৬ অক্টোবর ২০২৫ দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদকীয়, ‘তথ্য আপা, ডে কেয়ার ও জয়িতা: নারীর ক্ষমতায়ন প্রশ্নে আপস নয়’, আমাকে বর্তমান নিবন্ধটি লিখতে তাড়িত করেছে। সম্পাদকীয়টিতে জয়িতা উদ্যোগ সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা নেই। যদিও পরিসরগত কারণে সম্পাদকীয়তে বিস্তারিত লেখার সুযোগও থাকে না। মূলত তথ্য ৪ অক্টোবর ২০২৫ সালের প্রথম আলোতে প্রকাশিত ‘আপা, জয়িতা, ডে কেয়ারের কর্মীদের কী হবে’– প্রতিবেদন থেকে এ সম্পাদকীয় লেখা হয়। যাই হোক, আমি এ লেখায় জয়িতা ও এর কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে চাই।

জয়িতা উদ্যোগের সূতিকাগার মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর। জয়িতার সূচনালগ্নে আমি মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ছিলাম। পরবর্তী সময়ে জয়িতার উদ্যোগটিকে স্থায়িত্বশীল করার লক্ষ্যে একটি স্বতন্ত্র স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে জয়িতা ফাউন্ডেশন গড়ে তোলা হয়। ফাউন্ডেশনেরও আমি প্রতিষ্ঠাকালীন প্রথম ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলাম। তাই আমি আগের সম্পাদকীয় প্রকাশের প্রেক্ষাপটে জয়িতা উদ্যোগের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, কৌশল, ক্রমবিকাশ এবং বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে একটি ধারণা দেওয়ার তাগিদ অনুভব করছি।

জয়িতা কী

জয়িতা একটি স্বপ্নের নাম। ব্যবসা অঙ্গনে নারীকে বিজয়ী দেখার স্বপ্ন। ব্যবসার সঙ্গে বাজারের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। পুরুষ প্রাধান্যমূলক প্রচলিত বাজার ব্যবস্থায় নারীর অবস্থান খুবই নাজুক। তা ছাড়া পিতৃতান্ত্রিক সমাজের প্রচলিত রীতিনীতি ও ধারণা নারীদের ব্যবসায়ী হিসেবে বিকশিত হওয়ার জন্য অনুকূল নয়। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। ব্যবসা অঙ্গনে সীমাহীন কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও নারী সেখানে তার ন্যায্য হিস্যা পাচ্ছে না। সমাজের সুষম উন্নয়নের স্বার্থে এ অচলায়তন ভাঙতে হবে। নারীকে উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে ব্যবসা অঙ্গনে সফল নারীর প্রতীকী নাম রাখা হয়েছে ‘জয়িতা’।

জয়িতা ফাউন্ডেশন কী

সমাজ তথা সামাজিক উপরি কাঠামো যেখানে নারীদের জন্য ব্যবসাবান্ধব নয়, সেখানে তিন বা পাঁচ বছরের সময়াবদ্ধ কোনো প্রকল্পের মাধ্যমে এ অচলায়তন ভাঙা সম্ভব নয়। প্রয়োজন একটি স্থায়িত্বশীল এবং লাগসই অবয়বের প্রতিষ্ঠান। এ কথা চিন্তা করেই জয়িতা ফাউন্ডেশনকে একটি স্থায়ী স্বায়ত্তশাসিত ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। জয়িতা ফাউন্ডেশনের ট্যাগ লাইন হচ্ছে ‘নারীকে ব্যবসা উদ্যোগে সাহায্য ও সহায়তার জন্য’। ফাউন্ডেশনের অনুমোদিত লোগোতে তা লিপিবদ্ধ রয়েছে। জয়িতা ফাউন্ডেশনকে সরকারের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণাধীন একটি ছকবদ্ধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে না তুলে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে, যাতে ব্যবসার মতো একটি নিয়ত পরিবর্তনশীল বিষয়ের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানগত নমনীয়তা থাকে। প্রতিষ্ঠানটিকে অলাভজনক করা হয়েছে। কারণ, জয়িতা ফাউন্ডেশন নিজে মুনাফা অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে চলবে না; জয়িতা ফাউন্ডেশন মুনাফা অর্জনকারী ব্যবসা করতে নারীদের ব্যবসাবান্ধব অনুকূল পরিবেশ প্রদান ও ব্যবসার জন্য সব ধরনের সহায়তা করবে।

জয়িতা ফাউন্ডেশনের কৌশল কী

দুটি কাজ জয়িতা ফাউন্ডেশন প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশল অবলম্বন করেছে। যথা—

ক.

জয়িতা ফাউন্ডেশনের নিজস্ব বিপণন নেটওয়ার্ক (বাজারব্যবস্থা) পর্যায়ক্রমে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ে সম্প্রসারণ করা, যেখানে শুধু নারীদের উৎপাদিত ও প্রক্রিয়াজাত পণ্য ও সেবা বিপণন করা হবে। সে লক্ষ্যে ঢাকায় (ধানমন্ডির পুরাতন ২৭ নম্বর সড়কে) জয়িতা ফাউন্ডেশনের নিজস্ব কেন্দ্রীয় অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। তা ছাড়া ঢাকার বাইরে দেশের সাতটি বিভাগীয় শহরে ফাউন্ডেশনের নিজস্ব বিপণন অবকাঠামো নির্মাণের জন্য উপযুক্ত জমির সংস্থান করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে বিপণন নেটওয়ার্ক জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ক্রমে সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা রয়েছে। ফাউন্ডেশন প্রত্যক্ষভাবে ব্যবসা না করলেও বিপণন নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশনের প্রত্যক্ষ ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে।

খ. জয়িতা ফাউন্ডেশনের সব বিপণন কেন্দ্রে ‘জয়িতা’ নামীয় একক ও অভিন্ন ব্র্যান্ডে সব পণ্য/সেবা বিপণন করা হবে। ফাউন্ডেশন কালক্রমে জয়িতার সর্বজনগ্রাহ্য ও বিশ্বাসযোগ্য ব্র্যান্ড ইমেজ গড়ে তোলার জন্য পণ্যের/সেবার গুণগত ও নান্দনিক মান, যুক্তিসংগত মূল্য, বিপণন কেন্দ্রগুলোতে পণ্যের ক্রেতাবান্ধব ডিসপ্লে ও ক্রেতাবান্ধব আচরণ ইত্যাদি সুনিশ্চিত করবে। জয়িতা নামীয় এ ব্র্যান্ডের স্বত্বাধিকারী হবে জয়িতা ফাউন্ডেশন। দেশের সব নারী উদ্যোক্তা শর্ত পালন সাপেক্ষে তাদের নিজ নিজ পণ্য বিপণনের জন্য জয়িতা ব্র্যান্ড ও জয়িতা ফাউন্ডেশনের বিপণন নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। বিক্রয়োত্তর অর্জিত সম্পূর্ণ মুনাফা পণ্য/সেবা জোগানদানকারী নারী উদ্যোক্তা পাবেন।

কৌশলের যৌক্তিকতা কী

নিম্নে বর্ণিত যৌক্তিকতার আলোকে উপরিউক্ত দুটি পরিচালনা কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে:

ক. ব্যবসা অঙ্গনে সমাজের অর্ধেক জনগোষ্ঠী—নারীদের বিদ্যমান পশ্চাৎপদতার প্রেক্ষাপটে, যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সত্যিকার অর্থে নারীদের ব্যবসা অঙ্গনে তুলে আনতে হলে নারীদের প্রতি পক্ষপাতমূলক এ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের নৈতিক ও যৌক্তিক ভিত্তি রয়েছে। শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রীদের উপবৃত্তি যে যুক্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত, আজকের শিক্ষিত নারীদের সম্মানজনক কর্মসংস্থানের ব্যাপক চাহিদার প্রেক্ষাপটে দেশব্যাপী নারীবান্ধব একটি আলাদা বাজারব্যবস্থা প্রচলিত পুরুষ প্রাধান্যমূলক বাজার ব্যবস্থার সমান্তরালে গড়ে তোলা একই যুক্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত।

খ. ব্যবসা অঙ্গনে নারীরা এতটাই প্রান্তিক যেকোনো নারী ব্যবসায়ীর পক্ষে বিপণন উপযোগী পণ্য বা সেবা উৎপাদন/প্রস্তুতকরণ এবং পাশাপাশি তা বাজারে বিপণন করা একটি অত্যন্ত শ্রমঘন ও পুঁজিঘন কাজ। সেখানে নারীর প্রবেশগম্যতা আমাদের সমাজ বাস্তবতায় অত্যন্ত সীমিত। কারণ, সমাজের প্রচলিত প্রথায় এখনো নারীদের গৃহস্থালির কাজ এড়িয়ে চলার যেমন উপায় নেই, তেমনি ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় পুঁজির জোগানেও নারীদের প্রবেশগম্যতা অত্যন্ত সীমিত। তাই নারী ব্যবসায়ীদের উৎপাদিত পণ্য বা প্রক্রিয়াজাত সেবা পেশাদারির সঙ্গে বিপণনের দায়িত্বভার জয়িতা ফাউন্ডেশন নিয়ে নারী উদ্যোক্তাদের কিছুটা ভারমুক্ত করার পরিকল্পনা করেছে।

গ. ‘জয়িতা’ নামীয় একটি অভিন্ন ও বিশ্বস্ত ব্র্যান্ড ইমেজ গড়ে তোলা, নিয়ত ব্র্যান্ড ইমেজটি পরিচর্যা ও যথাযথ সংরক্ষণের দায়িত্ব জয়িতা ফাউন্ডেশনের ওপর ন্যস্ত। এ কথা সর্বজনবিদিত যে আজকাল কোনো ব্যবসাই ব্র্যান্ড ইমেজ ব্যতীত স্থায়িত্বশীল হয় না। জয়িতা ফাউন্ডেশন যেহেতু একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজে ব্যবসা না করে নারীকে ব্যবসা উদ্যোগে সাহায্য–সহযোগিতার জন্য নিয়োজিত, সেহেতু জয়িতার অভিন্ন ও অনন্য দেশব্যাপী ব্র্যান্ড ইমেজ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন যথাযথ ভূমিকা পালন করতে সমর্থ হবে। ব্র্যান্ড ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়—এমন অসাধু কাজ ফাউন্ডেশন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে।

ঘ. জয়িতা ফাউন্ডেশনের পরিকল্পিত উপরিউক্ত বিজনেস মডেলটি সচল হলে দেশের আনাচ–কানাচে নজরকাড়া পণ্য উৎপাদনে আগ্রহী নারীদের পারিবারিক দায়দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আয়বর্ধক স্বকর্মসংস্থানের সুযোগ অবাধ হবে। ফলে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নসহ দেশের সুষম ও স্থায়িত্বশীল উন্নয়নে গতিসঞ্চারিত হবে বলে জয়িতা ফাউন্ডেশন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে।

জয়িতা ফাউন্ডেশনের অর্জন কী

আগের বিজনেস মডেল অনুসরণ করে ব্যবসা অঙ্গনে নারীদের সম্মানজনক জীবিকায়নের পথটি সুগম করার জন্য জয়িতা ফাউন্ডেশন নিম্নবর্ণিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করে:

ক. সোসাইটিস রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট ১৮৮৬–এর আওতায় জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস-এ জয়িতা উদ্যোগটি ‘জয়িতা ফাউন্ডেশন’ শিরোনামে একটি স্বশাসিত ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছে। ফলে ‘জয়িতা’ উদ্যোগটি একটি স্থায়ী আইনি প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়েছে।

খ. জয়িতা ফাউন্ডেশনের নিজস্ব স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণের লক্ষ্যে ঢাকা শহরের অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা ধানমন্ডির পুরাতন ২৭ নম্বর রোডে এক বিঘা আয়তনের একখণ্ড জমি বাণিজ্যিক কাজের জন্য স্থায়ীভাবে বরাদ্দ পেয়েছে।

গ. আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য তৎকালীন সরকার ফাউন্ডেশনের সূচনালগ্নেই পর্যায়ক্রমে ১০০ কোটি টাকা সিড ক্যাপিটাল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। প্রতিশ্রুতির ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর ১০ কোটি হিসেবে পরবর্তী চার বছরে সরকার থেকে জয়িতা ফাউন্ডেশন ৪০ কোটি টাকা সিড ক্যাপিটাল প্রাপ্ত হয়, যা রিজার্ভ তহবিল হিসেবে ব্যাংকে এফডিআর করে রাখা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে অবশিষ্ট টাকা পাওয়া গিয়েছিল কি না, জানা নেই।

ঘ. ধানমণ্ডিতে জয়িতা ফাউন্ডেশনকে প্রদত্ত ভূমিতে ১২তলা জয়িতা টাওয়ার নির্মাণের জন্য প্রায় ১৬০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদিত হয়। ওই অর্থায়নে ইতিমধ্যে ধানমন্ডির পুরাতন ২৭ নম্বর রোডে জয়িতা টাওয়ার নির্মিত হয়েছে। ওই টাওয়ারে ফাউন্ডেশনের নিজস্ব অফিস, বিভিন্ন তলায় দেশের নারী উদ্যোক্তা উৎপাদিত/প্রক্রিয়াজাত পণ্য বিপণনের সুবিধা ও উদ্যোক্তার প্রশিক্ষণ–সুবিধাসহ নারীকে ব্যবসা উদ্যোগে সাহায্য–সহায়তার জন্য আনুষঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালনার স্পেস বরাদ্দের পরিকল্পনা রয়েছে।

ঙ. জয়িতা ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম সব বিভাগীয় পর্যায়ে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ঢাকার বাইরে দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে ফাউন্ডেশনের জন্য সরকার উপযুক্ত জায়গা (প্রায় এক বিঘা করে) বরাদ্দ করেছে। বিভাগীয় শহরের জায়গাগুলোতে ঢাকার মতো জয়িতা বিপণনকেন্দ্র ও নারীকে ব্যবসা উদ্যোগে সাহায্য ও সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় সব সুবিধা অবকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

চ. নারী উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় ঋণসহায়তা দেওয়ার জন্য ৫০ কোটি টাকার একটি রিভলভিং ফান্ডেরও সংস্থান করা হয়েছে।

জয়িতা ফাউন্ডেশনের বর্তমান অবস্থা কী

ব্যবসা অঙ্গনে নারীর অংশগ্রহণের পথটি মসৃণ করে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের মাধ্যমে দেশের সুষম ও স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন একটি অপরিহার্য করণীয়। এ বাস্তবতায় দেশের নারীসমাজকে ব্যবসা উদ্যোগে সাহায্য–সহযোগিতার জন্য বিশেষায়িত জাতীয়ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে জয়িতা ফাউন্ডেশনের জন্ম ও ক্রমবিকাশ নিঃসন্দেহে একটি সময়ানুগ উদ্যোগ।

কিন্তু উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে রাজধানী ঢাকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান ধানমন্ডি পুরাতন ২৭ নম্বর রোডে জয়িতা টাওয়ার মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকলেও সেখানে বর্তমানে নারীকে ব্যবসা উদ্যোগে সাহায্য–সহায়তার কোনো কার্যক্রম চলমান আছে বলে মনে হয় না। নারীদের পণ্য বিপণনের কোনো কাজ সেখানে হয় না। দেশের অন্য সাতটি বিভাগীয় শহরে দৃষ্টিনন্দন স্থানে জয়িতা ফাউন্ডেশনের নামসর্বস্ব সাইনবোর্ড থাকলেও আজ অবধি সেসব স্থানে কোনো কাজ তো দূরের কথা, কোনো অবকাঠামোই গড়ে ওঠেনি।

শেষ কথা

প্রথম আলোর আগের সম্পাদকীয়তে বর্ণিত পর্যবেক্ষণের প্রেক্ষাপটে আমিও ঐকমত্য পোষণ করি যে দেশের সুষম ও স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন প্রশ্নে নারীর সার্বিক ক্ষমতায়নে কোনো ধরনের আপস করার অবকাশ নেই। নারীর সার্বিক ক্ষমতায়নের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন। কর্মসংস্থানই হচ্ছে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের নির্ভরযোগ্য অবলম্বন। ব্যবসা অঙ্গনই হচ্ছে ব্যাপক কর্মসংস্থানের অপার সম্ভাবনার ক্ষেত্র। ব্যবসা অঙ্গনের দরজা নারীর জন্য রুদ্ধ রেখে দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী—নারীর কর্মসংস্থান তথা ক্ষমতায়ন সুনিশ্চিত করা অসম্ভব ও অলীক কল্পনা।

এমতাবস্থায়, প্রথম আলোর মতো আমারও শঙ্কা হয়, সরকার পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ব্যবসা অঙ্গনে নারীর সম্মানজনক স্বকর্মসংস্থানের একটি অপরিহার্য ও অনন্য উদ্যোগ জয়িতা ফাউন্ডেশন কি তাহলে কোনো বাছবিচার ব্যতীত শুধু পূর্ববর্তী সরকারের উদ্যোগ হিসেবে বর্তমান সরকারের অবহেলার শিকার হচ্ছে? অভিজ্ঞ মহলের বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি রাখে। নইলে উদ্যোগটির অপমৃত্যু হবে। দেশের সুষম ও স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন প্রশ্নে নারীর সার্বিক ক্ষমতায়ন অধরাই থেকে যাবে।

মো. আশরাফ হোসেন জয়িতা ফাউন্ডেশনের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক

*মতামত লেখকের নিজস্ব

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য প র স হ য য সহ প রথম আল ত র জন য উদ য ক ত র লক ষ য ব পণন র অবক ঠ ম ব পণন ক ধ নমন ড র ব যবস প রচল ত ব যবস থ ব যবস র পরবর ত উদ য গ সহ য ত পর চ ল পর য য় জয় ত র ন র জন সরক র উৎপ দ

এছাড়াও পড়ুন:

চরাঞ্চলে মাষকলাই চাষ

২ / ৮বাড়ন্ত মাষকলাইয়ের গাছ

সম্পর্কিত নিবন্ধ