গর্ভাবস্থায় দাঁতের যত্ন শিশুর অকালজন্মের ঝুঁকি কমায়
Published: 28th, October 2025 GMT
প্রিম্যাচিউর বা সময়ের আগে শিশুর জন্ম বিশ্বের অন্যতম স্বাস্থ্য সমস্যা। প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে প্রায় দেড় কোটি শিশু অকালে জন্মায়। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এ সমস্যার পেছনে মায়ের দাঁত ও মুখগহ্বরের খারাপ স্বাস্থ্যের একটি নীরব; কিন্তু কার্যকর ভূমিকা রয়েছে।
গর্ভকালে নারীদের হরমোন পরিবর্তন হয়। এ কারণে অনেক নারী মাড়ির প্রদাহ ও রক্তক্ষরণে ভোগেন। যদি দাঁতের যত্ন ঠিকমতো নেওয়া না হয়, তবে প্লাক ও টারটার (দাঁতে জমে থাকা পদার্থ) জমে মুখে ক্ষতিকর জীবাণু বৃদ্ধি পায়। এর ফলে জিনজিভাইটিস বা পেরিওডন্টাইটিস (মাড়ির রোগ) দেখা দেয়। এই রোগগুলো থেকে রক্তে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন ও সাইটোকাইন নামক প্রদাহজনিত রাসায়নিক ছড়িয়ে পড়ে। এগুলো জরায়ুর সংকোচন বাড়িয়ে সময়ের আগে শিশুর জন্ম ও শিশুর ওজন কম হওয়ার ঝুঁকি তৈরি করে।
অকালে জন্মের জটিলতা
শুধু মাড়ির রোগ নয়, দাঁতের ক্যাভিটির মতো সংক্রমণও রক্তের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এটা থেকে মা ও ভ্রূণের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। মায়ের শরীরে প্রদাহ থাকলে শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, যা জন্মের পর দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি তৈরি করে।
শুধু মাড়ির রোগ নয়, দাঁতের ক্যাভিটির মতো সংক্রমণও রক্তের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এটা থেকে মা ও ভ্রূণের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।সময়ের আগে জন্ম নেওয়া শিশু শুধু মা নয়, পুরো পরিবারের জন্য এক কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করে। অনেক ক্ষেত্রে নবজাতককে ইনকিউবেটরে রাখতে হয়। জন্মের পর শিশু শ্বাসকষ্ট, সংক্রমণ ও বিকাশজনিত নানা সমস্যায় ভোগে। এসবের চিকিৎসা ব্যয়বহুল। পাশাপাশি শিশুর এ ধরনের সমস্যা তার পরিবারকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। এসব শিশুর পরবর্তী জীবনেও নানা শারীরিক জটিলতা হতে পারে।
করণীয়
প্রতিদিন নিয়মিতভাবে দাঁত ব্রাশ ও ফ্লস ব্যবহার করা।
মিষ্টি খাবার কম খাওয়া ও সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা।
গর্ভাবস্থায় অন্তত একবার দাঁতের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।
যেকোনো দাঁতের সমস্যায় দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া।
প্রিম্যাচিউর বা সময়ের আগে শিশুর জন্মের পেছনে নানা কারণ থাকলেও, মায়ের মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য একটি অবহেলিত, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ দিক। সচেতনতা ও সামান্য যত্ন অনেক বড় ঝুঁকি প্রতিরোধ করতে পারে।
ডা.
শারমীন জামান, ওরাল অ্যান্ড ডেন্টাল সার্জন, ফরাজি ডেন্টাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মোহাম্মদপুর ও আদাবরে সেনা অভিযানে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ৪
রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবরে অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তাঁদের মধ্যে দুজন কিশোর গ্যাং সদস্য ও দুজন মাদক ব্যবসায়ী। গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়।
আজ শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শেরেবাংলা নগর, মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানা এলাকায় কার্যক্রম পরিচালনা করা সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র ব্রিগেডের সদস্যরা এই অভিযান চালান। অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া আসামি ও উদ্ধার হওয়া দেশীয় অস্ত্র মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। মোহাম্মদপুর থানা পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেবে।
অভিযানে একটি দেশীয় সামুরাই অস্ত্রসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন মো. সুজন ব্যাপারী (২৭) ও মো. রাব্বি (২২)। তাঁরা দুজনই চিহ্নিত কিশোর গ্যাং সদস্য, যাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক ছিনতাই ও ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে একটি দোতলা ভবনের ছাদ থেকে পাশের টিনশেডের ওপর ঝাঁপ দিয়ে তাঁরা কিছুটা আহত হন। পরে তাঁদের গ্রেপ্তার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
মাদক ও মাদক বিক্রির অর্থসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়