Prothomalo:
2025-10-03@01:21:03 GMT

শিশুদের বদ নজর থেকে বাঁচাতে

Published: 16th, August 2025 GMT

ইসলামে বদ নজর বা নজরে লাগা একটি বাস্তব বিষয় হিসেবে বিবেচিত, যা মানুষের হিংসা বা প্রশংসার দৃষ্টির মাধ্যমে ক্ষতি করতে পারে। বিশেষ করে শিশুরা, যারা দুর্বল ও সংবেদনশীল, তারা বদ নজরের প্রভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

হাদিসে শিশুদের বদ নজর থেকে রক্ষার জন্য নির্দিষ্ট দোয়া ও আমল বর্ণিত আছে। মহানবী (সা.) নিজে তাঁর নাতি হাসান ও হুসাইন (রা.

)-এর জন্য বদ নজর থেকে রক্ষার দোয়া পড়তেন।

শিশুদের বদ নজর থেকে রক্ষা করতে

ইসলামে বদ নজর থেকে রক্ষার জন্য কুরআনের আয়াত, হাদিসে বর্ণিত দোয়া এবং ‘রুকইয়া’ ব্যবহার করা হয়। শিশুদের জন্য নিচের দোয়া ও আমলগুলো বিশেষভাবে ফজিলতপূর্ণ:

১. নবীজি (সা.)-এর শেখানো দোয়া

ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) তাঁর নাতি হাসান ও হুসাইন (রা.)-এর জন্য বদ নজর ও ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য এই দোয়া পড়তেন:
উচ্চারণ: আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন শাররি মা খালাক।
অর্থ: আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালিমার মাধ্যমে তাঁর সৃষ্ট সব কিছুর ক্ষতি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৭০৮)

পড়ার নিয়ম:

শিশুর কপালে বা শরীরে হাত রেখে এই দোয়া তিনবার পড়া।

প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় বা শিশুকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার আগে পড়া।

দোয়া পড়ার পর শিশুর শরীরে হালকাভাবে ফুঁ দেওয়া।

আরও পড়ুনপরিবেশ–সচেতন করে তুলতে শিশুকে ইসলামি শিক্ষা০৪ আগস্ট ২০২৫

২. সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস

সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক এবং সুরা নাস পাঠ বদ নজর ও সব ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য কার্যকারী আমল আয়েশা (রা.) বলেন, নবীজি (সা.) এই তিনটি সুরা পড়ে নিজের শরীরে ফুঁ দিতেন এবং অন্যদের জন্যও পড়তেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫০১৭)

পড়ার নিয়ম:

তিনটি সুরা তিনবার করে পড়া।

পড়ার পর হাতে ফুঁ দিয়ে শিশুর পুরো শরীরে মুছে দেওয়া।

প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় বা শিশু অসুস্থ মনে হলে পড়া।

৩. সুরা ফাতিহা

সুরা ফাতিহা বদ নজর ও রোগ নিরাময়ের জন্য অত্যন্ত কার্যকর। হাদিসে আছে, একজন সাহাবি সুরা ফাতিহা পড়ে একজন ব্যক্তির ক্ষতি দূর করেছিলেন এবং নবীজি (সা.) তা অনুমোদন করেছেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৭৩৬)

পড়ার নিয়ম:

সুরা ফাতিহা সাতবার পড়ে শিশুর শরীরে ফুঁ দেওয়া।

শিশুর কপালে হাত রেখে পড়া উত্তম।

আরও পড়ুনসন্তানদের দৃঢ়চেতা মুসলিম হিসেবে গড়ে তোলার উপায়০৮ আগস্ট ২০২৫

৪. আয়াতুল কুরসি

আয়াতুল কুরসি (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৫৫) বদ নজর, শয়তান ও সব ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত একটি হাদিসে আছে, নবীজি (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আয়াতুল কুরসি পড়ে, তাকে আল্লাহ রক্ষা করেন।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫০১০)

পড়ার নিয়ম:

প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় বা শিশুকে ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসি পড়া।

পড়ার পর শিশুর শরীরে ফুঁ দেওয়া।

৫. সাধারণ দোয়া

নিজের ভাষায়ও শিশুর জন্য দোয়া করা যায়। উদাহরণ: “হে আল্লাহ! আমার শিশুকে বদ নজর ও সব ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা করো, তাকে সুস্থ ও নিরাপদ রাখো।”
নবীজি (সা.) বলেছেন, “দোয়া ইবাদতের মূল।” (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ৩৩৭১)

আরও পড়ুনতিন শিশু দোলনা থেকে কথা বলেছিল ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪বদ নজর থেকে রক্ষার আমল

১. রুকিয়া

রুকিয়া হলো কুরআনের আয়াত ও হাদিসে বর্ণিত দোয়া পড়ে শিশুর ওপর ফুঁ দেওয়া। উপরে উল্লিখিত সুরা ফাতিহা, ইখলাস, ফালাক, নাস এবং আয়াতুল কুরসি রুকিয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়।

২. শিশুকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় সতর্কতা

শিশুকে অতিরিক্ত প্রশংসা বা জনসম্মুখে বেশি উপস্থাপন না করা, কারণ বদ নজর প্রায়ই প্রশংসার মাধ্যমে হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, “নজর সত্য।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৭৩৯)

শিশুকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার আগে দোয়া পড়া এবং কালো কাপড় বা সাধারণ পোশাক পরানো।

৩. সকাল-সন্ধ্যার জিকির

প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় তিনবার করে “আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন শাররি মা খালাক” পড়া শিশুকে বদ নজর ও শয়তানের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৭০৮)

সতর্কতা

শিরক এড়ানো: বদ নজর থেকে রক্ষার জন্য তাবিজ, কালো সুতা বা অপ্রমাণিত পদ্ধতি ব্যবহার না করে শুধু কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত দোয়া ব্যবহার করা উচিত।

চিকিৎসার গুরুত্ব: বদ নজরের পাশাপাশি শিশুর শারীরিক অসুস্থতার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নবীজি (সা.) বলেছেন, “প্রতিটি রোগের জন্য চিকিৎসা রয়েছে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৬৭৮)

আন্তরিকতা: দোয়া করার সময় পূর্ণ মনোযোগ ও আল্লাহর ওপর ভরসা রাখতে হবে।

আরও পড়ুনশিশু ও প্রবীণের সুরক্ষায় ইসলামের শিক্ষা১২ জুন ২০২০

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সহ হ ব খ র সন ধ য য ত ল ক রস ব যবহ র বল ছ ন আল ল হ বর ণ ত ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

আজ মুক্তি পাচ্ছে নতুন দুই সিনেমা, হলে আছে আরও ৭ সিনেমা

কুয়াকাটায় একদল ব্যাচেলর
করোনার সময় দীর্ঘদিন ঘরবন্দী ছিল মানুষ। বিধিনিষেধ শিথিল করা হলে কুয়াকাটায় ঘুরতে যায় একদল ব্যাচেলর। সেখানে নারীদের একটি দলের সঙ্গে তাদের দেখা হয়ে যায়। তাদের কেন্দ্র করেই রোমান্টিক, কমেডি ও থ্রিলারের মিশেলে তৈরি হয়েছে নাসিম সাহনিকের ‘ব্যাচেলর ইন ট্রিপ।’

সিনেমাটির শুটিং শুরু হয় ২০২২ সালের শেষ দিকে। প্রথম লটে এক সপ্তাহের মতো শুটিং করার কথা থাকলেও বাজেটের সমস্যায় দুই দিন পর শুটিং টিমকে রেখেই ঢাকায় চলে গেছেন পরিচালক—এমন একটা অভিযোগ সে সময় এনেছিলেন সিনেমার নায়িকা শিরিন শিলা। পরে তিনি আরও জানান, নায়ক-নায়িকাসহ শিল্পীদের থাকা, খাওয়া—সবকিছুতেই অব্যবস্থাপনা ছিল। এতে ইউনিটে অসন্তোষ তৈরি হয়। সে সময় কলাকুশলীরা ধরেই নিয়েছিলেন, এ সিনেমার শুটিং আর হবে না। দ্বন্দ্ব মিটিয়ে পরের বছর শেষ হয় শুটিং। ডাবিং ও পোস্টের কাজ শেষ করতে লেগে যায় আরও এক বছর।

সিনেমায় জুটি হয়েছেন শিরিন শিলা ও কায়েস আরজু। ছবি: কায়েসের সৌজন্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ