অটোরিকশা চালকদের মারধরে ৩ পুলিশ আহত
Published: 15th, January 2025 GMT
লক্ষ্মীপুরের সড়কে ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সময় সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকদের হামলায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে পৌর শহরের বাগবাড়ি এলাকার মেঘনা সড়কে ঘটনাটি ঘটে। আহদের লক্ষ্মীপর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেলা ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (টিআই) প্রশান্ত কুমার দাস বলেন, “ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন পরিবহনের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সময় ট্রাফিক পুলিশের ওপর হামলা চালায় চালকরা। এতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।”
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে যুবদল নেতার বাড়িতে গুলিবর্ষণ, গুলিবিদ্ধ বাবার মৃত্যু
বরিশালে যুবলীগ নেতার পায়ের রগ কাটল দুর্বৃত্তরা
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- ট্রাফিক পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক সবুজ মিয়া, ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবল ঝুটন ভট্টাচার্য ও টারজান বড়ুয়া।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন সিএনজি চালিত অটোরিকশাসহ সড়কে বিভিন্ন পরিবহনের বিরুদ্ধে সকাল থেকে শহরের বাগবাড়ি এলাকার মেঘনা সড়কে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে অভিযান শুরু করে। এসময় বৈধ কাগজপত্র না থাকায় কয়েকটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনার জেরে দুপুরে সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালকরা ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকরা লক্ষ্মীপুর-রামগঞ্জ সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে এক ঘণ্টা ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।
সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সড়কে গাড়ি চালাতে তাদের মাসোহারা দিতে হয়। অভিযানের নামে সড়কে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় গাড়ি আটকিয়ে টাকা আদায় করা হয়। আজ কয়েকটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা আটক করে মামলা দেয় ট্রাফিক পুলিশ। এর জেরে হামলার ঘটনা ঘটে।
লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মো.
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহত প ল শ সদস য স এনজ
এছাড়াও পড়ুন:
৩৬ ঘণ্টার যুদ্ধে শত্রু মুক্ত হয় মাদারীপুর
মহান মুক্তিযুদ্ধে মাদারীপুর শত্রুমুক্ত দিবস বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর রাত থেকে ১০ ডিসেম্বর বিকেল পর্যন্ত ৩৬ ঘণ্টার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করেন মাদারীপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধারা। শত্রুমুক্ত ঘোষণা করা হয় পুরো জেলা, বিজয়ের পতাকা উড়ানো হয় মাদারীপুরের আকাশে।
বীর মুক্তিযোদ্ধারা জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানে পরাজিত হওয়ার পর পাকিস্তানি বাহিনী মাদারীপুর ত্যাগের প্রস্তুতি নেয়। গোপন সূত্রে খবর পাওয়া আসে, এ আর হাওলাদার জুট মিল ক্যাম্পে অবস্থানরত পাকিস্তানি সৈন্যরা পালানোর পরিকল্পনা করছে।
আরো পড়ুন:
‘বাঙ্কারে গ্রেনেড থ্রো করাতে কাজ হয়েছিল’
শরীরে লুকিয়ে রেখেছিলেন গোপন নথি
খলিল বাহিনীর প্রধান খলিল খান দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন। তার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ৮ ডিসেম্বর রাত থেকেই সমাদ্দার ব্রিজ এলাকা ঘিরে ফেলেন এবং সবদিক থেকে পাকিস্তানিদের পলানোর পথ বন্ধ করে দেন। পরদিন সকালেই শুরু হয় তীব্র যুদ্ধ। গোলাগুলি, মর্টার শেল ও ভারী অস্ত্রের গর্জনে কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা। টানা ৩৬ ঘণ্টার এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা অপ্রতিরোধ্য সাহস ও কৌশল প্রদর্শন করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী কাজী বলেন, “আমাদের সঙ্গে টানা ৩৬ ঘণ্টা যুদ্ধ হয়। পাক বাহিনী ছিল শক্তিশালী, কিন্তু আমরা পিটু হটিনি। এক পর্যায়ে আমাদের সর্বকনিষ্ঠ সাথী সরোয়ার হোসেন বাচ্চু শহীদ হন। তার মৃত্যু আমাদের আরো কঠোর করে তোলে।”
তিনি বলেন, “মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘবদ্ধ আক্রমণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে শত্রুপক্ষ। গোলাবারুদ সংকট ও চারদিক থেকে চাপের মুখে ১০ ডিসেম্বর বিকেলে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। জেলাজুড়ে সৃষ্টি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। রাস্তায় নেমে আসেন হাজারো মানুষ। বিজয়ের পতাকা হাতে উল্লাসে ভাসে মাদারীপুর।” এই যুদ্ধে পাক সেনাদের অন্তত ২০ জন নিহত হন।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হাবিবুল হক বলেন, “১০ ডিসেম্বর আমাদের জেলা শত্রুমুক্ত হয়। এটি আমাদের কাছে গর্বের দিন। কিন্তু এই বিজয়ের পেছনে রয়েছে বহু শহীদের আত্মত্যাগ। তাদের প্রতি আমাদের চিরকৃতজ্ঞতা।”
শত্রুমুক্ত দিবস উপলক্ষে মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। সকালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা, তাদের পরিবারবর্গ, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষ। সভায় বক্তারা ১০ ডিসেম্বরের ঐতিহাসিক গুরুত্ব, মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ ও নতুন প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানানো নিয়ে বক্তব্য রাখেন।
জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “মাদারীপুরের শত্রুমুক্তির ইতিহাস আমাদের গৌরবময় অধ্যায়। এ দিনের স্মৃতি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পৌঁছে দিতে প্রশাসন নিয়মিত উদ্যোগ নেবে।”
ঢাকা/বেলাল/মাসুদ