হিজাব নিয়ে মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলেন রাবি অধ্যাপক
Published: 28th, October 2025 GMT
হিজাব নিয়ে ‘বিতর্কিত’ মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ. আল মামুন।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় ফেসবুক পোস্টে তিনি ক্ষমা চান।
সেখানে তিনি লিখেছেন, “আমি এক এগারোর সরকারের বিরুদ্ধে মিছিল করে জেল খেটেছি। ২০১৩ সাল থেকে নানাভাবে ক্যাম্পাসে ও ক্যাম্পাসের বাইরে জুলুম-অত্যাচারের ক্রিটিক করেছি ২০২৪ পর্যন্ত, ফেসবুকে এবং বইপত্রে। সে সব ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। জুলাই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলাম। শিক্ষক হিসেবে আন্দোলনকারীদের আগলে রেখেছিলাম। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনমুহূর্তে স্বপ্ন দেখেছিলাম সম্পূর্ণ নতুন এক বাংলাদেশের। কিন্তু এরপরে বহু ঘটনা ঘটেছে, যেমন চেয়েছিলাম, বাংলাদেশ সেদিকে হাঁটেনি। ব্যাপক হতাশা কাজ করে আমার মধ্যে।”
এমন কিছু লেখা উচিত হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “হতাশাগ্রস্ত আমি ঝোঁকের বশে এমন কিছু লিখি যা লেখা উচিত হয়নি। তা আমি লিখতে চাইওনি। মিস রিডিং হবে বুঝতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে আমি পোস্টটি সরিয়ে নিই। পোশাক বিষয়ে আমার ভাবনা পরিষ্কার- পোশাকের কারণে আমি কাউকে বড় বা ছোট করে দেখি না। ‘হিজাব’ ডিফেন্ড করার মতো অনেক পোস্ট পাবেন আমার। এ শিক্ষা আমার ‘সন্ত্রাসবিরোধী অনন্ত যুদ্ধ’র ক্রিটিক করতে গিয়েই হয়েছে। ফলে আপনারা যা ভাবছেন- সে রকম কোন উপহাস বা তাচ্ছিল্য আমি করি না। এক মুহুর্তে পোষ্ট করে পারসোনালাইজ করেছিলাম- এ নিয়ে আরও ভাবনা-চিন্তা করার জন্য। কিন্তু সেই মুহুর্তেই কেউ এ পোস্ট স্ক্রিনশট নিয়ে ছড়িয়ে দেয়। খেয়াল করলে দেখবেন, ওই পোস্টে কোন লাইক, কমেন্ট, শেয়ার কিছু নাই, কোন ইন্টারএকশন নাই!”
দুঃখ প্রকাশ করে তিনি লেখেন, “তারপরও কেউ আঘাত পেয়ে থাকলে, আমি দুঃখিত। আমি সবসময়ই শিক্ষার্থীদের জন্য শুভকামনা করি। আশা করি, বিভ্রান্তিকর উত্তেজনা এবার প্রশমিত হবে। আমি চাই না, আমাকে কেন্দ্র করে যে উত্তেজনা ছড়িয়েছে তার প্রেক্ষিতে আমার বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী কোন প্রকার অসুবিধার সম্মুখীন হোক, বা অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে কলহে জড়াক! শুভকামনা সবার জন্য।”
এদিকে তার বিচারের দাবিতে আজ বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর স্মারক লিপি দিয়েছেন রাকসুর প্রতিনিধিরা। এর আগে গতকাল রাত ১১টায় তার মন্তব্যের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা/ফাহিম/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রায়েদ সাদকে হত্যা যুদ্ধবিরতির স্পষ্ট লঙ্ঘন: হামাস
গাজা নগরীতে ইসরায়েলের হামলায় দলের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার রায়েদ সাদ নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে গতকাল শনিবার হামাসের এই নেতাকে হত্যার দাবি করেছিল।
শনিবারের ওই হামলায় ৫ জন নিহত এবং অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
হামাস এ হামলার বিষয়ে বিবৃতি দিলেও প্রথমে রায়েদ সাদ নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। তখন হামাস বলেছিল, গাজা নগরের বাইরে একটি বেসামরিক গাড়িতে হামলা হয়েছে। এই হামলা অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
পরে আজ রোববার এক ভিডিও বার্তায় হামাসের গাজাপ্রধান খলিল আল-হাইয়া বলেন, গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত পাঁচজনের মধ্যে রায়েদ সাদও রয়েছেন।
খলিল আল-হাইয়া বলেন, ‘ইসরায়েল বারবার যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে যাচ্ছে, যার সর্বশেষ সংযোজন হামাস কমান্ডারকে (রায়েদ সাদ) হত্যা। গতকালই এ ঘটনা ঘটেছে। এই প্রেক্ষাপটে আমরা সব মধ্যস্থতাকারী এবং বিশেষ করে চুক্তির প্রধান নিশ্চয়তাদাতা হিসেবে মার্কিন প্রশাসন ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আহ্বান জানাই, তাঁরা যেন ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্মান করতে ও তা মেনে চলতে বাধ্য করেন।’
রায়েদ সাদ হত্যাকাণ্ড অক্টোবরে গাজায় একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর হামাসের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতাকে হত্যার প্রথম ঘটনা।এর আগে টেলিগ্রামে এক পোস্টে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছিল, ওই কমান্ডার (রায়েদ সাদ) হামাসের সক্ষমতা পুনর্গঠনে কাজ করছিলেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েলে হামাসের হামলা পরিকল্পনাকারীদের একজন ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুনজ্যেষ্ঠ হামাস নেতা রায়েদ সাদকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের১৭ ঘণ্টা আগেরায়েদ সাদ হত্যাকাণ্ড অক্টোবরে গাজায় একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর হামাসের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতাকে হত্যার প্রথম ঘটনা।
একজন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, রায়েদ সাদকে লক্ষ্য করেই এ হামলা চালানো হয়েছিল। তিনি রায়েদ সাদকে হামাসের অস্ত্র তৈরি শাখার প্রধান বলে দাবি করেন।
হামাস সূত্র রায়েদ সাদকে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসাম ব্রিগেডের সেকেন্ড ইন কমান্ড তথা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্মকর্তা বলে জানিয়েছে। এই সূত্রগুলো বলেছে, সাদ আগে হামাসের গাজা সিটি ব্যাটালিয়নের প্রধান ছিলেন। হামাসের সবচেয়ে বড় ও অস্ত্রসজ্জিত ব্যাটালিয়নের একটি এটি।
অক্টোবরে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও গাজায় ইসরায়েলের হামলা থামেনি। অক্টোবরে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ইসরায়েলের প্রায় ৮০০ বার গাজায় হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৩৮৬ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে
আরও পড়ুনগাজার ‘হলুদ রেখা’ থেকে সরবে না সেনা, এটিই নতুন সীমান্ত: ইসরায়েলি বাহিনীর প্রধান০৯ ডিসেম্বর ২০২৫