শীতকালে ত্বকের যত্নের ধরনেও পরিবর্তন আসে। অনেকে মনে করেন শীতকালে সানস্ক্রিন ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় না। কারণ সূর্যের তাপ কম থাকে। এটি ভুল ধারণা। শীতেও সূর্যের ক্ষতিকর আলট্রাভায়োলেট রশ্মি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এ কারণে শীতে সানস্ক্রিন ব্যবহারের গুরুত্ব কম নয় বরং বছরের প্রতিটি সময়ের মতোই অপরিহার্য।
রাজিয়া’স মেকওভারের স্বত্বাধিকারী রাজিয়া সুলতানা জানান, শীতে ত্বক যেহেতু শুষ্ক থাকে, তাই সানবার্ন বেশি হয়। তাই সানস্ক্রিন ব্যবহার করা খুবই জরুরি। কেউ যদি মনে করেন, ঘরে থাকলে সানস্ক্রিনের প্রয়োজন নেই, এটিও ভুল। কারণ ঘর হোক বা অফিস, আমাদের অতিমাত্রায় বৈদ্যুতিক বাতির সামনে থাকতে হয়। এ সময়েও সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।
রাতে ঘুমানোর আগে মুখে হেভি ময়েশ্চারাইজার বা নাইট ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। দিনের বেলায় সানস্ক্রিনের পাশাপাশি হালকা ময়েশ্চারাইজারও ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন এ রূপবিশেষজ্ঞ। আপনার ত্বকের জন্য কোন ময়েশ্চারাইজার ভালো সেটি দেখে নেবেন।
শীতে সানস্ক্রিন কেন জরুরি
শীতকালে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও সূর্যের ইউভি-এ এবং ইউভি-বি রশ্মি মেঘ ভেদ করে পৌঁছে যায়। ইউভি রশ্মি ত্বকের পিগমেন্টেশন, ব্রণের দাগ এবং বার্ধক্যের লক্ষণ বাড়াতে পারে। তাছাড়া দীর্ঘমেয়াদে এটি ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়ায়। সানস্ক্রিন ব্যবহারের মাধ্যমে এইক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
বার্ধক্যের লক্ষণ প্রতিরোধে
শীতের সময় শুষ্ক আবহাওয়া ত্বককে রুক্ষ এবং প্রাণহীন করে তোলে। এর সঙ্গে সূর্যের ইউভি রশ্মি যোগ হলে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা কমে যায় এবং বলিরেখা বা ফাইন লাইনস দেখা দেয়। এ সময় সানস্ক্রিন ব্যবহারের পাশাপাশি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
ঠোঁটের সুরক্ষায়
শীতকালে ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যায় এবং সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ঠোঁটের সূক্ষ্ম ত্বকে ক্ষতি করতে পারে। ঠোঁটের কালচে ভাব ও শুষ্কতা রোধে লিপ বাম বা সানস্ক্রিনযুক্ত লিপ কেয়ার ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। এসপিএফ যুক্ত লিপবাম ব্যবহার করুন। বাইরে যাওয়ার আগে ঠোঁটকে আর্দ্র রাখুন।
অসমতা দূর
ইউভি রশ্মি ত্বকের মেলানিন উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে ত্বকে দাগ, ফাটা চামড়া এবং রঙের অসমতা দেখা দেয়। শীতকালেও সানস্ক্রিন নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বকের রঙের স্বাভাবিক ভারসাম্য বজায় থাকে। শীতে অনেকে ভ্রমণ বা পাহাড়ে বেড়াতে যান। সমুদ্র-পাহাড়-সমতল যেখানেই যান না কেন, সঙ্গে সানস্ক্রিন রাখুন। নয়তো ত্বকে অসম দাগ পড়তে পারে।
মেকআপের সঙ্গে সানস্ক্রিন
যারা মেকআপ করেন, তারা সানস্ক্রিন বেস হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এটি মেকআপকে দীর্ঘস্থায়ী করে এবং ত্বককে সুরক্ষিত রাখে। অনেকেই মনে করেন, শীতকালে ময়েশ্চারাইজার বা ফাউন্ডেশনে এসপিএফ থাকলেই সানস্ক্রিনের প্রয়োজন নেই। তবে এটি যথেষ্ট নয়। শুধু সানস্ক্রিনই ইউভি রশ্মি থেকে পুরোপুরি সুরক্ষা দিতে পারে।
সানস্ক্রিন ব্যবহারের সঠিক নিয়ম
বাইরে বের হওয়ার অন্তত ১৫-২০ মিনিট আগে সানস্ক্রিন মাখুন। মুখের পাশাপাশি ঘাড়, কান, হাত, পা এবং অন্য যেসব অংশ সূর্যের সংস্পর্শে আসে সেসব স্থানে সানস্ক্রিন লাগান। পানি প্রতিরোধী সানস্ক্রিন বেছে নিন, বিশেষ করে যারা বাইরে কাজ করেন বা ঘাম ঝরান। সকালে একবার লাগানোর পর দিনের বাকি সময়ে প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর আবার লাগানোর চেষ্টা করুন।
উপযুক্ত সানস্ক্রিন নির্বাচন
শীতকালে এমন সানস্ক্রিন বেছে নেওয়া উচিত, যা ত্বককে শুষ্ক না করে। ময়েশ্চারাইজিং গুণসম্পন্ন সানস্ক্রিন শীতের শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করে। এসপিএফ ৩০ বা তার বেশি যুক্ত সানস্ক্রিন নির্বাচন করুন। এও নিশ্চিত করুন যে এটি ইউভি-এ ও ইউভি-বি থেকে সুরক্ষা দেয়। v
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।
এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’
বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন
জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।
তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী