গণঅভ্যুত্থানে জড়িত পুলিশ সদস্যদের পর্যায়ক্রমে ধরা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 15th, January 2025 GMT
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে যেসব পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে তাদেরকে পর্যায়ক্রমে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে অনেককে ধরা হয়েছে। প্রতিদিনই দু-একজনকে ধরা হচ্ছে।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর খিলগাঁও আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী সদর দপ্তর পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র জনতার ওপর গুলি চালানোর অভিযোগ রয়েছে এমন পুলিশ সদস্যদেরও বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটে বদলি ও পদায়ন করা হচ্ছে। তাদের গ্রেপ্তার না করার কারণ জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, একদিনই তো আর সবাইকে ধরা সম্ভব না। ভিডিও ফুটেজ দেখে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে আইনের হাতে নিয়ে আসা হবে।
এ সময় তিনি বলেন, আনসার সদস্যদের দীর্ঘদিনের ছুটি নিয়ে যে দাবি ছিল। সেই ছুটি এখন থেকে আর থাকছে না। কোন সদস্যকেই এখন থেকে আর বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হচ্ছে না।
তিনি জানান, প্রায় ৬১ লাখ সদস্যের এই বাহিনী দেশের যেকোনো মুহূর্তে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে। এই বাহিনীর সদস্যদের আরও কিভাবে প্রশিক্ষিত করে কাজে লাগানো যায় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সবাইকে ডাটাবেজের আওতায় নিয়ে আসা যায় কিনা সেটা নিয়েও কথা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, আজকে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদরদপ্তর পরিদর্শন করার উদ্দেশ্য হচ্ছে- বাহিনীর সমস্যাগুলো জানা। বাহিনীকে আরও কিভাবে এগিয়ে নেওয়া যায় এ বিষয়ের ওপর আলোচনা হয়েছে। আনসার সব বাহিনীর সঙ্গে কাজ করে যেকোনো দুর্যোগে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া পূজার সময় আনসারের ভূমিকা প্রশংসনীয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আনস র ও ভ ড প সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দাবি ইনকিলাব মঞ্চের
ছাত্র আন্দোলনের ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দফা দাবি জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।
সোমবার (১৬ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবির কথা জানায় সংগঠনটি।
সংগঠনটির মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদী বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা দিবস আছে, বিজয় দিবস আছে, কিন্তু আমাদের মুক্তি ঘটেনি। তাই ঐতিকহাসিক ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণা করতে হবে। এ ছাড়াও জুলাই সনদ চূড়ান্ত করার আগে জনগণের মতামতের জন্য তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।”
আরো পড়ুন:
বেগম রোকেয়া পদকের জন্য আবেদনপত্র আহ্বান
নিরাপদ খাদ্য দিবস শনিবার: ‘নিরাপদ খাদ্য উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি কমায়’
তিনি বলেন, “গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, মৌলিক সংস্কার এবং ২০২৪ সালের গণহত্যার বিচার নিশ্চিত না করে দেশে যদি নির্বাচন আয়োজন করা হয়, তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘গাদ্দার’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে। এই সনদে ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের নিরিখে বৈষম্যবিরোধী ইনসাফভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুস্পষ্ট রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “সংবিধান থেকে জনবিরোধী ও জুলাই সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব ধারা উপধারা বাতিল করে জুলাই সনদকে সাংবিধানের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব দল, মত এবং লিঙ্গের ন্যায্য শরিকানা নিশ্চিত করতে হবে। যেখানে বলা হবে- আমরা বাংলাদেশের জনগণ এই ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান সম্পল্প করেছি।”
সংবাদ সম্মেলনে ইনকিলাব মঞ্চ ১৩টি প্রস্তাবনা তুলে ধরে, যা জুলাই সনদের কার্যকর প্রয়োগ ও জাতীয় ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে।
প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১৯৪৭, ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক সংগ্রামে জীবন উৎসর্গ করা সব শহীদকে রাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠ সন্তান ঘোষণা করতে হবে; যেসব জুলাই যোদ্ধার স্থায়ী অঙ্গহানি হয়েছে, তাদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে; ফ্যাসিবাদী আমলে সংঘটিত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ভোটারবিহীন অবৈধ নির্বাচন বাতিল করে সংশ্লিষ্ট দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
এছাড়া ফ্যাসিবাদী আমলের সকল মন্ত্রী, এমপি ও দোষী আমলাসহ রাষ্ট্রীয় কর্মচারীদের বিচারের আওতায় এনে অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পদ জব্দ করে তা শহীদ ও আহতদের কল্যাণে ব্যয় করতে হবে; দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা রক্ষায় ভারতীয় আধিপত্যবিরোধী ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে; জুলাই, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করে দেশি-বিদেশি অপশক্তি চিহ্নিত করতে হবে; রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক সংস্কার করতে হবে যাতে ফ্যাসিবাদ আর স্বৈরতান্ত্রিকতা কখনও ফিরে না আসে; ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণা করতে হবে।
বাকি দাবিগুলো হলো- জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের ভিত্তিতে বৈষম্যবিরোধী কল্যাণ রাষ্ট্রের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে; সংবিধান থেকে জনবিরোধী ও জুলাই সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব ধারা বাতিল করে জুলাই সনদকে সংবিধানের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব দল, মত ও লিঙ্গের ন্যায্য অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে; জুলাই সনদের ভাষাগত দুর্ব্যবহার পরিহার করে জনসাধারণের জন্য সহজ ভাষায় উপস্থাপন করতে হবে এবং সনদ চূড়ান্ত করার পূর্বে জনগণের মতামতের জন্য তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
আগামী ২৫ জুনের মধ্যে জুলাই সনদ ঘোষণা করা না হলে রাজধানীর শাহবাগ মোড় থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ অভিমুখে ‘লাল মার্চ’ করার ঘোষণাও দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী