বিষখালির ভাঙনে দিশেহারা নলছিটিবাসী
Published: 17th, September 2025 GMT
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার বিষখালি নদীর ভাঙনে কয়েকটি গ্রাম শতভাগ বিলীন হওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে। দীর্ঘদিনের অব্যাহত ভাঙনে উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের রাজাবাড়িয়া, ইসলামাবাদ, বৈশাখিয়া ও হদুয়া গ্রামের বাসিন্দারা ভাঙন আতংকে দিন পার করছেন।
বর্ষায় ভাঙনের তীব্রতা কয়েকগুন বেড়েছে। এরইমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে হদুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল হক সিকদার বলেন, “ছোটবেলা থেকে নদীভাঙন দেখছি। এই পাড় ভাঙে, ওই পাড়ে চর পড়ে। এভাবে হারাতে হারাতে এখন আমরা নিঃস্ব। বসতবাড়ি, জমিজমা সব হারিয়েছি। আমাদের গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা সরাসরি নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অনেকেই গ্রামের অন্যত্র ঘর তৈরি করেছেন আবার অনেকে গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে গেছেন। আমি নিজেও কয়েকবার বসতঘর পরিবর্তন করেও ভাঙন থেকে রেহাই পাচ্ছি না। এখন যদি কর্তৃপক্ষ ভাঙন রোধে কোন পদক্ষেপ নেয়, তাহলে হয়তো বাকি পরিবারগুলো রক্ষা পাবে।”
বৈশাখিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো.
অপর বাসিন্দা মো. মজিদ সিকদার বলেন, “পঞ্চাশ বছর আগে বাবার বাড়ি নদীতে চলে গেছে। তারপর নদীর তীর থেকে দূরে গিয়ে বাড়ি করেছিলাম, সেটাও হারিয়েছি। এখন আরো পিছনে গিয়ে কোনমতে একটা ঘর করেছি। সেটাও এখন ভাঙনের মুখে আছে। যে কোনো সময় নদীতে বিলীন হয়ে আবারও গৃহহীন হওয়ার আশংকায় রয়েছি।”
তিনি আরো বলেন, “কয়েকবছর আগে বেড়িবাঁধ নদীতে ভেঙে যায় এরপর থেকেই একটু জোয়ার এলেই নদীর তীরবর্তী বাড়িঘর ও ফসলি জমি জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। এ নিয়ে কারো কোন মাথা ব্যথা নেই। কৃষকের ফসল তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় প্রতি বছরই কৃষক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। একটি বেড়িবাঁধ থাকলে কৃষকরা তাদের ফসল নিয়ে চিন্তামুক্ত থাকতে পারতেন।”
ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম নিলয় পাশা বলেন, “আমাদের একটি দল ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। আমরা দ্রুতই সরকারের কাছে চাহিদা পাঠাব। আর যতদ্রুত সম্ভব বাঁধ পুনরায় নির্মাণ করাসহ ভাঙন রোধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
ঢাকা/অলোক/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চকবাজারে প্রিজন ট্রাকের ধাক্কায় ঠেলাগাড়ির শ্রমিক নিহত
রাজধানীর চকবাজারে প্রিজন ট্রাকের ধাক্কায় সোহাগ হাওলাদার (৩০) নামের ঠেলাগাড়ির এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
আজ রোববার বেলা সোয়া একটার দিকে চকবাজারের নাজিমুদ্দিন রোডে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
সহকারী প্রধান কারারক্ষী সাইফুল ইসলাম বলেন, দুপুরে কেরানীগঞ্জ থেকে কারা সদর দপ্তরের দিকে যাচ্ছিল ট্রাকটি। ট্রাকটি চালাচ্ছিলেন মনসুর নামের এক চালক। নাজিমুদ্দিন রোডে পৌঁছালে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
সোহাগের সহকর্মীরা বলেন, দুপুরে আগামাছি লেন থেকে তাঁরা চারজন মিলে ঠেলাগাড়িতে ইট বহন করে নাজিমুদ্দিন রোড দিয়ে যাচ্ছিলেন। নাজিমুদ্দিন রোডের বড় মসজিদের সামনে পৌঁছালে দ্রুতগতির একটি প্রিজন ট্রাক ঠেলাগাড়িতে ধাক্কা দেয়। এতে সোহাগ সড়কে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে সোহাগকে উদ্ধার করে বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
সোহাগের সহকর্মী আশরাফুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার পর এলাকাবাসী ট্রাক ও চালককে আটক করেছেন।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, সোহাগের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
নিহত সোহাগের বাড়ি বরিশালের মুলাদী উপজেলায়। বাবার নাম দুলাল হাওলাদার। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সোহাগ কেরানীগঞ্জের জিনজিরা এলাকায় থাকতেন।