ইসির সঙ্গে বৈঠকে গণঅধিকার পরিষদ: অংশগ্রহণভিত্তিক ও গ্রহণযোগ্য নির
Published: 29th, October 2025 GMT
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে করেছে নাগরিক সংগঠন গণঅধিকার পরিষদের একটি প্রতিনিধি দল।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে শুরু হওয়া বৈঠকে সংগঠনের সভাপতি নুরুল হক নুর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেন।
আরো পড়ুন:
নির্বাচন বানচালের যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা হবে: প্রধান উপদেষ্টা
‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’
প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে তারা অংশগ্রহণভিত্তিক, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।
বৈঠকের পর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে নুরুল হক নুর বলেন, “নির্বাচনী ব্যবস্থায় কাঠামোগত সংস্কার না হলে জনগণের আস্থা ফিরবে না, ইসির সঙ্গে আমাদের মূল দাবি ছিল, সেই আস্থাই পুনরুদ্ধার করা। এছাড়া রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের সংশ্লিষ্ট উদ্বেগগুলো শুনে তা প্রয়োজনে আইন বা প্রথাগত পদ্ধতিতে প্রতিফলিত করা জরুরি।”
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে যে বৈঠকে আগামি নির্বাচন, গণভোট-সংক্রান্ত বিষয়, এবং নির্বাচন রুলস (আরপিও) সংশোধনসহ নির্বাচনী পরিবেশ নির্মাণ সংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হয়। কমিশন প্রাণকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষও বর্তমান প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা সম্পর্কে প্রতিনিধি দলের নিকট তথ্য উপস্থাপন করে।
কর্মকর্তারা বৈঠকে নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ যে পদক্ষেপ নেবে তার খসড়া তুলে ধরেন।
বৈঠকের প্রেক্ষাপটে উল্লেখ্য, আগে থেকেই বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল একাধিকবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপ করেছে।
ইসি জানিয়েছে, অংশগ্রহণকারী পক্ষগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ চলবে এবং নভেম্বর মাসে আরো কয়েকটি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নির্বাচন ভবনের আশপাশে বৈঠকের সময় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা যায়। তবে ফটক এলাকা ও কার্যক্রমে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে পুলিশ ও দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক পক্ষগুলোর সঙ্গে এমন সংলাপ বানানো স্বাভাবিকভাবে নির্বাচনী পরিবেশের ওপর ইতিবাচক মনোভাব তৈরিতে সহায়ক হলেও বাস্তবে তা কী পরিমাণে ফলাফল দেয়—সেই বিষয়টি বিদেশি ও স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের নজরে থাকবে।
গণঅধিকার পরিষদ ও নির্বাচন কমিশনের এ ধরনের বৈঠকগুলোকে অনেকে স্বাগত জানালেও দাবি রয়েছে- এসব সংলাপ কেবল আনুষ্ঠানিকতা না রেখে প্রতিশ্রুত বাস্তব পরিবর্তনে রূপান্তরিত হবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে বলে জানান নেতৃবৃন্দ।
ঢাকা/এএএম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত ক ক র পর
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে গণঅধিকার পরিষদের কমিটি ঘোষণার তিন দিন পর সভাপতিসহ ৫৯ জনের পদত্যাগ
গোপালগঞ্জে গণঅধিকার পরিষদের জেলা কমিটি ঘোষণার তিন দিন পর সভাপতিসহ ৫৯ নেতা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। আজ সোমবার সংগঠনের সভাপতি আল আমিন সরদার স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে ২৪ অক্টোবর ৭৯ সদস্যের গণঅধিকার পরিষদের গোপালগঞ্জ জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। এতে বিভাগীয় উপকমিটির বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতি এবং সাবেক যুবলীগ নেতা ও মাঠে না থাকা ব্যক্তিদের পদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।
এ বিষয়ে আজ দুপুরে আল আমিন সরদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘নবগঠিত কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক পদে যাঁকে রাখা হয়েছে, তিনি কখনোই রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না এবং এখনো নেই। এ ছাড়া টুঙ্গিপাড়া উপজেলা যুবলীগের এক সদস্যকে কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি পদে রাখা হয়েছে। এতে কমিটিতে থাকা নেতা-কর্মীদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। যার ফলে নেতা-কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়। এতে মনোক্ষুণ্ন হয়ে আমিসহ ৫৯ সদস্য পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছি। মূলত এখানে স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতি করেছে বিভাগীয় উপকমিটি।’
আল আমিন সরদার জানান, গতকাল রোববার কেন্দ্রীয় কমিটির ই-মেইলে সবাই পৃথকভাবে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি) গোপালগঞ্জ জেলার নবঘোষিত কমিটি গঠনের পর থেকেই দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। নতুন কমিটির সভাপতি আল আমিন সরদার, সাংগঠনিক কে এম নাজমুল ইসলামসহ ৫৯ জন পদত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। পদত্যাগকারী ব্যক্তিদের অভিযোগ, নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় দলের মূলনীতি, যোগ্যতা ও মাঠপর্যায়ের ত্যাগ-তিতিক্ষা কোনোভাবে বিবেচনা করা হয়নি। অনেক পরিশ্রমী ও নিবেদিতপ্রাণ নেতা–কর্মীকে বঞ্চিত করে ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা ও পক্ষপাতের মাধ্যমে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। যা গণঅধিকার পরিষদের আদর্শ ও গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা সব সময় দলের প্রতি অনুগত থেকেছি, কিন্তু যে কমিটিতে আস্থা ও ন্যায়বিচার নেই, সেখানে থেকে কোনো দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। তাই আমরা দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আমরা সম্মিলিতভাবে আমাদের পদ থেকে পদত্যাগ করছি। তবে আমরা গণঅধিকার পরিষদের মূল আদর্শ, নীতি ও গণমানুষের রাজনীতিতে বিশ্বাসী।’