বিরল রোগে আক্রান্ত শিশুর পাশে ডিসি জাহিদুল
Published: 29th, October 2025 GMT
বিরল রোগে আক্রান্ত নারায়ণগঞ্জের শিশু মান্তাহার মাহমুদকে একটি অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক হুইলচেয়ার দিয়েছেন মানবিক ডিসি জাহিদুল ইসলাম মিঞা। এখন থেকে মান্তাহারকে আর সারাক্ষণ মায়ের কোলে চড়ে কোথাও যেতে হবে না।
সে নিজেই এই হুইলচেয়ারটি ব্যবহার করতে পারবে। এর মাধ্যমে নতুন করে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেল মান্তাহার। মান্তাহার মাহমুদ নারায়ণগঞ্জ শহরের ইসদাইর এলাকার ইসদাইর এলাকার এনামুল হক ও মিতু বেগম দম্পতির সন্তান।
শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নয় বছর বয়সী মান্তাহার প্রথমে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতো। পরে ভর্তি হয় খোরশেদ আলম ইসলামিয়া মাদরাসায়। কিন্তু হঠাৎ তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে সমস্যা দেখা দেয়। ধীরে ধীরে সে হাটাচলা করতে অক্ষম হয়ে পড়ে। ফলে প্রায় এক বছর ধরে মাদরাসায় যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
শিশুটির বাবা এনামুল হক বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ শহরের ইসদাইর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। তিনি পেশায় গার্মেন্টস শ্রমিক। মাসে যে টাকা আয় করেন, সেটা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চলে।
একসময় সুস্থ থাকা মান্তাহার হঠাৎ হাটা-চলার অক্ষমতায় পড়লে চিকিৎসকেরা জানান, সে Duchenne Muscular Dystrophy (DMD) নামের এক বিরল ও জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এই রোগের চিকিৎসা বাংলাদেশে নেই, বিদেশে করাতে গেলে বিপুল অর্থের প্রয়োজন।
চিকিৎসার আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরে হতাশ হয়ে পড়েন অসহায় এই দম্পতি। সব জায়গায় সহায়তা না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত দেখা করেন ‘মানবিক ডিসি’ খ্যাত নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিয়ার সঙ্গে।
গত ২২ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে মান্তাহারের মা মিতু বেগম সারাক্ষণ অসুস্থ সন্তানকে কোলে নিয়ে ছিলেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নজরে আসে।
শিশুটির অসুস্থতা ও মায়ের অসীম মমতা দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।
তাৎক্ষণিকভাবে নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি মিতু বেগমকে একটি ইলেকট্রনিক হুইলচেয়ার প্রদানের জন্য লিখিত আবেদন করতে বলেন।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) জেলা প্রশাসক নিজ কার্যালয়ে মান্তাহার ও তার পরিবারকে ডেকে নেন। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিনি নিজ হাতে মান্তাহারকে অত্যাধুনিক একটি ইলেকট্রনিক হুইলচেয়ার উপহার দেন।
হুইলচেয়ার পেয়ে আনন্দে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে মান্তাহার। সে বলে, আমি অনেক খুশি। ডিসি অফিসের নিচে রাস্তায় অনেকক্ষণ চেয়ারে বসে চালিয়েছি। এখন আমি মাদরাসায় যেতে পারব। সারাক্ষণ মায়ের কোলেও থাকতে হবে না।
মান্তাহারের মা মিতু বেগম আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ডিসি স্যার গত সপ্তাহে হুইলচেয়ার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আজ তিনি তার কথা রেখেছেন। উনি সত্যিই খুব মানবিক মানুষ। আমরা অনেক খুশি। আমার সন্তানের চিকিৎসার জন্য সবাইকে পাশে আসার অনুরোধ করছি।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো.
জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিয়া বলেন, শিশুটি দেখতে খুব সুন্দর। প্রথম যেদিন আমার কাছে এসেছিল, ওকে দেখে আমার খুব মায়া লেগেছিল। কিছু সহায়তা করেছিলাম, কিন্তু মনে হয়েছিল যথেষ্ট নয়।
আজ যখন দেখলাম সে হাসিমুখে হুইলচেয়ার চালাচ্ছে, তখন সত্যিই ভালো লেগেছে। প্রতিবন্ধী শিশুদের বাইরের আলো-বাতাসে থাকার সুযোগ যেন আমরা কখনো বন্ধ না করি, এই আহ্বান জানাই।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আলমগীর হোসাইনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ জ হ দ ল ইসল ম ন র য়ণগঞ জ হ ইলচ য় র
এছাড়াও পড়ুন:
আইন সহায়তা তথ্য রিপোর্টার মানবাধিকার ফাউন্ডেশন না’গঞ্জ শাখার সভা অনুষ্ঠিত
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নিবন্ধিত আইন সহায়তা তথ্য রিপোর্টার মানবাধিকার ফাউন্ডেশন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা কমিটির উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সদস্য মূল্যায়ন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল ৪ টায় শহরের চাষাঢ়ায় নারায়নগঞ্জ জার্নালিস্ট ইউনিটি’র কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আইন সহায়তা তথ্য রিপোর্টার মানবাধিকার ফাউন্ডেশন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি- মোঃ শফিকুল ইসলাম আরজু’র সভাপতিত্বে এ-ই আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- গবেষক, লেখক, কলামিস্ট ও জাতীয় মানবাধিকার সোসাইটি নারায়নগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি - ড. মোঃ সাইদুল ইসলাম খান।
প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কাস্ তি ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান- এড. কাজী রুবায়েত হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জয়গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি - কাজী তানভীর হাসান, নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাফিক ইনচার্জ- এম. এ. করিম, হিউম্যান এইড ইন্টারন্যাশনাল, নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি - এড. সাহিদুল ইসলাম টিটু, আইন সহায়তা তথ্য রিপোর্টার মানবাধিকার ফাউন্ডেশন এর কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ জার্নালিস্ট ইউনিটি’র সদস্য সচিব- এস. এম. জহিরুল ইসলাম বিদ্যুৎ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলোয়াত পাঠ ও মোনাজাত করেন- সংগঠনের সদস্য- শুক্কুর মাহমুদ জুয়েল। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক- মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন।
উপস্থিত অতিথিরা সকলেই মানুষের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং অধিকার বাস্তবায়নে করণীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে আলোচনা তুলে ধরেন এবং মানুষের কল্যাণে কাজ করার উৎসাহ দেন। সে-ই সাথে দেশ ও সমাজের উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান।
ও-ই সময় সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে হতে ২০২৫ এ যারা মানবিক সেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ ও কাজ করেছেন, তাদেরকে সদস্য মূল্যায়ন সন্মাননা স্মারক ২০২৫ ঘোষণা করা হয় এবং অতিথিদের মাধ্যমে সন্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
সদস্য মূল্যায়ন সন্মাননা পেলেন যারা তারা হলেন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক- এড. মনি গাঙ্গুলি, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক- রাবেয়া খন্দকার রিয়া, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক - শাকিলা ইসলাম, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক - জহিরুল ইসলাম মিন্টু, নির্বাহী সদস্য- সোহাগ, শুক্কুর মাহমুদ জুয়েল ও এস. এ. বিপ্লব।
এ সময় সংগঠন সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মোঃ জাকির হোসেন, আফরোজা আক্তার, মোঃ ওয়ারদে রহমান প্রমূখ।