৪০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠক করল লেবানন ও ইসরায়েল
Published: 4th, December 2025 GMT
লেবানন ও ইসরায়েলের বেসামরিক প্রতিনিধিদল নাকুরায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ কমিটির এক বৈঠকে যোগ দিয়েছে। চার দশকের বেশি সময় পর ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে এটিই প্রথম সরাসরি আলোচনা।
গতকাল বুধবার লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম বলেন, নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়াও আরও বিস্তৃত আলোচনায় যেতে প্রস্তুত আছে বৈরুত। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, এটি কোনো শান্তি আলোচনা নয়। তাঁর মতে, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়টি শান্তিপ্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত।
নাওয়াফের বক্তব্য অনুসারে লেবাননের দিক থেকে এ আলোচনার লক্ষ্য হলো শত্রুতার অবসান, লেবাননের জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করা ও দেশটির ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, লেবানন ২০০২ সালের আরব শান্তি উদ্যোগের প্রতি সম্পূর্ণ অঙ্গীকারবদ্ধ। সেখানে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক সম্পূর্ণ স্বাভাবিক করার বিনিময়ে ১৯৬৭ সালে দখল করা ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহারের কথা বলা আছে। ইসরায়েলের সঙ্গে আলাদা কোনো শান্তিচুক্তি করার ইচ্ছা লেবাননের নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাঁর দেশ ২০০২ সালের আরব শান্তি উদ্যোগের প্রতি সম্পূর্ণ অঙ্গীকারবদ্ধ। সেখানে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক সম্পূর্ণ স্বাভাবিক করার বিনিময়ে ১৯৬৭ সালে দখল করা ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরিভাবে প্রত্যাহারের কথা বলা আছে। ইসরায়েলের সঙ্গে আলাদা কোনো শান্তিচুক্তি করার ইচ্ছা লেবাননের নেই।নাওয়াফ মনে করেন, বেসামরিক দূতদের আলোচনায় অংশগ্রহণের বিষয়টি উত্তেজনা প্রশমনে সহায়ক হতে পারে।
কমিটি প্রায় তিন ঘণ্টা লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যকার ‘ব্লু লাইন’ সীমান্তরেখা–সংলগ্ন এলাকায় বৈঠকটি করেছে।
বৈঠক শেষে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এতে আলোচনায় বেসামরিক প্রতিনিধিদের সংযুক্ত হওয়াকে ‘টেকসই বেসামরিক ও সামরিক সংলাপ’ প্রতিষ্ঠার পথে ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে উল্লেখ করে স্বাগত জানানো হয়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে অস্থির থাকা এ সীমান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠার আশা করছে কমিটি।
আরও পড়ুনইসরায়েলের হামলায় নিহত তাবতাবাই কে, কীভাবে হিজবুল্লাহতে যোগ দিলেন২৪ নভেম্বর ২০২৫২০২৪ সালে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি তদারকির পাশাপাশি কমিটির কাজের পরিধি আরও বিস্তৃত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কয়েক মাস ধরে দুই পক্ষকে আহ্বান জানিয়ে আসছে। গত মাসে লেবাননের রাজধানীতে ইসরায়েলি বিমান হামলাকে কেন্দ্র করে যখন ক্রমাগত উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখন এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো।
লেবাননে নিয়মিত বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। দেশটি সাধারণত দাবি করে থাকে যে হিজবুল্লাহ সদস্য ও তাঁদের স্থাপনাকে লক্ষ্য করেই তারা হামলা চালাচ্ছে। যুদ্ধবিরতিতে পুরোপুরিভাবে সেনা প্রত্যাহারের কথা উল্লেখ থাকলেও লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের পাঁচটি এলাকায় ইসরায়েলি সেনারা এখনো অবস্থান করছেন।
ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র শশ বেদরোসিয়ান বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে এ বৈঠককে ঐতিহাসিক অগ্রগতি বলে উল্লেখ করেছেন।
বেদরোসিয়ান দাবি করেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা বদলে দিতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর চলমান প্রচেষ্টার কারণেই ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে এ সরাসরি বৈঠক সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যেমনটা বলছেন যে আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তি স্থাপনের জন্য বিশেষ সুযোগ এখন তৈরি হয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশে সময়মতো, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নিবাচন চাই: ইইউ রাষ্ট্রদূত
ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেছেন, ইইউ বাংলাদেশে সময়মতো, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনকে সমর্থন করে। তারা এ নির্বাচনকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পথ সম্পর্কে ধারণা নতুন করে প্রতিষ্ঠার একটি বড় সুযোগ হিসেবে দেখে।
বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনে একটি বড় পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইইউ।
আজ মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মাইকেল মিলার।
গত সপ্তাহে নির্বাচন কমিশন আয়োজিত মক ভোটিং পরিদর্শন করেছিলেন ইইউ রাষ্ট্রদূত। বিষয়টি উল্লেখ করে মাইকেল মিলার বলেন, একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট আয়োজনের অগ্রিম প্রস্তুতি দেখে তিনি মুগ্ধ। তিনি জানান, নির্বাচন কমিশনের পেশাদারত্ব এবং সক্ষমতার প্রতি ইইউর আস্থা আছে। বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি বড় পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। এটি বাংলাদেশের নির্বাচনপ্রক্রিয়ার প্রতি তাঁদের আস্থার প্রতিফলন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে মাইকেল মিলার বলেন, বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে তিনি খুবই আশাবাদী। আরেক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচনের চ্যালেঞ্জের বিষয়ে তিনি বলেন, এবার অনেক ভোটার প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন। আগে হয়তো অনেকে ভোট দেননি, কারণ হয়তো তাঁরা জানতেন যে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না বা সহিংসতার আশঙ্কা করেছিল। প্রায় পুরো একটি প্রজন্ম কখনো ভোট দেয়নি। এটা একটা চ্যালেঞ্জ হবে। একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট হবে, তাদের কী করতে হবে তা বুঝতে হবে। তিনি জানতে পেরেছেন যে নির্বাচন কমিশন ভোট গ্রহণের সময় বাড়াচ্ছে, এটি একটি প্রাজ্ঞ সিদ্ধান্ত।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মাইকেল মিলার বলেন, তিনি মনে করেন এ দেশের সব অংশীজনকে বহু বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের সুযোগটিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে।