রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া সড়কে দুই দিন পর বাস চলাচল স্বাভাবিক
Published: 13th, January 2025 GMT
রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়ার পরিবহনশ্রমিকদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনার দুই দিন পর বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ছয়টা থেকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া সড়কে বাস চলাচল পুরোদমে স্বাভাবিক হয়। গত শনিবার দুপুরে এ পথে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এতে ভোগান্তিতে পড়েছিলেন বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা।
আজ সোমবার সকালে রাজবাড়ী জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক (লিটন) প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বিকেলে রাজবাড়ী জেলার শেষ সীমানা পাংশার মাছপাড়ায় রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়া পরিবহন মালিক গ্রুপ, মিনিবাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে সমঝোতা বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ সোমবার সকাল থেকে পুরোদমে বাস চলাচল শুরু হয়েছে। তবে বৈঠকের পর গতকাল রাত থেকে কিছু বাস চলাচল করেছে।
রাজবাড়ী জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার দুপুরে রাজবাড়ী শহরের মুরগির ফার্ম এলাকায় রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়া এই দুই জেলার পরিবহনশ্রমিকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে ওই দিন দুপুরের পর থেকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া পথে বাস চলাচল বন্ধ হয়। এতে রাজবাড়ী থেকে প্রায় ৫০টি আন্তজেলা ও ৩০টি দূরপাল্লার বাস সরাসরি চলাচল বন্ধ ছিল। আন্তজেলা বাসগুলো রাজবাড়ী জেলার সীমান্তবর্তী পাংশার শিয়ালডাঙ্গা পর্যন্ত গিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। অন্যদিকে কুষ্টিয়ার বাসগুলো জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় এসে যাত্রী নামিয়ে দেয়। ফলে দুর্ভোগ পোহান যাত্রীরা।
রাজবাড়ীর সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় দুই জেলার পরিবহনশ্রমিক-মালিক নেতাদের সঙ্গে বসে সমস্যা সমাধান হওয়ার পর থেকে বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
আরও পড়ুনপরিবহনশ্রমিকদের হাতাহাতির ঘটনায় রাজবাড়ী-কুষ্টিয়ায় বাস বন্ধ, দুর্ভোগ২১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফুসফুসের সুরক্ষায় যা করণীয়
জীবন সুস্থ রাখার জন্য চাই সুস্থ ফুসফুস, সুস্থ নিঃশ্বাস আর বিশুদ্ধ বাতাস। ফুসফুসের যত্নের শুরু মাতৃজঠরে থাকার সময় থেকেই। গর্ভাবস্থায় মায়ের অপুষ্টি, বিভিন্ন সংক্রামক রোগের সংক্রমণ, সময়ের আগে অপরিণত অবস্থায় স্বল্প ওজনে জন্ম নেওয়া শিশুর ফুসফুসের বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে। আবার জন্মের পর মাতৃদুগ্ধ পান নিউমোনিয়া, অ্যাজমাসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ কমায়। এ কারণে হবু মা এবং নতুন মায়ের যত্ন শিশুর সুস্থ ফুসফুসের পূর্বশর্ত। অন্যদিকে ধূমপায়ী বাবা শুধু তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্যই নয়, এমনকি যে শিশুটি এখনও ভূমিষ্ঠ হয়নি, তার জন্যও হুমকিস্বরূপ। ধূমপায়ী মায়েদের জন্য এ কথা আরও বেশি সত্য।
ফুসফুস বিভিন্ন সংক্রামক জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার একটি প্রধান অঙ্গ। করোনা মহামারি আমাদের এ সত্য আরও ভালোভাবে বুঝিয়েছে। পুরো পৃথিবী ছোট্ট করোনাভাইরাসের কাছে অসহায় হয়েছিল। একইভাবে নিউমোনিয়া, যক্ষ্মা, ইনফ্লুয়েঞ্জা এমনকি বিভিন্ন ছত্রাকজনিত রোগেরও আকর এই ফুসফুস। অথচ সামান্য স্বাস্থ্যবিধি, যেমন– নিয়মিত হাত ধোয়া, মাস্ক পরা, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার ইত্যাদির মাধ্যমে এ রোগ অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
বর্তমান সময়ে পরিবেশদূষণ ও বায়ুদূষণ একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা। বায়ুদূষণের সরাসরি আঘাত হয় ফুসফুসে। বায়ুদূষণের জন্য অ্যাজমা, সিওপিডিসহ বিভিন্ন রোগ ফুসফুসের শ্বাসনালির বাধাজনিত কারণে সৃষ্টি। সজীব নির্মল বায়ু নিশ্চিতকরণে আমাদের প্রচেষ্টা ফুসফুসের যত্নের একটি অংশ।
জীবিকার প্রয়োজনে আমরা বিভিন্ন ধরনের পেশা বেছে নিই। তার মধ্যে এমন কিছু পেশা আছে, যা ফুসফুসের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। যেমন– পাথরভাঙা, জাহাজভাঙা, ওয়েলডিং, আঁশ ও তুষজাতীয় উপাদানের সংস্পর্শে থাকা ইত্যাদি। এ পেশার কারণে তৈরি ছোট ছোট ধূলিকণা বা সূক্ষ্মতন্তু আমাদের ফুসফুসে আটকে বিভিন্ন ধরনের রোগ সৃষ্টি করতে পারে। অথচ কাজের সময় ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী ব্যবহার করলে এ বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। সে সম্পর্কে আমরা মোটেও সচেতন নই। তাই ‘অকুপেশনাল হেলথ’ বা জীবিকা-সংক্রান্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আমাদের আরও মনোযোগী হতে হবে।
ছোট ছোট কিছু পদক্ষেপে সম্মিলিতভাবে সবাই উপকৃত হতে পারে। বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ফুসফুসের তথা সঠিক স্বাস্থ্যরক্ষায় আরও মনোযোগী হতে হবে। শুধু চিকিৎসা নয়, রোগ প্রতিরোধে উদ্যোগী হওয়ার এখনই সময়। করোনা মহামারি আমাদের সে শিক্ষাটাই দিয়েছে।
লেখক: চিকিৎসক, রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগ , বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।