নির্বাচনী প্রতীকসংক্রান্ত বিধান অপরিবর্তিত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো যদি জোটভুক্ত হয়ে নির্বাচন করতে চায়, তাহলে তারা যেন নিজেদের প্রতীক বা জোটের অন্য কোনো প্রতীক ব্যবহার করার স্বাধীনতা পায়—এই বিধানটাই বহাল থাকা উচিত। আজ মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সম্প্রতি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ২০ ধারার এক উপধারায় সংশোধন এনে বলা হয়েছে, যদি কোনো রাজনৈতিক দল জোটভুক্ত হয়, তবে সেই নিবন্ধিত দল নিজস্ব প্রতীকেই নির্বাচন করতে বাধ্য থাকবে। আগে এ বিধানে দলগুলোকে নিজস্ব প্রতীক বা জোটের প্রতীক—দুটির মধ্যে যে কোনোটি বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া ছিল।

সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলোর মধ্যে অধিকাংশ বিষয়ে বিএনপি একমত পোষণ করেছে। এর মধ্যে ছিল ‘না ভোট’-এর বিধান, প্রার্থীদের জামানত বৃদ্ধি, নির্বাচনে অনিয়ম হলে কমিশনের এখতিয়ার বাড়ানো, আচরণবিধি ভঙ্গের জরিমানা বৃদ্ধি ইত্যাদি। তবে প্রতীকসংক্রান্ত সংশোধনীটির সঙ্গে তাঁরা একমত নন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এ বিষয়ে আগেই নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছেন। পাশাপাশি আইন মন্ত্রণালয়ে খসড়া পাঠানোর পর তিনি অনানুষ্ঠানিকভাবে আইন উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করেন। তখন উপদেষ্টা বলেছিলেন, বিষয়টি সরকারের নজরে আনবেন এবং সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেও আলোচনা করে দেখবেন। এতে একটি বিহিত হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেছিলেন।

পরে বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আলোচনা হলেও ওই সংশোধনী অপরিবর্তিত থেকেছে জানিয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, তাই আজ তিনি দলের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে আইন উপদেষ্টার কাছে আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন। একই ধরনের চিঠি বিএনপির মহাসচিবের স্বাক্ষরে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছেও পাঠানো হয়েছে।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা মনে করি, বহু দলের অংশগ্রহণে জাতীয় সংসদ আরও সমৃদ্ধ হয়। ছোট দলগুলোর মধ্যেও অনেক যোগ্য ও অভিজ্ঞ নেতা আছেন। তাঁরা যদি সংসদে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ পান, তাহলে নীতিনির্ধারণ ও আইন প্রণয়নে বৈচিত্র্য ও ভারসাম্য আসবে। সে কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতীক ব্যবহারের স্বাধীনতা আগের মতোই থাকা উচিত।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন আহমদ উপদ ষ ট দলগ ল ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগের ভোট পেতে একটি দল তাদের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করে না: সালাহউদ্দিন আহমদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘একটি দল আওয়ামী লীগের ভোট প্রাপ্তির জন্য আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করে না।’

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সালাহউদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন। বিজয়ের মাস উপলক্ষে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, মিরপুর বাঙলা কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, তিতুমীর কলেজ, ঢাকার বিভিন্ন ইউনিটের নারীনেত্রী এবং ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ও বর্তমান নেতারা অংশ নেন।

একটি দলকে ইঙ্গিত করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ইনিয়ে-বিনিয়ে বলছে যে তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল। আমরা মাঝেমধ্যে জিজ্ঞাসা করি, সেই মুক্তিযুদ্ধ কি পাকিস্তানের পক্ষে ছিল? জনগণের সামনে কিছুদিন পরে তারা হয়তো বলবে যে তারাই একমাত্র মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, আমরা করিনি। এ রকম অনেক বক্তব্য আপনারা ভোটের ময়দানে শুনতে পাবেন। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ অনেক সচেতন। এখন আর ধর্মের বিড়ি বিক্রি করে বাংলাদেশের জনগণের সামনে ভোট চাওয়া যাবে না। তারপরও আমাদের মাঠে–ময়দানে পরিকল্পনা নিয়ে যেতে হবে।’

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘যারা নিজের দেশের নাগরিককে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে হত্যা করেছে, নারী–শিশুনির্বিশেষে শতসহস্র মানুষকে হত্যা করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে, এই ইতিহাস যেন আমরা ভুলে না যাই।’

বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত ‘শ্বেতপত্র’–এর কথা উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আওয়ামী লীগ যে পরিমাণ টাকা তছরুপ করেছে, সেটা দিয়ে বাংলাদেশের দুটি শিক্ষা বাজেট করা যায়। তিনটি স্বাস্থ্য বাজেট করা যায়। ব্যাংকিং ও নন–ব্যাংকিং ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর থেকে যে লুটপাট হয়েছে, রাজনৈতিক বিবেচনায় যে ঋণ দেওয়া হয়েছে, যেটি তছরুপ হয়েছে, সেটা দিয়ে ২৪টি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা যেত। ১৪টি মেট্রো সিস্টেম নির্মাণ করা যেত। বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে ব্যাংকিং লুটপাটের মধ্য দিয়ে, সেটা বিলিয়ন ডলারে না বলে অঙ্কে বোধ হয় ২৯ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা প্রসঙ্গেও অনুষ্ঠানে কথা বলেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক যাত্রাকে বিভিন্নভাবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শক্তিশালী করার জন্য গণতন্ত্রের উত্তরণ হতে হবে। সেই গণতান্ত্রিক উত্তরণের একটি সফল ঘোষণা গতকাল হয়েছে, যেটাকে আমরা তফসিল বলছি, নির্বাচনী তফসিল।’

কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘কেউ কেউ বলেছে নো পিআর, নো ইলেকশন। কেউ কেউ বলেছে আগে স্থানীয় সরকার ইলেকশন, না হলে নো ইলেকশন। আর কেউ কেউ বলেছে একই দিনে গণভোট আর নির্বাচন হলে আমরা মানি না। আমি কারও নাম নিতে চাই না। তারা গণতন্ত্রের বিপক্ষের শিবির। তারা নিজেদের মতো করে গণতন্ত্র চায়। তাদের গণতন্ত্রের সংজ্ঞা আলাদা।’

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আওয়ামী লীগের ভোট পেতে একটি দল তাদের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করে না: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • মর্গ্যান গার্লস স্কুলে পরীক্ষাকালীন সময়ে জামায়াত প্রার্থীর সভা,  ক্ষোভ
  • ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের পদত্যাগের চান মুঠোফোন ব্যবসায়ীরা, সার্ক ফোয়ারা মোড় অবরোধ