চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত মাশুল নির্ধারণের দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পোর্ট ইউজার্স ফোরামের আহ্বায়ক আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী। আজ নগরীর সিটি হলে পোর্ট ইউজার্স ফোরামের এক সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক প্রসারে প্রতিবন্ধক ওজন স্কেল, বন্দর ট্যারিফ ও চট্টগ্রাম চেম্বারকে জবাবদিহিমূলক ও ব্যবসায়ীবান্ধব করার প্রত্যয়ে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে পোর্ট ইউজার্স ফোরাম।

১৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম বন্দর তাদের বিভিন্ন ধরনের সেবার বিপরীতে নতুন মাশুল কার্যকর করে। তাতে একলাফে গড়ে ৪১ শতাংশ অতিরিক্ত মাশুল আরোপ করা হয়। এ নিয়ে পোর্ট ইউজার্স ফোরাম আন্দোলনের ডাক দেয়। কর্মসূচিও পালন করা হয় ফোরামের ব্যানারে।

সভায় আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘দাবি আদায়ে আমরা সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলাম। এখন ব্যবহারকারীদের সঙ্গে নিয়ে ১০–১৫ দিনের মধ্যে বৈঠক হওয়ার ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। আমরা চাই, বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত ট্যারিফ নির্ধারণ করা হোক।’

পোর্ট ইউজার্স ফোরামের নামে এ সভা আয়োজন হলেও মূলত আগামী ১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া চট্টগ্রাম চেম্বার নির্বাচনে ‘ইউনাইটেড বিজনেস ফোরাম’ প্যানেলের পরিচিতি সভায় রূপ নেয়। এই ফোরাম জয়ী হলে ব্যবসায়ীদের নানা সমস্যা সমাধানের স্বার্থে কাজ করার অঙ্গীকার করেন ফোরামের নেতারা।

ইউনাইটেড বিজনেস ফোরামের দলনেতা মোহাম্মদ আমিরুল হক ব্যবসায়ীদের যেকোনো আন্দোলনে সামনে থাকার অঙ্গীকার করেন।

চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি সরওয়ার জামাল নিজাম বলেন, চট্টগ্রাম চেম্বারে যোগ্য সভাপতি নির্বাচিত হলে দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।

পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালক এম এ সালাম বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের বর্ধিত ট্যারিফ নিয়ে এ ফোরাম সোচ্চার ছিল। ব্যবসার নানা সমস্যা সমাধানে চট্টগ্রাম চেম্বারে গতিশীল নেতৃত্ব দরকার।

শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক সাহেদ সরওয়ার বলেন, বন্দরের মাশুল ৪১ শতাংশ বেড়েছে বলে প্রচার করা হলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত মাশুল বেড়েছে। বিপজ্জনক পণ্যের কনটেইনারে আগে ৩৭১ ডলার দিতেন। এখন ১ হাজার ৫০০ ডলার দিতে হচ্ছে।

গাড়ি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বারভিডার সাবেক সভাপতি হাবিবুল্লাহ ডন বলেন, সম্প্রতি বন্দরের সেবার ওপর যেভাবে ট্যারিফ বাড়ানো হয়েছে, তাতে ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন।

সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল আলম বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের কারণে যানবাহন প্রবেশ ফির বর্ধিত মাশুল বন্ধের দাবি মেনে নিয়েছে বন্দর। সামনে সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যৌক্তিক মাশুল নির্ধারণ হবে বলে আমরা আশা করছি।’

বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহসভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিজিএপিএমইএর প্রথম সহসভাপতি শহীদুল্লাহ্ চৌধুরী, টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির উপদেষ্টা বেলায়েত হোসেন ও সভাপতি আবদুল মান্নান, চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প র ট ইউজ র স ফ র ম ব যবস য় দ র

এছাড়াও পড়ুন:

রায়েদ সাদকে হত্যা যুদ্ধবিরতির স্পষ্ট লঙ্ঘন: হামাস

গাজা নগরীতে ইসরায়েলের হামলায় দলের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার রায়েদ সাদ নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে গতকাল শনিবার হামাসের এই নেতাকে হত্যার দাবি করেছিল।

শনিবারের ওই হামলায় ৫ জন নিহত এবং অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।

হামাস এ হামলার বিষয়ে বিবৃতি দিলেও প্রথমে রায়েদ সাদ নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। তখন হামাস বলেছিল, গাজা নগরের বাইরে একটি বেসামরিক গাড়িতে হামলা হয়েছে। এই হামলা অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

পরে আজ রোববার এক ভিডিও বার্তায় হামাসের গাজাপ্রধান খলিল আল-হাইয়া বলেন, গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত পাঁচজনের মধ্যে রায়েদ সাদও রয়েছেন।

খলিল আল-হাইয়া বলেন, ‘ইসরায়েল বারবার যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে যাচ্ছে, যার সর্বশেষ সংযোজন হামাস কমান্ডারকে (রায়েদ সাদ) হত্যা। গতকালই এ ঘটনা ঘটেছে। এই প্রেক্ষাপটে আমরা সব মধ্যস্থতাকারী এবং বিশেষ করে চুক্তির প্রধান নিশ্চয়তাদাতা হিসেবে মার্কিন প্রশাসন ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আহ্বান জানাই, তাঁরা যেন ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্মান করতে ও তা মেনে চলতে বাধ্য করেন।’

রায়েদ সাদ হত্যাকাণ্ড অক্টোবরে গাজায় একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর হামাসের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতাকে হত্যার প্রথম ঘটনা।

এর আগে টেলিগ্রামে এক পোস্টে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছিল, ওই কমান্ডার (রায়েদ সাদ) হামাসের সক্ষমতা পুনর্গঠনে কাজ করছিলেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েলে হামাসের হামলা পরিকল্পনাকারীদের একজন ছিলেন তিনি।

আরও পড়ুনজ্যেষ্ঠ হামাস নেতা রায়েদ সাদকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের১৭ ঘণ্টা আগে

রায়েদ সাদ হত্যাকাণ্ড অক্টোবরে গাজায় একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর হামাসের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতাকে হত্যার প্রথম ঘটনা।

একজন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, রায়েদ সাদকে লক্ষ্য করেই এ হামলা চালানো হয়েছিল। তিনি রায়েদ সাদকে হামাসের অস্ত্র তৈরি শাখার প্রধান বলে দাবি করেন।

হামাস সূত্র রায়েদ সাদকে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসাম ব্রিগেডের সেকেন্ড ইন কমান্ড তথা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্মকর্তা বলে জানিয়েছে। এই সূত্রগুলো বলেছে, সাদ আগে হামাসের গাজা সিটি ব্যাটালিয়নের প্রধান ছিলেন। হামাসের সবচেয়ে বড় ও অস্ত্রসজ্জিত ব্যাটালিয়নের একটি এটি।

অক্টোবরে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও গাজায় ইসরায়েলের হামলা থামেনি। অক্টোবরে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ইসরায়েলের প্রায় ৮০০ বার গাজায় হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৩৮৬ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে

আরও পড়ুনগাজার ‘হলুদ রেখা’ থেকে সরবে না সেনা, এটিই নতুন সীমান্ত: ইসরায়েলি বাহিনীর প্রধান০৯ ডিসেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ