স্কুল পরিচালকের বিরুদ্ধে ৮ শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাতের অভিযোগ
Published: 29th, October 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের শহীদ মডেল স্কুল ক্যাডেট একাডেমির পরিচালক হাছানুজ্জামান তালুকদারের বিরুদ্ধে চতুর্থ শ্রেণির আট শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত ২৬ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অভিভাবকরা।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রোজিনা আক্তার অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আরো পড়ুন:
শ্রেণিকক্ষে টিকটক বানানোয় ৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
চার বছর ধরে বন্ধ দৃষ্টিহীনদের শিক্ষালয়
তিনি বলেন, “শহীদ মডেল স্কুলের পরিচালক হাছানুজ্জামান তালুকদারের বিরুদ্ধে আট শিশু শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করার অভিযোগ পেয়েছি। ডিসি স্যারের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২২ অক্টোবর টিফিনের সময় স্কুলের কয়েকজন শিক্ষার্থী ভবনের ছাদে ওঠে। এ কারণে পরিচালক হাছানুজ্জামান তাদের অন্ধকারাচ্ছন্ন কক্ষে ডেকে বেত্রাঘাত করেন। কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। বাংলাদেশে শিশু শিক্ষার্থীদের শারীরিক শাস্তি রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ। তবুও ওই স্কুলে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। এতে শিশুরা মানসিক আঘাতে ভুগছে ও পড়ালেখার প্রতি তাদের মধ্যে অনীহা সৃষ্টি হচ্ছে।
ছাদে ওঠা নিষিদ্ধ হলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাদের দরজা বন্ধ রাখেনি। পরিচালক নিজে শ্রেণি শিক্ষক না হয়েও শিক্ষার্থীদের বেত্রাঘাত করেছেন।
মারধরের শিকার শিক্ষার্থী তোয়াসিনের মা শ্যামলী খাতুন বলেন, “আমার স্বামীও একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। আমার ছেলেসহ একই রুমে ৮ জনকে ডেকে নিয়ে মারপিট করেছেন স্কুল পরিচালক। প্রথমে বিষয়টি গুরুত্ব দেইনি। পরে দেখি, ওই রাতে আমার ছেলে চিৎকার করে ওঠে এবং শরীরে প্রচুর জ্বর আসে। এই ঘটনায় আমরা ৮ জন অভিভাবক জেলা প্রশাসক বরাবর একটা লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।”
শিক্ষার্থী ইভানের মা শারমিন সুলতানা বলেন, “অন্ধকার ঘরের ভেতরে নিয়ে আমার সন্তানকে পরিচালক খুব মারধর করেছেন। আমার সন্তান ভয়ে এখন স্কুলে যেতে চাচ্ছে না। ওই পরিচালক আগে থেকে খারাপ ব্যবহার করেছেন। মারধরের কারণে আমার সন্তানের কোমরের নিচের অংশ ফুলে গেছে।”
শিক্ষার্থী রাজিনের মা বলেন, “ওই পরিচালক খুব খারাপ আচরণ করেন। আমার ছেলে ওইদিন ছাদে ওঠেনি। সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে ছিল। অথচ, অন্ধকার রুমে ডেকে নিয়ে তাকেও মেরেছে। ঘটরার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের জন্য আমরা ডিসি অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।”
স্কুল পরিচালক হাছানুজ্জামান তালুকদার ফোনে বেত্রাঘাতের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “স্কুলের ছাদ থেকে অন্য ছাদে গিয়ে লাফালাফি করছিল শিক্ষার্থীরা। এজন্য সামান্য বেত্রাঘাত করেছি। এ বিষয়ে আমি আর কোনো মন্তব্য করব না।”
ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর অভ য গ ব ত র ঘ ত কর আম র স কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমিকের পরামর্শে স্বামীকে গ্যাস ট্যাবলেট খাইয়ে হত্যার অভিযোগ,
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে প্রেমিকের পরামর্শে অতিরিক্ত গ্যাসের ট্যাবলেট খাইয়ে স্বামী আব্দুল করিমকে (২৫) হত্যার অভিযোগে তানজিলা খাতুন (২২) নামের এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে শাহজাদপুর উপজেলার নন্দলালপুর গ্রাম থেকে আব্দুল করিমের মরদেহ উদ্ধার ও অভিযুক্ত নারীকে আটক করা হয়েছে।
আব্দুল করিম নন্দলালপুর গ্রামের নবী মন্ডলের ছেলে। আটক তানজিলা খাতুন পাবনার সাথিয়া উপজেলার বাঐটোলা গ্রামের হাসেন আলীর মেয়ে।
পুলিশ ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, এক মাস আগে মিশুকচালক আব্দুল করিমের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তানজিলা খাতুনের। বিয়ের পর করিমের পরিবার জানতে পারে যে, আগে থেকেই সাথিয়ার প্রতিবেশী সিএনজি অটোরিকশার চালক নুর আলম ওরফে নাহিদের সঙ্গে তানজিলার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি তানজিলা বাবার বাড়িতে গেলে প্রেমিক নাহিদ তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। এ অবস্থায় তিনি প্রেমিকের পরামর্শে স্বামী করিমকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন।
গত সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাতে তানজিলা কৃমিনাশক ট্যাবলেটের কথা বলে তার স্বামীকে অতিরিক্ত গ্যাসের ট্যাবলেট খাওয়ান। কিছুক্ষণ পর থেকে পেটে জ্বালাপোড়া শুরু হলে প্রথমে স্থানীয় ক্লিনিকে এবং পরে তাকে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার সকালে আব্দুল করিমের মৃত্যু হয়।
শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম আলী বলেছেন, বুধবার সকালে নিজ বাড়ি থেকে আব্দুল করিমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নববধূ তানজিলাকে আটক করে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি তার স্বামীকে অতিরিক্ত গ্যাসের ট্যাবলেট খাওয়ানোর কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ঢাকা/অদিত্য/রফিক