সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে
Published: 11th, December 2025 GMT
জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
দলটির আশা, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা থাকলে সেটা কেটে যাবে।
নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মগবাজারস্থ দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জোবায়ের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘‘আজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা করা হয়েছে। এই ঘোষণাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা থাকলে সেটা কেটে যাবে।’’
নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য কমিশনকে নানা গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে জানিয়ে এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেন, ‘‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, নির্বাচনকে অর্থবহ করতে নির্বাচন কমিশনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো দুর্বলতা আমরা আশা করবো না। আমরা প্রত্যাশা করবো সুষ্ঠু-সুন্দর গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন সুষ্ঠ করতে আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা থাকবে। আশা করছি জনগণ একটি উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেবে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে জুলাই অভ্যুত্থানের যে প্রত্যাশা আমাদের, সেটা পূরণ হবে।’’
আমাদের যেসব দাবি ছিল কিছু পূরণ হয়েছে, কিছু পূরণ হয়নি। আমরা চাইবো গণভোটে যেন ‘হ্যাঁ’ জয়যুক্ত হয়। সেই চেষ্টা আমাদের অব্যাহত থাকবে বলেও জানান দলটির এই নেতা।
৮ দলের চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘জামায়াতে ইসলামী ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়েছে। ৮ দলের শীর্ষ নেতারা বসছে, খুব দ্রুত আমরা ৮ দল চূড়ান্ত প্রার্থী দেবো। আমাদের লক্ষ্য সর্বোচ্চসংখ্যক আসনে বিজয়ী হওয়া, কত আসনে প্রার্থী দেব এটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।
এ সময় দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দু্ল হালিম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র দল ট র
এছাড়াও পড়ুন:
গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে কি না, সেই শঙ্কা এখনো কাটছে না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
নির্বাচন ক্রমান্বয়ে একটি অবধারিত বিষয়ে পরিণত হচ্ছে বলে মনে করেন এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশের আহ্বায়ক অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে শঙ্কা দূর করে মানুষের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে। নির্বাচন হবে—বিষয়টি সবাই মেনে নিলেও ভালো ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে কি না, সেই শঙ্কা এখনো কাটছে না। প্রধান উপদেষ্টা ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ নির্বাচন করে দেখানোর কথা বলেছেন, যার অপেক্ষায় সবাই।
আজ বুধবার দুপুরে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের প্রাক্-নির্বাচনী উদ্যোগ ‘আঞ্চলিক পরামর্শ সভা’ শেষে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। চট্টগ্রাম নগরের জিইসি এলাকার একটি হোটেলে এ সভার আয়োজন করা হয়।
সভা শেষে প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, নির্বাচনের পক্ষে প্রায় সবাই আছেন। রাজনৈতিক দল, ব্যবসায়ী গোষ্ঠী, নাগরিক সম্প্রদায়, সেনাবাহিনী, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও নির্বাচন চায়। তবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করার সক্ষমতার বিষয়ে যে শঙ্কা, তা দূর হচ্ছে না।
আজ আঞ্চলিক পরামর্শ সভায় চট্টগ্রামের শিক্ষক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, নারী অধিকারকর্মী, পরিবেশকর্মী, তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেন। সুষ্ঠু নির্বাচন, প্রয়োজনীয় সংস্কার, দুর্নীতির দমন, নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা, জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহিসহ নানা প্রসঙ্গে বক্তব্য দেন অংশগ্রহণকারীরা।
সভার আলোচ্য বিষয়গুলোর প্রসঙ্গ টেনে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, নাগরিকেরা সুশাসন, জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহি, আইনের শাসন, নিরাপত্তা এবং অধিকার নিশ্চিত করার প্রত্যাশা জানিয়েছেন। সবাই একটি দক্ষ প্রশাসন, একটি স্বাধীন বিচারব্যবস্থা এবং একটি নিরপেক্ষ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা চায়। এই দাবিগুলো রাজনীতিবিদেরা তাঁদের নির্বাচনী ইশতেহারের ভেতরে কীভাবে স্থান দেবেন, তা জানার জন্য নাগরিকেরা অপেক্ষায় আছেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ সংস্কারের প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেড় বছর ধরে দেশে এত সংস্কারের আলোচনা হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ সংস্কারের বিষয়ে কোনো বড় আলোচনা হয়নি। রাজনীতিবিদ, সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন—কারও তরফ থেকেই এ বিষয়ে অগ্রগতি দেখা যায়নি। চট্টগ্রামেও রাজনৈতিক দলগুলোর গণতন্ত্রায়ণ, দুর্নীতিমুক্ত থাকা এবং জবাবদিহির দাবিটি খুব বড়ভাবে এসেছে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, রাজনৈতিক নেতাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব আরও স্বচ্ছতার সঙ্গে সামনে আনা এবং তাঁদের পরিবারের আত্মীয়স্বজনের সহায়সম্পত্তির বিষয়টিও ঘোষণার দাবি উঠেছে। বিগত ও বর্তমান সরকার তাদের মন্ত্রিপরিষদের বা সরকারপ্রধানের সম্পত্তির হিসাব দেবে—এমন ঘোষণা দিলেও তা পরিপূরণ না করায় মানুষের মধ্যে অনেক বড় হতাশা রয়েছে। অনেকে আশঙ্কা করছেন, এই ব্যর্থতা আগামী সরকারকেও তা না করার ক্ষেত্রে উৎসাহ জুগিয়ে গেল কি না।
এর আগে পরামর্শ সভায় শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মু. সিকান্দার খান বলেন, নাগরিকদের অধিকারসচেতন হতে হবে, দায়িত্ব নিতে হবে। জনপ্রতিনিধিদের জবাবের মুখোমুখি করতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক চর্চা বাড়াতে হবে। পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের অবশ্যই জবাবদিহির মধ্যে আনতে হবে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন বলে সভায় জানান ইস্ট ডেলটা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য মোহাম্মদ নাজিমুদ্দিন। তিনি বলেন, ‘ভোট দিতে যাওয়ার সময় মবের শিকার হব কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছি।’