চরফ্যাশনে আধুনিক বেতুয়া নদীবন্দর টার্মিনালের উদ্বোধন
Published: 27th, October 2025 GMT
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার মেঘনা নদীর তীরে নির্মিত আধুনিক ‘বেতুয়া নদীবন্দর টার্মিনাল ভবন’ উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ফিতা কেটে টার্মিনালটি যাত্রীদের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করেন।
উদ্বোধনকালে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমাদের নদীগুলো আমাদের ঐতিহ্যের বাহক ও জীবনের অংশ। নদীকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। ভোলার প্রায় ১৭ লাখ মানুষ এই টার্মিনালের সুবিধা ভোগ করবে। এর সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা সবার দায়িত্ব।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, মেঘনা নদী সাগরের অংশ হওয়ায় সাগর উত্তাল থাকলে এখানেও বিপদাপন্ন হয়। তাই সতর্কসংকেত চলাকালে নৌযান চলাচলে নিরাপত্তাবিধান মেনে চলতে হবে। ঢাকা-ভোলা-হাতিয়া নৌপথের খননকাজ চলমান, যাতে সারা বছর নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন নৌযান চলাচল নিশ্চিত করা যায়। তবে এ নৌপথে লঞ্চ চলাচলের জন্য ‘বে-ক্রসিং’ সনদ লাগবে।
বিআইডব্লিউটিএর ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসনা শারমিন, সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী হাসান, নদীবন্দরের উপপরিচালক মো.
চরফ্যাশনের আসলামপুর ইউনিয়নের বেতুয়া নদীর পাড়ে নির্মিত এই তিনতলা টার্মিনাল ভবনটি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়। ভবনটির আয়তন সাড়ে তিন হাজার বর্গফুট, যা ৮ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত। এতে আছে ভিআইপি অপেক্ষা কক্ষ, রেস্তোরাঁ, আধুনিক স্যানিটেশন, বিশ্রামাগার, স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ এবং যাত্রীদের নিরাপদে ওঠানামার জন্য শক্তিশালী গ্যাংওয়ে।
এরপর বিকেলে উপদেষ্টা চরফ্যাশনের দুলারহাট থানার নুরাবাদ ইউনিয়নে তেঁতুলিয়া নদীর তীরে ‘গাছিরখাল লঞ্চঘাট’-এর পন্টুন স্থাপনকাজের উদ্বোধন করেন। প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে নির্মিতব্য এই ঘাটে প্রতিদিন ৩০০-৩৫০ জন যাত্রী নিরাপদে নৌযানে উঠতে পারবেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম নগরের জনসংখ্যা আসলে কত লাখ, ৩২ নাকি ৬০
চট্টগ্রাম জেলার আয়তন সব মিলিয়ে ৩ হাজার ২৮২ বর্গমাইল। এর মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত এলাকার আয়তন ৬০ বর্গমাইলের মতো। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন—দুই সংস্থার হিসাবেই রয়েছে এমন তথ্য। তবে নগর বা সিটি করপোরেশন এলাকায় জনসংখ্যা কত তা নিয়ে এই দুই সংস্থার হিসাবে রয়েছে বিশাল ব্যবধান। সিটি করপোরেশনের হিসাবে যে সংখ্যক জনসংখ্যার কথা বলা হয়, তা পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবের প্রায় দ্বিগুণ।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, নগরে জনসংখ্যা আনুমানিক ৬০ লাখ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২২ সালের জনশুমারি ও গৃহগণনার তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকার জনসংখ্যা ৩২ লাখ ৩০ হাজার ৫০৭ জন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের হিসাব অবশ্য কোনো জরিপের ভিত্তিতে করা হয়নি, অনুমানের ভিত্তিতেই করা। উত্তর দিকে লতিফপুর-জঙ্গল সলিমপুর; দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ও কর্ণফুলী নদী; পূর্ব দিকে কর্ণফুলী নদী থেকে হালদা, চিকনদণ্ডী এবং পশ্চিম দিকে বঙ্গোপসাগর, ভাটিয়ারী ও জঙ্গল ভাটিয়ারী—কাগজে–কলমে এটিই চট্টগ্রাম নগরের সীমানা।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কোনো অঞ্চলে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের আগে সেখানে বসবাসকারী মানুষের প্রকৃত সংখ্যা নির্ভুলভাবে নির্ধারণ করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, জনসংখ্যার সঠিক হিসাব না থাকলে প্রকল্প পরিকল্পনা, বাজেট নির্ধারণ, অবকাঠামোর আকার, সেবাদানের সক্ষমতা—সবকিছুতেই ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার ঝুঁকি থাকে। এতে সরকারি সম্পদের অপচয় হয় এবং জনগণ প্রত্যাশিত সেবা পায় না।
নথিপত্রে জনসংখ্যার হিসাব
২০২২ সালের জনশুমারি ও গৃহগণনা অনুযায়ী, চট্টগ্রাম জেলার জনসংখ্যা ৯১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৬৫। এর মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এবং ১৫টি উপজেলা এলাকা রয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক প্রশাসনিক প্রতিবেদনে জনসংখ্যা দেখানো হয় আনুমানিক ৬০ লাখ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রশাসনিক প্রতিবেদনে জনসংখ্যা বলা হয় আনুমানিক ৭০ লাখ। অর্থাৎ করপোরেশন বলছে, তিন বছরে জনসংখ্যা ১০ লাখ বেড়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক প্রশাসনিক প্রতিবেদনে জনসংখ্যা দেখানো হয় আনুমানিক ৬০ লাখ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রশাসনিক প্রতিবেদনে জনসংখ্যা বলা হয় আনুমানিক ৭০ লাখ। অর্থাৎ করপোরেশন বলছে, তিন বছরে জনসংখ্যা ১০ লাখ বেড়েছে।নগরে ৭০ লাখের মতো জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ১৫ লাখ ভাসমান, এদের ভাসমান বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও ২০২৪ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১৯ লাখ ৫১ হাজার ৫২ জন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন তাঁদের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করেছে, মাত্র ছয় বর্গমাইল আয়তন নিয়ে ১৮৬৩ সালে যাত্রা শুরু করে চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যালটি। ১৯৮২ সালে পৌরসভাকে চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনে উন্নীত করা হয়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নামে যাত্রা শুরু হয় ১৯৯০ সালে। কর্মকর্তারা বলছেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন হিসেবে যাত্রা শুরুর সময় জনসংখ্যা ছিল ২০ লাখ। যদিও বিবিএসের হিসাবে ১৯৯১ সালে সিটি করপোরেশনে জনসংখ্যা ১৩ লাখ ৬৬ হাজার।
চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত