুলছে।”

একইভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শ্রমিক শামীম। তিনি বলেন, “অনেক বছর ধরে এই কারখানায় কাজ করছি। কয়েক মাস ধরে বেতন দিতে গড়িমসি চলছে। এখন আন্দোলনের অজুহাতে কারখানা বন্ধ করে দিল, এটা শ্রমিকদের সঙ্গে চরম অন্যায়।”

আরেক শ্রমিক বিলকিস বেগম বলেন, “নয় বছর ধরে এখানে কাজ করছি। এই বয়সে অন্য কোনো কারখানায় কাজ পাওয়া কঠিন। এখন হঠাৎ করে চাকরি হারালাম, বেতনও পাইনি। আমাদের অপরাধটা কী?”

কারখানার মানবসম্পদ কর্মকর্তা মো.

মনির হোসেন বলেন, “গত ২৩ অক্টোবর শ্রমিকরা বেতন দাবির সময় কারখানার ভেতরে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি ভাঙচুর করেছে। এ কারণে কারখানা চালু রাখা সম্ভব নয়। মালিকপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ধারা ১৩(১) অনুযায়ী কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।”

এ বিষয়ে শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর আব্দুল লতিফ বলেন, “খবর পেয়ে সকাল থেকে কারখানায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করছেন। কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেছি, তারা সমস্যা সমাধানে কিছু সময় চেয়েছেন।”

ঢাকা/রফিক/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ বন র প শ ক অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

আল আরাফাহ্‌ ইসলামী ব্যাংকের এমডিকে অপসারণ

আল আরাফাহ্‌ ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফরমান আর চৌধুরীকে অপসারণের জন্য আজ সোমবার অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে তাঁকে অপসারণে অনুমতি চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করেছিল আল-আরাফাহ্‌ ইসলামী ব্যাংক। অনুমতি পাওয়ার পর ব্যাংকের চাকরি হারিয়েছেন তিনি। আল-আরাফাহ্‌ ইসলামী ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ বিলুপ্ত করে স্বতন্ত্র পরিচালকদের দায়িত্ব দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। গত এপ্রিলে এমডিকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়। এরপর নিরীক্ষায় তাঁর নানা অনিয়ম উঠে এলে তাঁকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয় ব্যাংকটি।

ব্যাংকটির নথিপত্র অনুযায়ী, ফরমান আর চৌধুরীকে যেসব কারণে অপসারণ করা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো নিয়োগে গুরুতর অনিয়ম, সিএসআর তহবিলের অপব্যবহার, খেলাপি ঋণ গোপন, নিরাপত্তা সঞ্চিতি না রেখে মুনাফা দেখানো, এজেন্ট ব্যাংকিং সেবায় অনিয়ম, অতিরিক্ত বোনাস ও বেতন বৃদ্ধি। এ ছাড়া বেতনের বাইরে অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে তিনি ফেরত দেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, এমডিকে অপসারণ বিষয়ে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে ব্যাংকটি বিতর্কিত ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সাইফুল আলমের (এস আলম) নিয়ন্ত্রণে ছিল। ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন এস আলমের ভাই আবদুস সামাদ। সরকার পরিবর্তনের পর ব্যাংকটিতে স্বতন্ত্র পরিচালকদের দায়িত্ব দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে ব্যাংকটির নানা অনিয়মের চিত্র উঠে এসেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ