মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সাহসী ভূমিকার স্বীকৃতি পেলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা
Published: 27th, October 2025 GMT
ফ্যাসিবাদী শাসন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সাহসী ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরাকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। সোমবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস–২০২৫ উপলক্ষে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের আয়োজনে ‘ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনে রাষ্ট্রের দায়’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে খাদিজাতুল কুবরাকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়।
২০২০ সালের অক্টোবরে এক ফেসবুক ওয়েবিনারে অতিথির বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে খাদিজাতুল কুবরা ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটি মামলা করে পুলিশ। পুলিশ অভিযোগপত্র দাখিলের পর রাজধানীর কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় দায়ের করা এই মামলায় ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট খাদিজাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষার্থী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ১৪ মাস কারাগারে থাকার পর ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর মুক্তি পান।
এ বিষয়ে খাদিজাতুল কুবরা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এখন কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস নিতে পারব এই ভেবে যে আমি হারিয়ে যাইনি। আপনারা আমাকে মনে রেখেছেন ও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আমার পাশে আপনারা সব সময় থাকবেন এবং সাহায্য করে যাবেন। সব সময় বলে এসেছি এবং এখনো বলি, আমি ও আমরা চেষ্টা করব যাতে আমার মতো কারও মানবাধিকার ক্ষুণ্ন না হয়, কেউ যাতে কোনো নির্যাতনের শিকার না হয়, দেশে কোনো ফ্যাসিবাদের জন্ম না হয়। সবকিছুর উন্নয়নে কাজ করে যাব আমরা।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: খ দ জ ত ল ক বর ম নব ধ ক র
এছাড়াও পড়ুন:
এক লাখ কর্মী নিয়োগ: প্রধান উপদেষ্টাকে অগ্রগতি জানাল জাপানের প্রতিনিধিদল
বাংলাদেশ থেকে এক লাখ দক্ষ কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রগতি জানাতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে জাপানের ‘ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কোঅপারেটিভসের’ (এনবিসিসি) প্রতিনিধিদল।
রোববার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ২৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এ সময় প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও প্রধান উপদেষ্টার এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কোঅপারেটিভস হলো ৬৫টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানের একটি জাপানি ব্যবসায়িক ফেডারেশন। সম্প্রতি তারা দক্ষ বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের সুবিধার্থে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওআই) স্বাক্ষর করেছে।
এই চুক্তির লক্ষ্য জাপানে বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণ, সার্টিফিকেশন এবং কর্মসংস্থানের জন্য একটি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা, যার মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেনিং প্রোগ্রাম (টিআইটিপি) এবং স্পেসিফাইড স্কিলড ওয়ার্কার্সের (এসএসডব্লিউও) মতো কর্মসূচির আওতায় এক লাখের বেশি কর্মী নিয়োগ করা হবে।
জাপানের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা জানান, স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় প্রথম ধাপে আগামী বছর দুই হাজার দক্ষ কর্মী নিয়োগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। পরে ২০২৭ সালে ছয় হাজার ও ২০২৮ সালে ১৮ হাজার কর্মী নিয়োগ করা হবে।
এর মধ্যে নির্মাণ খাত, সেবা খাত, এভিয়েশন খাত, গার্মেন্টস ও কৃষিতে সবচেয়ে বেশি কর্মী প্রয়োজন বলে জানান জাপানি প্রতিনিধিরা। পাশাপাশি আগামী দিনে গাড়িচালক, অটোমোবাইল ও রিসাইক্লিং খাতে দক্ষ কর্মীর চাহিদা বাড়বে বলেও তাঁরা জানান।
বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের লক্ষ্যে খুলনা ও গাজীপুরের কাপাসিয়ায় দুটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সম্ভাব্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এনবিসিসি প্রতিনিধিদলের সদস্যরা কেন্দ্র দুটি পরিদর্শন করেছেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা কর্মীদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে কোনো ঘাটতি রয়েছে কিনা, তা জানতে চান।
প্রতিনিধিদলের প্রধান এনবিসিসিয়ের চেয়ারম্যান মিকিও কেসাগায়ামা বলেন, ‘আমি গত মার্চ মাসে ট্রেনিং সেন্টার দুটি পরিদর্শন করেছিলাম। এবার এসে অবাক হয়েছি। সাত মাসের মধ্যে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। প্রশিক্ষণ নিয়ে আমরা খুবই সন্তুষ্ট। আমরা আশাবাদী, আগামী বছরই দুই হাজার দক্ষ কর্মী নিয়োগ দিতে পারব।’
তবে প্রশিক্ষকদের ভাষাগত দক্ষতায় উন্নতি করা গেলে আরও ভালো হতে পারে বলে জানান তিনি।
‘ভাষাগত দক্ষতা অর্জনই বড় চ্যালেঞ্জ’ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এ জন্য ভার্চুয়াল ক্লাস নেওয়া যেতে পারে। জাপান থেকে শিক্ষকেরা অনলাইনে ক্লাস নেবেন। পাশাপাশি, জাপান থেকে প্রশিক্ষকদের এখানে নিয়ে এসে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় কিনা, সেটিও বিবেচনা করা যেতে পারে।’
এ সময় বাংলাদেশের নারীদের পারদর্শিতা ও কঠোর পরিশ্রমের কথাও উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, কেয়ারগিভিং সেক্টরে বাংলাদেশের নারীরা অনন্য। তারা অত্যন্ত যত্নশীল। ভাষাগত দক্ষতা ও অন্যান্য প্রশিক্ষণ পেলে বাংলাদেশের মেয়েরা জাপানের কেয়ারগিভিং সেক্টরে অনন্য ভূমিকা রাখবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে কিছুটা কঠিন মনে হলেও বাংলাদেশের মেয়েদের একবার শিখিয়ে দিলে তারা নিজেরাই অন্যদের শেখাতে পারবে। একবার যাওয়া শুরু হলে অন্যরাও উৎসাহ পাবে।’
এনবিসিসি প্রতিনিধিরা জানান, আগামী কয়েক বছরে জাপানে ৪ লাখের বেশি দক্ষ নার্সের প্রয়োজন হবে। তারা বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি নার্স নিয়োগের বিষয়ে বিবেচনা করবেন।
বৈঠকে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, সরকার জাপানে কর্মী নিয়োগে অগ্রগতি নিয়মিত পর্যালোচনা করছে। এ ব্যাপারে সরকার একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করবে বলে জানান তিনি।
মন্ত্রণালয় থেকে জাপানে কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্যা নিরসনে একটি নির্দিষ্ট সেল গঠন করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা।