“আমার শেষ ইচ্ছে, মরার আগে এক নজর তারেক জিয়াকে দেখতে চাই, কথা কইতে চাই একটাবার”—এমন আবেদন জানিয়ে কুষ্টিয়া কোর্ট স্টেশন চত্বরে অবস্থান নিয়েছিলেন এক বৃদ্ধা। পরে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের আশ্বাসে স্থান ত্যাগ করেন তিনি।

ওই বৃদ্ধার নাম সাহারুন খাতুন (৭৫)। তিনি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মধুপুর গ্রামের মৃত দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী।

আরো পড়ুন:

শিক্ষাব্যবস্থায় সঠিক কারিকুলাম তৈরিতে কাজ করছে বিএনপি: তারেক

বিএনপি এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে: টুকু

বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কুষ্টিয়া কোর্ট ষ্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, প্লাটফর্ম চত্বরে পাটি পেতে বসে আছেন সাহারুন খাতুন। পেছনে তারেক জিয়ার ছবিসহ ব্যানার।

সেখানে লেখা ছিল, “আমার শেষ ইচ্ছে, মরার আগে এক নজর তারেক জিয়াকে দেখতে চাই, কথা কইতে চাই একটাবার।’’ তাকে ঘিরে উৎসুক জনতা ভিড় করেন।

সাহারুন খাতুন বলেন, ‘‘আমি একবার লক্ষ্মীপুরে জাকির সাহেবের (জেলা বিএনপির সদস্য সচিব) মিটিংয়ে গেছিলাম। সেই সভায় বহুত লোক হয়াছিল। সেখানে তারেক জিয়ার নাম শুনেছি। তাকে খুব ভালো লাগেছে। মরার আগে একবার তার সঙ্গে দেখা করতে চাই, আর দুটো কথা কবো। তার কাছে আমার কিছু চাওয়ার নেই। অনেক আশা করে আইছি। জানতে পারিছি, কুষ্টিয়ার এই জায়গায় আসলি আমি তারেক জিয়ার দেখা পাবো; ভিডিও কলে কথা বলতে পারবো।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘সকাল ১০টা থেকে ষ্টেশনে বসে আছি। ছেলে-মেয়েদের বলে আইছি, আমার শখ তারেক জিয়ার সঙ্গে দেখা করার। যে যাই বলুক, আমি দেখা না করে এখান থেকে যাব না।’’

এদিকে, তারেক জিয়ার প্রতি সাহারুন খাতুনের এমন ভালোবাসা এবং আনুগত্য দেখে উপস্থিত সবাই মুগ্ধ হয়েছেন।

ষ্টেশন প্লাটফর্মে থাকা নাহিদ ইসলাম নামে এক যুবক বলেন, ‘‘আমি কুষ্টিয়ার বাইরে থেকে ঘুরতে এসেছি। কোর্ট ষ্টেশনে এসে ওই বৃদ্ধাকে বসে থাকতে দেখে কথা বলি। অতি সহজ ভাষা তার। মৃত্যুর আগে তারেক জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে চান, কথা বলতে চান। আমি চাই, তার চাওয়া পূরণ হোক।’’

কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, ‘‘আমরা পার্টি অফিসেই ছিলাম। বিষয়টি জানতে পেরে ষ্টেশনে গিয়ে ওই বৃদ্ধার সঙ্গে কথা বলি। তিনি তার জায়গা থেকে অনড় ছিলেন। পরে তাকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি, তারেক জিয়া বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন এবং নির্বাচনী কার্যক্রম নিয়ে খুবই ব্যস্ত সময় পার করছেন। এক মাস পর তিনি দেশে ফিরবেন। তখন ভিডিও কলে কথা বলার  ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দিলে সাহারুন খাতুন স্থান ত্যাগ করেন।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘লক্ষ্মীপুরে ওই দিন মহাসমাবেশ ছিল। সেদিন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়াকে নিয়ে বিস্তর আলোচনা করা হয়। সেখান থেকেই তারেক জিয়ার প্রতি তার ভালোবাসা তৈরি হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।’’

ঢাকা/কাঞ্চন/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত র ক রহম ন ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

বাবার কবরে শায়িত বিজ্ঞানী ও লেখক রেজাউর রহমান

বাবার কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক ড. রেজাউর রহমান। গতকাল বুধবার তাঁকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সলিমুল্লাহ রোড জামে মসজিদ কমপ্লেক্স কবরস্থানে বাবা ফজলুর রহমানের কবরে দাফন করা হয়। এর আগে বাদ আসর এই মসজিদে মরহুমের তৃতীয় জানাজা হয়।

ধানমন্ডির ১২/এ সড়কের তাকওয়া মসজিদে বাদ জোহর রেজাউর রহমানের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। এখানে মসজিদের মুসল্লিরা ছাড়াও মরহুমের আত্মীয়, সুহৃদ, অনুরাগী ও শুভানুধ্যায়ী, স্কুল–কলেজের সতীর্থদের অনেকে অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ পরে দাফনেও অংশ নিয়েছেন। জানাজা ও দাফনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, শিল্পী রফিকুন নবী, প্রাবন্ধিক মফিদুল হক, শিল্পী আবুল বার্‌ক্‌ আলভী, মনিরুল ইসলাম, অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক, প্রাণিবিজ্ঞানী অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, এথিকস অ্যাডভান্স টেকনোলজি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মুবিন খান, লেখক আনিসুল হকসহ কবি, শিল্পী, চিকিৎসকদের অনেকে।

প্রথম জানাজার পরে শেষবারের মতো রেজাউর রহমানের মরদেহ তাঁর ধানমন্ডির বাসভবনে আনা হয়। এখানে পরিবারের সদস্য, বিশেষত নারী আত্মীয়স্বজনসহ অনেকে শেষবারের মতো তাঁকে দেখতে আসেন। বাসভবন ছেড়ে যাওয়ার আগে এখানে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবেশী ও স্বজনেরা জানাজায় অংশ নেন। এরপর দাফনের জন্য মোহাম্মদপুর সলিমুল্লাহ রোড জামে মসজিদে আনা হয়।

রেজাউর রহমান ৮১ বছর বয়সে ২৬ অক্টোবর রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় ল্যাবএইড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।

আরও পড়ুনরেজাউর রহমানের চলে যাওয়া শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়…২৭ অক্টোবর ২০২৫

ব্যক্তিগত জীবনে বিনয়ী ও সদাচারী ছিলেন রেজাউর রহমান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৯৬৫ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। পরে ১৯৭৯ সালে চেক একাডেমি অব সায়েন্সেস-প্রাগ থেকে কীটতত্ত্বে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। দীর্ঘ ৩৫ বছর কাজ করেছেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে। পেশাগত জীবনে কীটপতঙ্গ নিয়ে দেশ-বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেছেন তিনি।

পেশাগতভাবে বিজ্ঞানী হলেও লেখক

হিসেবে রেজাউর রহমান বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। দেশের বিজ্ঞানবিষয়ক লেখক হিসেবে তিনি ছিলেন বিশিষ্ট স্থানে। বিজ্ঞানে সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। সাহিত্যচর্চা ও বিজ্ঞান গবেষণার পাশাপাশি দেশের বিজ্ঞানচর্চার বিভিন্ন আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন রেজাউর রহমান।

আরও পড়ুনগ্রহান্তরে ভালো থাকবেন ড. রেজাউর রহমান২৮ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ