চাপের মুখেও সত্য বলে গেছে প্রথম আলো
Published: 21st, November 2025 GMT
প্রথম আলো একাধিকবার যাচাই করে সংবাদ পরিবেশন করে। এ জন্য প্রথম আলোকে বিশ্বাস করে মানুষ। প্রথম আলোর সংবাদ বিভিন্ন মাধ্যমে ‘রেফারেন্স’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সরকারের চাপের মুখেও পত্রিকাটি সত্য বলে গেছে।
শুক্রবার বিকেলে সিলেটে প্রথম আলো আয়োজিত সুধী সমাবেশে বক্তারা এ কথা বলেন। পত্রিকাটির ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নগরের জিন্দাবাজার এলাকার গ্রন্থবিপণি বাতিঘরে এ সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে বীর মুক্তিযোদ্ধা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, রাজনীতিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক, কবি-সাহিত্যিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সংস্কৃতিকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
বিকেল চারটার আগে থেকে অতিথিরা আসতে থাকেন। তাঁরা একে অন্যের সঙ্গে খোশগল্পে মেতে ওঠেন। এরপর জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ।
সমাবেশে শুভেচ্ছা বক্তব্যে শিক্ষাজীবন থেকে প্রথম আলো পড়ার কথা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক মো.
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘জনগণের জন্য যেটা ভালো, প্রথম আলো যেন সেটার পাশে থাকে। প্রথম আলোকে যেন অন্য কিছু স্পর্শ না করে, সেই প্রত্যাশা করি।’
সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম। শুক্রবার বিকেলে সিলেট নগরের জিন্দাবাজার এলাকার গ্রন্থবিপণি বাতিঘরেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল
এছাড়াও পড়ুন:
সালিসের মাধ্যমে সমাধান চায় জিপি ও রবি
মামলার জটিলতা থেকে মুক্ত হতে অডিট আপত্তির বকেয়া পাওনা নিয়ে সমঝোতা চায় দেশের শীর্ষ দুই মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন (জিপি) ও রবি আজিয়াটা। চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে দুই অপারেটরই সালিসের মাধ্যমে বিষয়টির নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়ে আবেদন করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি)। বিটিআরসিও এখন সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের কথা ভাবছে।
১০ বছর আগে টেলিকম খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি গ্রামীণফোন ও রবিতে নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে। ১৯৯৬ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত গ্রামীণফোন ও রবির কর, ভ্যাট, হ্যান্ডসেট রয়্যালটি, তরঙ্গের মূল্য পরিশোধ, লাইসেন্স ফিসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিরীক্ষা হয়। ওই নিরীক্ষার পর গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা ও রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা বাবদ দাবি করা হয়।
বিটিআরসির এই পাওনা দাবির বিপরীতে গ্রামীণফোন ২ হাজার কোটি টাকার বেশি ও রবি ১৩৮ কোটি টাকা পরিশোধও করেছে। যদিও শুরু থেকে দুই অপারেটরই এই নিরীক্ষা দাবি নিয়ে তাদের আপত্তি জানিয়ে আসছিল। এমনকি বিটিআরসির এই পাওনা দাবির বিপরীতে আদালতে মামলাও করে অপারেটর দুটি। পরে সালিসের মাধ্যমে পাওনার বিষয়টি নিষ্পত্তির দাবি জানায় তারা। যদিও বিটিআরসি শুরু থেকে বলে আসছে, তাদের আইনে সালিসের কোনো সুযোগ নেই।
এ অবস্থায় দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নতুন করে গ্রামীণফোন ও রবি আবারও বকেয়া পাওনার বিষয়টি সালিসের মাধ্যমে নিষ্পত্তির অনুরোধ জানিয়ে সম্প্রতি বিটিআরসিকে চিঠি দিয়েছে। গত ২৯ জুলাই বিটিআরসিকে দেওয়া এ–সংক্রান্ত চিঠিতে গ্রামীণফোন বলেছে, নিরীক্ষা দাবির টাকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। দীর্ঘ সময়, প্রক্রিয়া এবং কারিগরি জটিলতা বিবেচনায় তারা এখন বিষয়টি সালিসি পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি চায়। রবিও বিষয়টি মধ্যস্ততা করার জন্য চলতি বছরের ১ জুন বিটিআরসিকে চিঠি দেয়।
সবার স্বার্থে একটি ন্যায়সংগত, স্বচ্ছ ও সময়োপযোগী সমাধানে পৌঁছানো দরকার। সালিসি প্রক্রিয়া এই ধরনের বিষয় সমাধানের জন্য একটি প্রতিষ্ঠিত ও কার্যকর আইনি পদ্ধতি—তানভীর মোহাম্মদ, চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার, গ্রামীণফোনগ্রামীণফোন চিঠিতে বলেছে, এ–সংক্রান্ত মামলাটি ছয় বছর ধরে বিচারাধীন। দেওয়ানি আদালতে মামলার জট ও নিষ্পত্তির ধীরগতির কারণে নিকট ভবিষ্যতে চূড়ান্ত রায় পাওয়া সম্ভব নয়। এ অবস্থায় সালিসি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করা হলে তা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের জন্যই ভালো। বিটিআরসি যেন সালিসি চুক্তির মাধ্যমে এ বিষয়ে নিয়ে আলোচনা শুরু করে, সে অনুরোধও জানিয়েছে গ্রামীণফোন।
জানতে চাইলে গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার তানভীর মোহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্রামীণফোন সব সময়ই দায়িত্বশীল ও আইন মেনে চলা কোম্পানি। শুরু থেকে নিরীক্ষা দাবি নিয়ে আমরা চ্যালেঞ্জ করেছি। কারণ, এই নিরীক্ষায় বিষয়বস্তু, পদ্ধতি ও প্রক্রিয়াগত ত্রুটি রয়েছে। এ অবস্থায় সবার স্বার্থে একটি ন্যায়সংগত, স্বচ্ছ ও সময়োপযোগী সমাধানে পৌঁছানো দরকার। সালিসি প্রক্রিয়া এই ধরনের বিষয় সমাধানের জন্য একটি প্রতিষ্ঠিত ও কার্যকর আইনি পদ্ধতি। গ্রামীণফোন বিটিআরসির সঙ্গে আন্তরিকভাবে কাজ করতে প্রস্তুত, যাতে এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান নিশ্চিত করা যায়।’
নিরীক্ষা বিরোধের কারণে টেলিকম খাতে বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। সমস্যার ন্যায্য সমাধান হলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে—সাহেদ আলম, চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি কর্মকর্তা, রবিএদিকে রবি বলছে, মধ্যস্থতার মাধ্যমে দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই গঠনমূলকভাবে এই বিরোধের সমাধান সম্ভব। তাতে সময়, সম্পদ ও পারস্পরিক স্বার্থ বজায় থাকবে। এ জন্য মধ্যস্থতা প্রক্রিয়া শুরুর জন্য বিটিআরসির প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ বিষয়ে রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি কর্মকর্তা সাহেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, সমস্যা সমাধানে রবি সব সময়ই প্রস্তুত। আদালতের মাধ্যমে সমাধান চাওয়ার পর বিটিআরসি ছয় বছর ধরে সাড়া না দেওয়ায় এই প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়েছে। নিরীক্ষা বিরোধের কারণে টেলিকম খাতে বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। সমস্যার ন্যায্য সমাধান হলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে।
একসময় বিরোধ নিষ্পত্তি নিয়ে কোনো ধরনের আলোচনায় যেতে না চাইলেও বর্তমানে সালিসের মাধ্যমে এ বিষয়ের সমাধান করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখছে বিটিআরসি।
জানতে চাইলে কমিশনের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা দুই অপারেটরের চিঠি পেয়েছি। বিটিআরসির আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মতামত নিয়ে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’