নেত্রকোনায় দুটি লোকাল ট্রেনের চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা
Published: 29th, October 2025 GMT
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ ও জারিয়া রুটে পৃথক দুটি লোকাল ট্রেনের চলাচল বন্ধ আছে কয়েক মাস। বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহে আসা-যাওয়ার স্বল্প ভাড়ার এসব ট্রেন বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থীসহ অন্য যাত্রীরা। ট্রেন দুটি চালুর দাবিতে মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইঞ্জিনসংকটের কারণে ট্রেন দুটি চালু করা যাচ্ছে না।
নেত্রকোনা রেলস্টেশন সূত্রে জানা গেছে, জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলা থেকে ঢাকা রুটে ২১০ কিলোমিটার রেলপথ আছে। এর মধ্যে মোহনগঞ্জ-ময়মনসিংহ রেলপথের দূরত্ব ৬৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার। ওই পথে হাওর এক্সপ্রেস ও মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস নামের দুটি আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। এ ছাড়া একটি লোকাল ও একটি কমিউটার ট্রেনও চালু আছে। লোকাল ডাউন ট্রেনটি প্রতিদিন ময়মনসিংহ স্টেশন থেকে যথাক্রমে ভোর ৫টা ৪০ এবং বেলা ২টা ১০ মিনিটে মোহনগঞ্জ স্টেশনের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। অন্যদিকে ময়মনসিংহের উদ্দেশে প্রতিদিন সকাল সাড়ে আটটা ও বিকেল সাড়ে পাঁচটায় মোহনগঞ্জ স্টেশন থেকে ছেড়ে যায় এটি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, লোকাল ট্রেনটিতে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ যাতায়াত করেন। গত ৩১ মে থেকে ট্রেনটির চলাচল বন্ধ আছে।
ময়মনসিংহ শহর থেকে লোকাল ট্রেনে করে নিয়মিত মোহনগঞ্জে যান সরকারি চাকরিজীবী সাদিয়া রহমান। তিনি বলেন, এই ট্রেনে কম খরচ ও সময়ের মধ্যে সহজে কর্মস্থলে যাওয়া-আসা করা যায়। কিন্তু পাঁচ মাস ধরে ট্রেনটি বন্ধ থাকায় ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
স্কুলশিক্ষক তরিকুল হাসান বলেন, অনেকেই ময়মনসিংহ স্টেশন থেকে পর্যায়ক্রমে শম্ভুগঞ্জ, বিশকা, গৌরীপুর, শ্যামগঞ্জ, হিরণপুর, চল্লিশা, নেত্রকোনার বড় স্টেশন, কোর্ট স্টেশন, ঠাকুরাকোনা, বারহাট্টা, অতিথপুর ও মোহনগঞ্জে সুবিধামতো যাওয়া-আসা করতে পারেন। ট্রেনটি বন্ধ থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়েছে।
নেত্রকোনার স্টেশনমাস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, লোকাল ট্রেনটির ইঞ্জিনে সমস্যা হওয়ায় চলাচল বন্ধ আছে। ইঞ্জিনটি মেরামতের জন্য চট্টগ্রাম পাঠানো হয়েছে। ইঞ্জিন মেরামত শেষ হলে আবার চালু হবে। তবে কবে নাগাদ ইঞ্জিন মেরামত শেষ হবে, তা তিনি জানেন না।
অন্যদিকে ময়মনসিংহ-জারিয়া রেলপথে চলাচল করা লোকাল ট্রেনটিও প্রায় এক মাস ধরে বন্ধ আছে। রেলপথটিতে চলাচলকারী যাত্রীরা একইভাবে দুর্ভোগে পড়েছেন। বন্ধ ট্রেনটি চালুর দাবিতে সপ্তাহখানেক আগে জারিয়া রেলস্টেশন, পূর্বধলা রেলস্টেশন, ময়মনসিংহ স্টেশনসহ বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন করেন যাত্রীরা।
পূর্বধলা রেলস্টেশন সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ-জারিয়া ৫০ কিলোমিটার রেলপথে একটি কমিউটার ও একটি লোকাল ট্রেন আছে। ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে লোকাল ট্রেনটি বন্ধ আছে।
পূর্বধলার বাঘবেড় গ্রামের চাকরিজীবী সুমন্ত শর্মা সরকার জানান, ময়মনসিংহ-জারিয়া রুটে অন্য কোনো আন্তনগর ট্রেন চলাচল না করায় শম্ভুগঞ্জ, গৌরীপুর, শ্যামগঞ্জ, পূর্বধলাসহ আটটি স্টেশনে চলাচলকারী যাত্রীদের অন্যতম ভরসা ওই লোকাল ট্রেন। প্রতিদিনই ট্রেনটিতে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় থাকে। এ ট্রেনে করে পূর্বধলা, দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলাসহ পাশের ময়মনসিংহের ধোবাউড়ার কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল করেন। ট্রেনটি বন্ধ থাকায় যাত্রীদের খুবই দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
দুর্গাপুরের বাসিন্দা ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজের শিক্ষার্থী আল নোমান খান বলেন, ‘ট্রেনটিতে জারিয়া থেকে আমরা ময়মনসিংহ গিয়ে ক্লাস করে আবার চলে আসতাম। ট্রেন বন্ধ থাকায় এখন সময় ও অর্থ দুটোই বেশি লাগছে। আমরা ট্রেনটি নিয়মিত চালুর দাবি জানাই।’
এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, ‘মোহনগঞ্জ ও জারিয়া দুটি লোকাল ট্রেনই ইঞ্জিন সংকটের কারণে বন্ধ আছে। ইঞ্জিন পেলে আবার ট্রেনগুলো চালু করতে পারব।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল ক ল ট র নট বন ধ থ ক য় ম হনগঞ জ ন ত রক ন চ কর জ ব প র বধল ন বল ন সরক র র লপথ
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় ক্রিকেট লিগ: ময়মনসিংহের রাকিবুলের এক ইনিংসেই ৯ উইকেট, তিন দিনে জিতে গেল খুলনা
তৃতীয় দিনেই খুলনার জয়
এক দিন হাতে রেখেই জাতীয় ক্রিকেট লিগে বরিশাল বিভাগের বিপক্ষে ৭ উইকেটের জয় পেয়েছে খুলনা। চার দিনের ম্যাচের তৃতীয় দিনে আজ ৩৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৭ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারালেও অমিত মজুমদার ও ইয়াসিন মুনতাসির অপরাজিত থেকে খুলনাকে জেতান।
শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে স্বাগতিক খুলনা নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩১৩ রানে অলআউট হওয়ার পর বরিশাল নিজেদের প্রথম ইনিংসে মাত্র ১২৬ রানে অলআউট হয়ে যায়। বরিশালকে ফলোঅনে নামানোর পর ৪ উইকেটে ১১৯ রানে গতকাল দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করে তারা। আজ ১০৫ রানে বাকি ৬ উইকেট হারিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে বরিশাল ২২৮ রানে অলআউট হওয়ায় জয়ের জন্য মাত্র ৩৮ রানের লক্ষ্য পায় খুলনা।
আরও পড়ুনমাঠেই অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন বরিশালের ফিজিও৩ ঘণ্টা আগেবরিশালের প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০.৫ ওভার বোলিং করে ৩১ রানে ৬ উইকেট নেওয়া অফ স্পিনার আফিফ হোসেন খুলনার জয়ে বড় অবদান রাখেন। বরিশালের প্রথম ইনিংসে হ্যাটট্রিক করেন আফিফ। বরিশালের দ্বিতীয় ইনিংসেও ৫১ রানে ২ উইকেট নেওয়া আফিফ ম্যাচসেরা।
বরিশালের দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করা অভিজ্ঞ শামসুর রহমান ৪৪ রানে আউট হন। শামসুল ইসলাম (২৩), রুয়েল মিয়া (১০) ও ইয়াসিন আরাফাতের (১৩) দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত ইনিংস হারের শঙ্কা পেরিয়ে খুলনাকে লক্ষ্য দিতে পেরেছিল বরিশাল। অল্প রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা খুলনার ২টি উইকেট নেন শামসুর।
সিলেটে ৩০ রানে পিছিয়ে ময়মনসিংহজাতীয় লিগে আজ সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে স্বাগতিক সিলেটের বিপক্ষে ৩০ রানে পিছিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে ময়মনসিংহ বিভাগ। আরিফুল ইসলাম ও আবু হায়দারের সেঞ্চুরিতে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪০১ রানে অলআউট হয় ময়মনসিংহ। তাড়া করতে নেমে সৈকত আলীর ১৭৫ ও তোফায়েল আহমেদের ৭৯ রানে ৪৮৯ রানে অলআউট হয় সিলেট। এরপর বিনা উইকেটে ৫৮ রান তুলে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করে ময়মনসিংহ।
জাতীয় লিগে ইনিংসে ৯ উইকেট নেওয়া তৃতীয় বোলার রাকিবুল