মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে তাঁকে কখন এবং কোন দেশে নেওয়া হবে, তা এখনো বিস্তারিত জানানো হয়নি।

আজ রোববার রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের। তিনি ওসমান হাদির চিকিৎসা এবং দেশের বাইরে নেওয়ার বিষয়ে জানান।

ওসমান হাদির চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে জানিয়ে আবদুল্লাহ আল জাবের বলেন, চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় এলে তাঁরা তাতে সম্মতি জানিয়েছেন। সে জন্য ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে ধার করে অর্ধকোটি টাকা জোগাড়ের কথাও জানান তিনি।

ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে না পারায় সরকারের সমালোচনা করে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.

) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগ দাবি করেন আবদুল্লাহ আল জাবের। এ ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল বেলা তিনটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। গত শুক্রবার মতিঝিল এলাকায় গণসংযোগ করে ফেরার পথে বেলা ২টা ২৪ মিনিটে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে চলন্ত ব্যাটারিচালিত রিকশায় থাকা অবস্থায় তাঁকে গুলি করা হয়। প্রথমে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং পরে সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাঁর অবস্থা এখনো সংকটজনক।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ওসম ন হ দ

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের তামাশা

মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায় পর্যন্ত পাকিস্তানিরা আশা করেছিল, চীন হয়তো তাদের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধে অংশ নেবে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের চীন সফরে মধ্যস্থতা করে তাদের সেই আশা আরও প্রবল হয়েছিল। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, পাকিস্তানের প্রধান লক্ষ্য ও শেষ পর্যন্ত প্রবল আশা ছিল, যা তারা প্রকাশ্যে দেখাচ্ছিল, তা হলো চীন শেষ পর্যন্ত তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে। কিন্তু এটি ছিল একটি তামাশা। কারণ, চীনারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা সামরিকভাবে যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করবে না। সব ধরনের কূটনৈতিক সহায়তা দেবে।

রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে ‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক আলোচনায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান এই মন্তব্য করেন।

ডেইলি স্টার ইতিহাসের বিভিন্ন বিষয় ও ব্যক্তির অবদান তুলে ধরতে ‘ইতিহাস আড্ডা’ শীর্ষক ধারাবাহিক আলোচনার আয়োজন করেছে। এটি ছিল সপ্তম আয়োজন। কবি ইমরান মাহফুজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচক ছিলেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও অধ্যাপক নাভিন মুর্শিদ। অসুস্থতার কারণে আরেক আলোচক গবেষক–সাংবাদিক মঈদুল হাসান আসতে পারেননি।

চীনের তামাশা, যুক্তরাষ্ট্রের নাটক

অধ্যাপক রেহমান সোবহান মুক্তিযুদ্ধকালে তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, চীন পাকিস্তানের সঙ্গে যে তামাশা করছিল, সেই নাটক সাজিয়ে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। চীনকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, যেন তারা যুদ্ধে যোগ দেয়। চীন যখন যুদ্ধে আসছিল না, তখন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরে পাঠানোর হুমকি দেয়। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তাদের নৌবহরকে মার্কিন সপ্তম নৌবহরের গতিবিধি লক্ষ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। সপ্তম নৌবহর আর আসেনি। এর পরিণতিতেই নিয়াজির চূড়ান্ত আত্মসমর্পণ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের উত্থান।

‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক ইতিহাস আড্ডায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান। রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে

সম্পর্কিত নিবন্ধ